প্রতীকী ছবি।
ঘটনাস্থল, বারাবনি, রানিগঞ্জ থেকে পাণ্ডবেশ্বর। সে সব এলাকায় তাঁদের দলে নাম লেখানো নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও কর্মীরা তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে এখনও ‘বাড়ি ফিরতে পারছেন না’। পাশাপাশি, সন্ত্রাসের জন্যই ইতিমধ্যে যাঁরা বাড়িতে ফিরতে পেরেছেন, তাঁরা ‘নিষ্ক্রিয়’। এমনই অভিযোগ বিজেপির। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ভোটের মুখে ওই ঘরছাড়াদের বাড়ি ফেরানো এবং নিষ্ক্রিয়দের সক্রিয় করা, এই দু’টি বিজেপির কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জের হতে পারে বলে ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা। যদিও, তৃণমূল যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলার সূত্রে জানা গিয়েছে, বারাবনি বিধানসভা এলাকায় চার জন এবং কাঁকসা ব্লকে দু’জন বিজেপির দলীয় প্রতীকে নির্বাচিত পঞ্চায়েত সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়া, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে পাণ্ডবেশ্বরের কেন্দ্রা, বহুলা, নবগ্রাম ও ছোড়া পঞ্চায়েতের যথাক্রমে চার, দুই এবং এক জন করে পঞ্চায়েত সদস্য ও পাণ্ডবেশ্বর ব্লক থেকে এক জন জেলা পরিষদ সদস্য তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, বারাবনির পানুড়িয়া পঞ্চায়েত এবং রানিগঞ্জে দু’জন করে চার জন কর্মী এবং পাণ্ডবেশ্বরে দলের এক নেতা বাড়ি ফিরতে পারেননি। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরে, প্রায় পাঁচশো কর্মী, সমর্থক, নেতাকে তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্য বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল বলেও অভিযোগ। একে-একে বেশির ভাগই বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু বাড়িতে ফিরলেও তাঁদের সাংগঠনিক সক্রিয়তা সে ভাবে নজরে পড়ছে না, দাবি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজেপির একাধিক জেলা নেতার।
বিজেপির জেলা সভাপতি দিলীপ দে জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত ভোটে সংগঠিত ভাবে প্রচারে নামার আগে বিভিন্ন স্তরের নেতৃত্বদের সঙ্গে বৈঠক হচ্ছে। তাঁর বক্তব্য, “ঘরছাড়াদের বাড়ি ফেরাতে প্রশাসনের উপরে চাপ তৈরি করা হবে। তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে তাঁরা বাড়ি ফিরতে পারছেন না।”
অভিযোগের কথা জানাচ্ছেন বিজেপির ‘ঘরছাড়া’ কয়েক জনও। পাণ্ডবেশ্বরের একটি পঞ্চায়েতের সদস্যা এই মুহূর্তে বিজেপিতে রয়েছেন। তাঁর স্বামী এখনও বাড়ি ফিরতে পারছেন না বলে অভিযোগ। সেই ব্যক্তির ফোনে প্রতিক্রিয়া, “ইসিএল কর্মীদের পড়ুয়াদের স্কুল বাস ও সংস্থাকে গাড়ি ভাড়া দিয়ে সংসার চালাতাম। বিধানসভা ভোটের পরে থেকেই বাস ও গাড়িটি বাড়ির বাইরে দাঁড় করানো। আমি পড়শি জেলায় আছি।” কেন? তিনি সরাসরি পাণ্ডবেশ্বর তথা জেলা তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতার দিকে ইঙ্গিত করে জানান, ওই নেতা না কি তাঁকে বলেছেন, তিনি না বললে এলাকায় ফেরা হবে না। তৃণমূলের সংশ্লিষ্ট নেতার সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি। পাশাপাশি, মাস তিনেক আগে বাড়ি ফিরেছেন পাণ্ডবেশ্বরের হরিপুরের একটি এলাকার বাসিন্দা এক জনপ্রতিনিধি। সেই পরিবারের এক সদস্য বলেন, “জিমন্যাসিয়াম চালিয়ে সংসার চালাতাম। কিন্তু বিধানসভা ভোটের পরে থেকেই সেটির দরজায় তালা ঝুলিয়েছে তৃণমূল।”
তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন বলেন, “কাউকে বাড়ি ফিরতে বাধা দিইনি আমরা। যে কেউ নিজের রাজনৈতিক দলের হয়ে কর্মসূচিও করতে পারেন। কিন্তু যদি স্বেচ্ছায় এলাকার বাইরে থাকেন বা তাঁদের দলের কাজ না করেন, তা হলে আমাদের কিছু করার নেই।” আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট জানিয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy