হামলার কথা জানাচ্ছেন রাখি তিওয়ারি। (ডান দিকে) অভিযুক্ত পবন প্রধানকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
কাউন্সিলরের উপরে হামলার ঘটনায় পুলিশের একটি সূত্রের ধারণা ছিল, এর নেপথ্যে কেব্ল ব্যবসা নিয়ে কোনও টানাপড়েন থাকতে পারে। দুর্গাপুরের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত পবন প্রধান শনিবার আদালতে যাওয়ার পথে দাবি করলেন, ‘‘সব দখল করে নিয়েছে। বাধ্য হয়ে এমন একটা পথ নিতে হয়। তবে ভয় দেখাতে গিয়েছিলাম। গুলি করতে নয়।’’
শুক্রবার সাতসকালে দুর্গাপুর পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) রাখি তিওয়ারির নতুনপল্লির বাড়িতে গিয়ে তাঁকে কামড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পবনের বিরুদ্ধে। আরও অভিযোগ, অভিযুক্তের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল।
এই ঘটনার পরে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ বিজেপি-র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু, ঘটনার কারণ হিসেবে ব্যবসাগত কোনও দ্বন্দ্বের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি তদন্তকারীরা।
কিন্তু কেন ‘দ্বন্দ্ব’?
শহরের কেব্ল অপারেটেরদের একটি সংগঠনের অভিযোগ, রাখিদেবীর স্বামী কৌশিক তিওয়ারি ওরফে রাখু জোর করে এলাকার কেব্ল ব্যবসা হস্তগত করেছেন। ওই এলাকার আনন্দনগর, রুইদাসপাড়া, নতুনপল্লি, নঈমনগর প্রভৃতি এলাকায় কেব্লের ব্যবসা ছিল গোবিন্দ ঘোষের। তাঁর সঙ্গেই ব্যবসা করতেন পবন। শুক্রবার সকালে অস্ত্র হাতে পবন বাড়িতে এসে রাখিদেবীর কাছে রাখুবাবুরই খোঁজ করেন। পরে গোলমাল বাধে রাখিদেবীর সঙ্গে।
শনিবার পবন থানা থেকে আদালতে যাওয়ার পথে সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন, তাঁদের প্রায় দু’হাজার বাড়িতে কেব্ল সংযোগ ছিল। বছর চারেক আগে নতুনপল্লির সব কেব্ল সংযোগ বেহাত হয়ে যায়। তাঁর অভিযোগ, তিনি ওই এলাকায় গেলে তাঁকে মারধর করা হয়। তার পরে থেকে আর এলাকায় ঢুকতে পারেননি। নঈমনগরে যে সামান্য ক’টি সংযোগ এখনও রয়েছে পবনবাবুদের, তা-ও স্থানীয় এক জনের সহযোগিতায় কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ। পবনের অভিযোগ, ‘‘অন্যায় ভাবে গায়ের জোরে শাসক দলের প্রভাব খাটিয়ে রাখু তিওয়ারি আমাদের ব্যবসা প্রায় পুরোটাই দখল করে নিয়েছেন। আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, রাখুবাবু বা রাখিদেবী, যে কোনও এক জনকে দড়ি দিয়ে বেঁধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভয় দেখানোর পরিকল্পনা ছিল। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতাদের বহু বার জানিয়েছি। কিচ্ছু হয়নি। আমার হাতে আর কোনও উপায় ছিল না। ভয় দেখিয়ে কেব্ল-ব্যবসা ফিরে পাওয়ার জন্য এমন পথ নিতে বাধ্য হই।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কৌশিকবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। আমি কোথাও কারও প্রভাব খাটিয়ে বা গায়ের জোরে ব্যবসা দখল করিনি। হামলার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে। পুলিশ নিশ্চয়ই তা খুঁজে বার করবে।’’
কেব্ল অপারেটরদের মালিকদের একটি সংগঠন এই ঘটনায় পুলিশের কাছে উপযুক্ত তদন্তের দাবি করেছে। শাসক দলের প্রভাব খাটানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের দুর্গাপুর ২ ব্লক সভাপতি বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, ‘‘দলের নাম ভাঙিয়ে কিছু হয়নি। যদি কেব্ল ব্যবসা সংক্রান্ত সমস্যা হত, তা হলে কাউন্সিলর নন, তাঁর স্বামীই হামলার লক্ষ্য হতেন। তাই, এর নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনও উদ্দেশ্যে রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy