Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Asansol

School Bhaban: বুলডোজ়ার চালিয়ে ভাঙা হল ‘স্কুল ভবন’

বুধবার সকালে স্কুল ভবন ভেঙে ফেলার বিষয়টি জানাজানি হতেই বিক্ষোভ শুরু হয় এলাকায়।

ভাঙা হচ্ছে ভবন।

ভাঙা হচ্ছে ভবন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২২ ০৬:১০
Share: Save:

স্কুল-বাড়ির তালা ভেঙে, যাবতীয় আসবাবপত্র আগেই বার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পরে, মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ, রেল বুলডোজ়ার চালিয়ে গোটা স্কুল ভবনটিই ভেঙে দিল। প্রতিবাদে, বুধবার ডিআরএম (আসানসোল) কার্যালয়ে বিক্ষোভ দেখায় তৃণমূল। তৃণমূলের অভিযোগ, গোটা দেশ জুড়েই ‘বুলডোজ়ার-সংস্কৃতি’ আমদানি করেছে বিজেপি। ‘স্বৈরতন্ত্রের প্রতীক’ হয়ে উঠেছে এই যন্ত্রটি। এ ঘটনা ফের তা প্রমাণ করল। যদিও বিজেপি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। রেলের যদিও দাবি, স্কুল ভবনটি খুবই বিপজ্জনক হওয়ায়, নিরাপত্তার স্বার্থে তা ভেঙে ফেলা হয়েছে।

আসানসোলের সিটি বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া রেলের জমিতে থাকা একটি পুরনো ভবনে ওই বেসরকারি স্কুলটি গড়ে তোলা হয়েছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রায় ৪০ বছর ধরে চলছে ওই স্কুল। তবে স্কুলটির কোনও সরকারি বোর্ডের অনুমোদন ছিল না। পড়ুয়াদের অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠন করিয়ে ভিন্-রাজ্যের বোর্ড থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ানোর ব্যবস্থা ছিল। স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে এ-ও জানা গিয়েছে, রেলের জমিতে থাকা ওই ভবনে স্কুল চালানোর জন্য তাঁদের কাছে রেলের কোনও লিখিত অনুমতিপত্র ছিল না।

বুধবার সকালে স্কুল ভবন ভেঙে ফেলার বিষয়টি জানাজানি হতেই বিক্ষোভ শুরু হয় এলাকায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্কুলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রামাসিহাসি পাসোয়ান। তিনি বলেন, “এখনও প্রায় আড়াইশো পড়ুয়া আছে। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় রয়েছি।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবকও বলেন, “আমার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। এখন ছেলের পড়াশোনার কী হবে জানি না!”

ঘটনাস্থলে স্থানীয় ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর গুরুদাস চট্টোপাধ্যায়, ‘আসানসোল মোটর ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়নের’ আহ্বায়ক রাজু অহলুওয়ালিয়াদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে তৃণমূলও। সকাল সাড়ে ১১টায় বিক্ষোভকারীরা ডিআরএম কার্যালয়ে যান। আরপিএফ গেট আটকে দেয়। গেটেই বিক্ষোভ-অবস্থান শুরু হয়। বেশ কিছুক্ষণ এই অবস্থা চলার পরে, রেল কর্তৃপক্ষের তরফে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। গুরুদাসের অভিযোগ, “কেন্দ্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বেসরকারি সংস্থাকে জমি বিক্রি করছে। কোনও সামাজিক কাজ করতে চাইছে না। উল্টে, কেন্দ্রের বিভিন্ন সংস্থা বিজেপির আদর্শ মেনে বুলডোজ়ার-সংস্কৃতির মাধ্যমে দিল্লি থেকে উত্তরপ্রদেশ, সর্বত্র ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। এ ক্ষেত্রেও সে চেষ্টা হয়েছে।” যদিও, বিজেপির জেলা মুখপাত্র শঙ্কর চৌধুরী বলেন, “ভিত্তিহীন কথাবার্তা। রেলের জমি ও ভবনে গজিয়ে ওঠা দখলদার উচ্ছেদ হোক, এটা আমাদেরও চাওয়া। একই সঙ্গে রেলপাড়েও উচ্ছেদ অভিযান হোক, সে দাবি জানাই।”

কিন্তু কেন এমন পদক্ষেপ? রেলের দাবি, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রেলের জমি বা ভবন থেকে দখলদার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসেবে ওই স্কুলটিও তুলে দেওয়া হয়েছে। রেলের আসানসোল ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক সুবলচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “ওই ভবনটি আদতে রেলের একটি পুরনো আবাসন। রেলের খাতায় আবাসনটি, ৫২ নম্বর হিসেবে পরিচিত। আবাসনটি জীর্ণ হয়ে গিয়েছে। যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে রেল এই ভবনটি ভেঙে দিয়েছে।” এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে তা হলে কি রেলের তরফে স্কুলের জন্য বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করা হবে। জনসংযোগ আধিকারিক এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol school Bulldozer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy