এমনই পোস্ট ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিজস্ব চিত্র
সব ঠিক থাকলে এখনও বছরখানেক দেরি বিধানসভা নির্বাচনের। কিন্তু এখন থেকেই ভাতারের ভোটারকেই এলাকার প্রার্থী করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় আর্জি জানাচ্ছেন এলাকার কিছু যুবক। ফেসবুকের নানা ‘গ্রুপে’ ও হোয়াটস অ্যাপের নানা ‘পোস্টে’ ওই দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে চর্চা হচ্ছে এলাকার রাজনৈতিক মহল এবং বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে।
কিন্তু কেন এমন আর্জি? ভাতারের বর্তমান বিধায়ক তৃণমূলের সুভাষ মণ্ডলের বাড়ি আউশগ্রাম ২ ব্লকে। তিনি থাকেন গুসকরা শহরে। ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় নাগরিকদের একাংশের দাবি, নানা প্রয়োজনে বিধায়কের দরবারে পৌঁছতে হলে টাকা ও সময়, দুই-ই নষ্ট হয়। অনেক সময়ে বাড়ি গিয়েও দেখা মেলে না বিধায়কের। অথচ, একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছে, প্রবীণ, পড়ুয়াদের অথবা অন্য যে কাউকে জরুরি দরকারে বিধায়কের কাছে যেতে হলে অন্তত ছ’শো টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়ে ভাতার থেকে গুসকারায় যেতে হয়। এই পরিস্থিতিতে ওই পোস্টে দাবি, ‘‘আমরা বহিরাগত নয়, ভূমিপুত্র বিধায়কের দাবি করেছি।’’ বিজেপি, সিপিএম, তৃণমূল ও কংগ্রেস, চার দলের প্রতীক দিয়ে তাদের কাছে আর্জি করা হয়েছে, ‘‘প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের কাছে আমাদের ভাতার বিধানসভার নাগরিকদের আবেদন, আগামী বিধানসভায় ভাতারের প্রার্থী যেন ভূমিপুত্র এবং অবশ্যই ভোটার হন।’’
তবে এ দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিধায়ক সুভাষবাবু। তবে তাঁর অনুগামীদের দাবি, “ভাতারের রূপকার বলে যাঁকে ডাকা হয়, কংগ্রেস আমলের পূর্তমন্ত্রী ভোলানাথ সেনের বাড়ি কলকাতায়। তাঁর আমলেই ভাতারের রাস্তা থেকে দমকল, হাসপাতাল তৈরি হয়। আর যে সব অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। একটি বিশেষ রাজনৈতিক দল এ সব ছড়াচ্ছে।’’
বিধায়ক-ঘনিষ্ঠেরা তথ্য দিয়ে জানাচ্ছেন, ১৯৫৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত ভাতারের বিধায়কদের মধ্যে তিন জন মাত্র ‘ভূমিপুত্র’। এক জন, ১৯৭১ সালে সিপিএমের টিকিটে জয়ী অনাথবন্ধু ঘোষ। ১৯৯৬ থেকে দশ বছর বিধায়ক ছিলেন ‘ভূমিপুত্র’ সিপিএমের সুভাষ মণ্ডল। আরও এক জন ‘ভূমিপুত্র’, ২০১১ সালে জয়ী তৃণমূলের বনমালী হাজরা। এলাকা থেকেই চার বারের বিধায়ক হয়েছিলেন বামফ্রন্টের মুখ্য সচেতক সৈয়দ মহম্মদ মসীহ। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে। কর্মসূত্রে তিনি ভাতারের কামারপাড়ায় এসেছিলেন। ভাতারের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বামফ্রন্ট আমলের প্রাক্তন মন্ত্রী মেহেবুব জাহেদিরও বাড়ি ছিল গুসকরায়।
পাশাপাশি, এলাকাবাসীর একাংশ আবার ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় লিখেছেন, ‘‘বহিরাগত বিধায়ক থাকলে নানা অসুবিধা। এলাকার বাসিন্দা বিধায়ক হলে, তা আর হয় না। সাম্প্রতিক উপনির্বাচনেও স্থানীয় প্রার্থীর প্রয়োজনীয়তা বোঝা গিয়েছে।’’ দাবিকে সমর্থন করেছে নানা রাজনৈতিক দল। সিপিএমের স্থানীয় নেতা নজরুল হক বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় যে দাবি তোলা হয়েছে, তা অমূলক নয়।’’ কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি তপন সামন্তও মনে করেন, “এখন বিভিন্ন কাজে বিধায়ককে মানুষের দরকার। সে জন্যই স্থানীয় প্রার্থী প্রয়োজন।’’ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ মানগোবিন্দ অধিকারীও বলেন, “মানুষের অসুবিধা হচ্ছে বলেই তাঁরা এই দাবি করছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy