Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

সমাজতত্ত্বের সমাবর্তনে স্থগিতাদেশ

আলিশা ওয়াহিদা মেমারির নিমো গ্রামের ওই ছাত্রীর আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, গত বছর সমাজতত্ত্বে এমএ পাশ করেছেন ওই ছাত্রী। পরীক্ষার ফল বার হয় গত অগস্টে।

শমীক ঘোষ ও সৌমেন দত্ত
কলকাতা ও বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ জুন ২০১৯ ০০:৪২
Share: Save:

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগের স্নাতকোত্তরের সমাবর্তনের উপর স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট। ওই বিভাগের এক ছাত্রীর দায়ের করা মামলার জেরে বুধবার বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় ১৬ অগস্ট পর্যন্ত স্থগিতাদেশ জারি করেছেন। এ ছাড়াও এমএড-বিভাগে প্রথম হওয়া পড়ুয়ার বৈধতা নিয়ে অভিযোগ ওঠায় সমাবর্তনে ওই পদক দেওয়াও স্থগিত রেখেছে কর্তৃপক্ষ। আজ, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাকি বিভাগের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অবশ্য কোনও বাধা নেই।

আলিশা ওয়াহিদা মেমারির নিমো গ্রামের ওই ছাত্রীর আইনজীবী নীলাঞ্জন ভট্টাচার্য জানান, গত বছর সমাজতত্ত্বে এমএ পাশ করেছেন ওই ছাত্রী। পরীক্ষার ফল বার হয় গত অগস্টে। ওই ছাত্রীর ‘কিউমুলেটিভ গ্রেড পয়েন্ট অ্যাভারেজ’ (সিজিপিএ) হল ৭.২৪। এমএ-তে দ্বিতীয় হন তিনি। প্রথম হন অর্পিতা ঘোষ নামে এক ছাত্রী। তাঁর সিজিপিএ ৭.২৯। নম্বরে সন্তুষ্ট না হয়ে অর্পিতা উত্তরপত্রের পুনর্মূল্যায়ণ চান। তাতে তাঁর সিজিপিএ হয় ৭.২৩। ফলে আলিশা প্রথম স্থান দখল করেন। পরে গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাজতত্ত্বের এমএ পরীক্ষার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানাধিকারীর উত্তরপত্র পুনরায় মূল্যায়ণ করার সিদ্ধান্ত নেন। নীলাঞ্জনের দাবি, এ বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি আলিশা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে দেখতে পান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সমাজতত্ত্বের এমএ পরীক্ষার ফলাফলে ‘ভ্রম সংশোধন’ করে জানিয়েছেন, আলিশার সিজিপিএ ৭.২৪ থেকে কমে ৭.১৮ হয়েছে। তৃতীয় স্থানাধিকারীর সিজিপিএ ছিল ৭.০৫। তা অপরিবর্তিত রয়েছে।

ওই ছাত্রীর দাবি, তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পুনর্মূল্যায়ণের আর্জি জানাননি। তাহলে কর্তৃপক্ষ কী ভাবে তাঁকে না জানিয়ে তাঁর উত্তরপত্র পুনর্মূল্যায়ণ করলেন। পুনর্মূল্যায়ণের সময় তাঁর মতামত নেওয়া বা তাঁকে বক্তব্য জানানোর সুযোদ দেওয়া উচিত ছিল বলেও তাঁর দাবি। এ দিন শুনানিতে তাঁর আইনজীবী জানান, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গত ২৪ ডিসেম্বর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং এ বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি যে ভ্রম সংশোধনের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন, তার বৈধতা নেই।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী নয়ন বিহানির দাবি, ২৪ ডিসেম্বরের সিদ্ধান্তের বৈধতা রয়েছে। কারণ, ওই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রয়েছে কার্যনির্বাহী কাউন্সিলের। অর্পিতার আইনজীবী বক্তব্য পেশের জন্য আরও একদিন সুযোগ চেয়েছেন। তাঁরও দাবি, কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে আইনি বাধা নেই।

এ দিন বিচারপতি বলেন, ‘‘ক্ষমতা থাকলেও এমন একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। এই সিদ্ধান্ত খামখেয়ালি। পিছনের দরজা দিয়ে স্বজনপোষণের সামিল।’’ এ দিন সব পক্ষকে হলফনামা পেশ করে পরবর্তী বক্তব্য পেশের সুযোগ দিয়েছেন বিচারপতি। মামলার পরবর্তী শুনানি জুলাইয়ের তৃতীয় সপ্তাহে।

গত বছরও সমাবর্তনের পুরস্কার নিয়ে হাইকোর্টে হাজির হয়েছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পড়ুয়ারা। কে পদক পাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। তখনও ‘স্পেশ্যাল রিভিউ’ দিয়ে সেই প্রশ্নে দাঁড়ি টানা হয়। বিশেষ পুনর্মূল্যায়ণের প্রশ্নে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি, গত বছরের ঘটনায় পদক দেওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। তাই এ বার কর্মসমিতি সিদ্ধান্ত নেয়, পুনর্মূল্যায়ণে প্রথম তিন জনের মধ্যে স্থানাধিকারী পাল্টে গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘স্পেশ্যাল রিভিউ’ করবে। কর্মসমিতির এক সদস্যের দাবি, “স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Burdwan University Convocation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy