কাঁকসার আয়মা এলাকায়। নিজস্ব চিত্র
পুজোর মরসুম বলে কথা। লুচির সঙ্গেই হোক বা কোজাগরীর খিচুড়ি, বাঙালির পাতে ফুলকপি চাইই। সেই কথা মাথায় রেখে দুর্গাপুজোর কয়েক মাস আগে থেকে ‘জলদি ফসল’ হিসেবে অনেকে ফুলকপি চাষ করেন। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কাঁকসা ও বুদবুদের বহু ফুলকপি চাষি। তাঁরা জানান, জল জমে যাওয়ায় কোথাও গোড়া পচে গিয়েছে। আবার কোথাও রোগ-পোকার আক্রমণে জমিতেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে ফুলকপির চারা। তাঁদের দাবি, দুর্গাপুজোর আগে খুব বেশি ফলন হয়নি।
কাঁকসার আমলাজোড় পঞ্চায়েতের গাংবিল, আয়মা, কেটেন-সহ দামোদর নদের তীরবর্তী বহু গ্রামের মানুষের প্রধান জীবিকা চাষাবাদ। ধান ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের আনাজ চাষ করেন সারা বছর ধরে। ভাল লাভের আশায় মরসুমের আগেই অনেকে আনাজ ফলিয়ে বাজারে বিক্রি করেন। বেশ কয়েক বছর ধরে উৎসবের মরসুমকে নজরে রেখে কাঁকসার ওই সব এলাকার চাষিরা বিঘার পর বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করে আসছেন। চাষিরা জানান, বর্ষার সময় এ বছর বেশি বৃষ্টি তেমন না হওয়ায় অনেকেই ভেবেছিলেন, ফুলকপির চাষ করে ক্ষতি মিটিয়ে ফেলবেন। কিন্তু উৎসবের মরসুমে লাগাতার বৃষ্টি সমস্যা আরও বাড়িয়েছে।
উদ্যান পালন দফতরের এক কর্তা জানান, কাঁকসা ও বুদবুদের বিক্ষিপ্ত অঞ্চলে এই চাষ হয়। তবে এ বার কত পরিমাণ চাষ হয়েছে হিসেব মেলেনি। তবে চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ৫০০ বিঘার বেশি জমিতে এ বার ফুলকপির চাষ করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু বৃষ্টির জেরে এ বছর ফলন ভাল হয়নি। তাই বিভিন্ন আকারের ফুলকপি ৭-১০ (এক একটি) টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তাঁরা জানান, ফুলকপির চারা তৈরি থেকে ফলনের আগে পর্যন্ত খুব বেশি জলের প্রয়োজন হয় না। সামান্য জলেই এই চাষ হয়ে যায়। রোদের তেজ খুব বেশি না থাকলেও ফলন ভাল হয়। কিন্তু হঠাৎ করে টানা বৃষ্টিতে বহু জমিই জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ফলে অনেক জমিতেই চারা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আবার দু-তিন দিন টানা বৃষ্টির পরে রোদের দেখা মিলতেই অনেক চারা পচে গিয়েছে।
চাষি মধুসূদন ঘোষ, অনিল মণ্ডলরা বলেন, ‘‘পুজোর আগে ফুলকপি বাজারে বিক্রি করতে পারলে ভাল দাম মেলে। কিন্তু এ বছর কালীপুজোর আগেও বাজারে বিক্রি করা যাবে না বলেই মনে হচ্ছে।’’ তাঁরা জানিয়েছেন, কয়েক বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করতে খরচ হয় প্রায় পাঁচ হাজার টাকা। ফলন হয় বিঘা পিছু প্রায় ৪০ কুইন্টাল। ভাল ফলন হলে দ্রুত বাজারে বিক্রি করতে পারলে লাভও ভাল হয়। তাঁদের দাবি, এ বছর অনেকেই দু’বার করে চারা তৈরি করে চাষ শুরু করেছেন। ফলে লাভ কতটা হবে তা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিয়েছে তাঁদের। একই অবস্থা বুদবুদের কসবা এলাকার চাষিদেরও। বৃষ্টির ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই এলাকার চাষিরাও।
উদ্যান পালন দফতরের জেলা আধিকারিক দেবাশিস মান্না বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে বেশ কিছু জায়গায় ক্ষতি হয়েছে। তবে কত পরিমাণ এখনও জানা যায়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy