কর্মক্ষেত্রে ফেরা হল না অজিত প্রসাদের নিজস্ব চিত্র
অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর অসুস্থতার কথা শুনে দৌঁড়ে গিয়েছিলেন বাড়িতে। স্ত্রী কিছুটা সুস্থ হলে কর্মক্ষেত্রে ফিরছিলেন আসানসোলের বাসিন্দা অজিত প্রসাদ। বুকে একগুচ্ছ ভাল লাগা নিয়ে সন্তানের আগমনের স্বপ্ন বুনতে বুনতে ফিরছিলেন কর্মক্ষেত্রে। কিন্তু ট্রেন বদল করতেই মুহূর্তের মধ্যে পাল্টে যায় পরিস্থিতি। তারপর? সব শেষ।
আসানসোলের বাসিন্দা অজিত প্রসাদ রেলকর্মী। কর্মসূত্রে ছিলেন অসমের রঙ্গিয়ার হেলেম রেল স্টেশনে। আট মাস আগে বছর ২৫-এর খুশবু কুমারীর সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। দিন কয়েক আগে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীর আসুস্থতার খবর পেয়ে দৌড়ে গিয়েছিলেন আসানসোল রেল হাসপাতালে। সেখানে দিন কয়েক থেকে স্ত্রী কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠলে তাঁকে বুঝিয়ে ফের কর্মক্ষেত্রের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। পরিবারের এক সদস্যের কথায়, শেষ তার সঙ্গে যখন কথা হয় তখন জানতে পেরেছিলেন কিসানগঞ্জ থেকে ট্রেন বদল করেছিলেন অজিত। কিন্তু কোন ট্রেন তা জানতেন পরিবারের লোকজন।
বিকানের-গুয়াহাটি এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার খবর শুনেও তখনও তাঁদের মনে আসেনি যে অজিত আর নেই। আন্দাজই করতে পারেননি ওই ট্রেনে উঠবেন তিনি।। দুর্ঘটনার খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার বেশ কিছু ক্ষণ বাদে তার পরিবার যোগাযোগের চেষ্টা করে অজিতের সঙ্গে। ফোনও করা হয়। কিন্তু কেউ ফোন ধরেনি। একটা সময় ফোনটাই আর পাওয়া যাচ্ছিল না। দুশ্চিন্তা করতে থাকেন তাঁরা। অজিতের শ্যালক রোহিত বলেন , ‘‘একটা সময় পর আর কোনও খবর পাচ্ছিলাম না। যোগাযোগ করা হয় শিলিগুড়ির একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি দুর্ঘটনাস্থলে প্রশাসনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছিল। ওই সংস্থার এক জন কর্মী রিলিফ ট্রেনের লোকো পাইলট। তিনি খোঁজ শুরু করেন রেল কর্মী অজিত প্রসাদের।
সংস্থার সদস্য সৈকত পাল বলেন, ‘‘খুঁজতে খুঁজতে অজিত প্রসাদকে পাওয়া যায় জলপাইগুড়ি হাসপাতালের মর্গে। জানা যায় ট্রেনের কামারায় মৃত্যু হয় অজিতের। অন্যান্য বেওয়ারিশ লাশের মধ্যে অজিতও রয়েছে। সংস্থার পক্ষ থেকেই খবর দেওয়া হয় আসানসোলে।’’
এই খবর শুনে নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছে অজিতের স্ত্রী খুশবু।
ঘটনার দিন রাতেই আসানসোল থেকে রওনা দেয় পরিবার। মর্গে অজিতকে সনাক্ত করেন। ময়নাতদন্তের পর নিয়ে যাওয়া হয় অজিতের মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় আসানসোলে। সেখানেই শনিবার তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy