বাঁ দিকে, সকালে টোলপ্লাজ়ায় বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভ। ডান দিকে, দুপুরে আহত টোলপ্লাজ়া কর্মী। নিজস্ব চিত্র
গোলমাল শুরু হয়েছিল সকালে থেকে। তা চরমে উঠল দুপুরে। নবান্ন অভিযানে যাওয়ার সময়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল, এই দাবি তুলে ফেরার পথে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে পালশিট টোলপ্লাজ়ায় কর্মীদের মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে টোলপ্লাজ়ার তিন জন কর্মীকে মারধর, ছবি তুলতে গেলে এক চিত্র সাংবাদিকের উপরে হামলা করা হয় বলে অভিযোগ। মেমারি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানায়, বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের একটি বাস ও একটি যাত্রিবাহী ছোট গাড়ি আটক করা হয়েছে। টোলপ্লাজ়ার আহত এক কর্মী প্রেমাংশু সাউয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করা হয়েছে। বিজেপি কর্মীদের পাল্টা অভিযোগ, লাঠি-বাঁশ নিয়ে তাঁদের তাড়া করে মারধর করেছেন টোলপ্লাজ়ার কর্মীরা।
বিজেপির অভিযোগ, এ দিন সকালে টোলপ্লাজ়ার লেনের উপরে একটি ট্রাক আড়াআড়ি ভাবে রেখে দেওয়া হয়েছিল। পশ্চিম বর্ধমান থেকে তাদের কর্মীদের নিয়ে নবান্ন অভিযানে যাওয়া গাড়িগুলি যাতে সহজে পেরোতে না পারে, সে জন্য তৃণমূল প্রভাবিত টোলপ্লাজ়ার কর্মীদের একাংশ এই কাজ করেছিল বলে দাবি বিজেপির। পশ্চিম বর্ধমানের বিজেপির জেলা সম্পাদক কেশব পোদ্দার অভিযোগ করেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হয়েছে।’’ দলের দুর্গাপুর পশ্চিম বিধানসভার আহ্বায়ক অভিজিৎ ভট্টাচার্য দাবি করেন, ‘‘আমাদের জানানো হল, ট্রাকটি নাকি বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে। আমরা বাস থেকে নেমে বিক্ষোভ দেখাতেই সেটি সচল হয়ে গেল!’’ পালশিট টোলপ্লাজ়ার এক কর্তার দাবি, এখানে নতুন-নতুন যন্ত্র বসছে। সে জন্য মাঝেমধ্যে লেন বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তা ছাড়া, ওই ট্রাকটি বিকল হয়েছে, সে কথা চালক টোলপ্লাজ়ার অফিসে বলতে এসেছিলেন। সেই সময়েই ক্ষোভ-বিক্ষোভ হয়।
সকালে বিষয়টি মিটে গেলেও নবান্ন অভিযান সেরে বিজেপির গাড়িগুলি ফেরার সময়ে ফের গোলমাল বাধে। জামালপুরের জৌগ্রামে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে অবরোধ করার চেষ্টা করে বিজেপি। কিন্তু এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) আমিনুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে মেমারি ও জামালপুর থানার পুলিশ মোতায়েন হওয়ায় কিছু ক্ষণের মধ্যে অবরোধ উঠে যায়। এর পরে টোলপ্লাজ়া দিয়ে বিজেপি সমর্থকদের গাড়িগুলি পেরোনোর সময়ে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কর্মীরা কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। তখনই বাস ও গাড়ি থেকে নেমে তিন জনকে মারধর করা হয়। ছবি তুলতে গিয়ে জখম হন এক সংবাদপত্রের চিত্র সাংবাদিক। মেমারি গ্রামীণ হাসপাতাল নিয়ে গেলে চার জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
টোলপ্লাজ়ার কর্মী প্রেমাংশু সাউয়ের অভিযোগ, “আমি লেনের পাশে কাজ করছিলাম। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বাসটি আটকানো হতেই তা থেকে লোকজন নেমে আমাকে জিজ্ঞাসা করে, গাড়ি আটকানো হল কেন? কিছু বলার আগেই মারধর শুরু হয়ে যায়।’’ স্থানীয় সূত্রের দাবি, ততক্ষণে তৃণমূলেরও কিছু লোকজন জড়ো হয়ে পাল্টা চড়াও হয়। বাস ও গাড়ি ফেলে বিজেপির লোকজন পালিয়ে যায়।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি (পূর্ব বর্ধমান) স্বপন দেবনাথের অভিযোগ, “বিশৃঙ্খলা করে রাজ্যে অরাজকতা তৈরি করতে চাইছে বিজেপি। রাজ্যে উন্নয়নের কাজ চলছে, তার মধ্যে এ ভাবে অশান্তি পাকিয়ে নজর ঘোরানোর উপায় খুঁজছে। সাংবাদিকেরাও আক্রান্ত হয়েছেন। মানুষই এর জবাব দেবেন।’’ বিজেপির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুই এই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy