এক ছাত্রের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। দশ বছর আগে পুজোর সময় ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় ওই ছাত্র কৌশিক রায়ের। ছেলেকে খুনের অভিযোগ করে পরিবার। পরে সিআইডি তদন্তে সন্তুষ্ট না হয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন ওই ছাত্রের মা চন্দনা রায়। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ওই মামলাতেই সিবিআই তদন্তে নির্দেশ দেন। জেলা পুলিশ ও সিআইডিকে দশ দিনের মধ্যে মামলার সমস্ত নথি সিবিআইকে হস্তান্তর করার কথাও বলা হয়েছে।
চন্দনাদেবীর আইনজীবী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ভাস্করপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ২০০৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পুজোর সময় মোটরবাইকে চেপে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন কৌশিক। পিছনে ছিলেন তাঁরই এক বন্ধু। সন্ধ্যায় চন্দনাদেবী খবর পান মোটরবাইক দুর্ঘটনায় কৌশিক মারা গিয়েছেন। স্বামীর সঙ্গে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান তিনি। অভিযোগ, কৌশিকের দেহ আগে তাঁদের দেখতে দেওয়া হয়নি। ময়না-তদন্তের পরে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করলেও চন্দনাদেবী ও তাঁর স্বামী বর্ধমান থানায় ছেলেকে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পরে জেলা পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার নেয় সিআইডি।
আইনজীবীদের দাবি, সিআইডি তদন্তে গাফিলতি ও একাধিক ফাঁক থাকায় অভিযোগ জানানো হয় হাইকোর্টে। ময়না-তদন্তের রিপোর্টে কী ভাবে মৃত্যু হয়েছে তাঁর উল্লেখ নেই বলেও তাঁদের দাবি। আইনজীবীরা জানান, ওই রিপোর্ট অবসরপ্রাপ্ত এক চিকিৎসককে দেখানোর পরে তিনি মতামত দেন, মাথায় ভোঁতা কোনও বস্তুর আঘাত ছিল। আবার যে ধরনের আঘাতের কথা ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, তার সঙ্গে সুরতহাল রিপোর্টের মিল নেই। অবসরপ্রাপ্ত ওই চিকিৎসকের মতে, পরিকল্পিত খুন করা হয়েছে কৌশিককে।
হাইকোর্টে আরও অভিযোগ করা হয়, সিআইডি-র রিপোর্টে কৌশিকের মোটরবাইকে ডান দিকে ধাক্কা লাগার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু যাবতীয় আঘাত ছিল ওই ছাত্রের দেহের বাঁ দিকে। বর্ধমান হাসপাতালে কৌশিকের চিকিৎসার ‘বেড টিকিট’ উধাও হয়ে যায় বলেও তাঁদের দাবি। চন্দনাদেবী আদালতে জানান, যে দিন কৌশিকের মৃত্যু হয়, সেই দিন প্রায় একই সময়ে তাঁর অন্য এক বন্ধু, বর্ধমানেরই বাসিন্দা অনুজ ভগত গাড়ি দুর্ঘটনায় হুগলির সিঙ্গুরে মারা যান। দু’জনকে একই জায়গায় খুন করে অন্য জায়গায় দেহ ফেলে দেওয়া হয়ে থাকতে পারে বলেও তাঁদের আশঙ্কা।
এই মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানিয়েছিলেন, সিআইডি তদন্তে গাফিলতি নেই। মোটরবাইক দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রের। ওই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy