বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। ফাইল চিত্র
পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট তৈরি হবে বর্ধমান মেডিক্যাল ও কলেজ হাসপাতালে। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার ছ’কোটি টাকা বরাদ্দও করেছে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পাঁচ বছর ধরে টাকা পড়ে রয়েছে। শুরু হয়নি কাজ। এই পরিস্থিতিতে ভবন সংস্কারের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্কের চেয়ে বেশি টাকার প্রস্তাবিত খরচ দেখানোয়, সেটিরও অনুমোদন আটকেছে দফতর।
মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সুহৃতা পাল বলেন, “পরিকল্পনা পাঠানো হয়। প্রযুক্তিগত-সমস্যা হচ্ছিল। ফের নতুন পরিকল্পনা পাঠানো হয়েছে।’’ বছর দু’য়েক আগে প্রস্তাবিত ইউনিটের প্রকল্পটি দেখতে কেন্দ্রের তিন সদস্যের একটি দল বর্ধমানে এসে কেন্দ্রে রিপোর্ট দেয়। মেডিক্যাল সূত্রে খবর, কয়েক দিন আগে ‘ভিডিয়ো কনফারেন্স’-এ বার্ন ইউনিটের প্রসঙ্গ ওঠে। সেখানেই জানা যায়, হাসপাতালের ক্যাম্পাসের ‘নিউ বিল্ডিং’য়ের একতলাটি সংস্কার করে ৩০ শয্যার সম্পূর্ণ বার্ন ইউনিট তৈরি করা হবে। কিন্তু সংস্কারের জন্য পূর্ত দফতরের ৩ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা খরচের প্রস্তাবটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ভবনের পরিকাঠামো বাবদ ২ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করা যাবে। এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ভবন সংস্কারের অনুমোদন আটকে থাকায় বরাদ্দ টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে পৌঁছয়নি। তবে ক্যানসার ইউনিটের টাকা বরাদ্দ হয়ে সেটির জন্য ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, ‘ন্যাশনাল প্রোগ্রাম ফর প্রিভেনশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বার্ন ইনজুরিস’-এর টাকায় অস্ত্রোপচার, ‘ইনটেন্সিভ ট্রিটমেন্ট ইউনিট’ (আইটিইউ), ‘স্কিন গ্রাফটিং’, ‘প্লাস্টিক সার্জারি’র ব্যবস্থা সম্বলিত বার্ন ইউনিট তৈরি হওয়ার কথা।
এই মুহূর্তে জরুরি বিভাগের চার তলায় ৩০ শয্যার ইউনিটে গাদাগাদি করে থাকতে হয় দগ্ধ রোগীদের। ইউনিটের দু’টি ঘরেই অবাধে জুতো পরে যাতায়াত, রোগীর বিছানায় বসতে দেখা যায় পরিজনদের। শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রও প্রায়ই কাজ করে না বলে অভিযোগ। খোলা থাকে জানলা। ঘরের ভিতরে ঘোরে বেড়াল। ফলে, প্রতি মুহূর্তে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। পাশাপাশি, নেই ‘স্কিন গ্রাফটিং’ বা ‘প্লাস্টিক সার্জারি’র ব্যবস্থা। আলাদা করে ‘আইটিইউ’-এর ব্যবস্থা নেই।
অথচ, এই হাসপাতালের উপরে বর্ধমান, কাটোয়া, কালনার পাশাপাশি, লাগোয়া পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম-সহ চারটি জেলা নির্ভর করে। হাসপাতালের হিসেবে, গড়ে প্রতি মাসে ৯৫ থেকে ১০৫ জন দগ্ধ রোগী ভর্তি হন ‘তথাকথিত’ বার্ন ইউনিটে। রাধারানি ওয়ার্ডেও অনেক দগ্ধ রোগীকে ভর্তি করানো হয়। গত জুনে ভর্তি ৪১ জন রোগীর মধ্যে দু’জন মারা যান। আবার জুলাই, অগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে ভর্তি হওয়া এমন রোগীর সংখ্যা যথাক্রমে ৬৬, ৫৩, ৭১, ৫৯ জন। মৃত্যু হয়েছে যথাক্রমে ১৭, ১৪, ১২, ১৫ জনের। গত মাসে ৬৯ জন রোগীর মধ্যে ১৬ মারা গিয়েছেন। চিকিৎসদের একাংশের দাবি, পূর্ণাঙ্গ বার্ন ইউনিট তৈরি হলে হয়তো অনেক রোগীকেই বাঁচানো সম্ভব হত।
হাসপাতালের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহার আশা, “খুব দ্রুত বার্ন ইউনিট তৈরির অনুমোদন মিলবে। আগামী আর্থিক বছরে কাজ শুরুর সম্ভাবনা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy