প্রতীকী ছবি।
প্রায় ছ’বছর পরে বিচার পেলেন মঙ্গলকোটের ঠাঙাপাড়ার নাবালিকা।
কিশোরী অবস্থায় তাঁকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করার দায়ে বর্ধমানের পকসো আদালতের বিচারক সৈয়দ নিয়াজুদ্দিন শুক্রবার সাইফুল খানকে দশ বছরের কারাদণ্ড দেন। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানাও করা হয়। তা অনাদায়ে আরও দু’বছর জেল খাটারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিচারক তাঁর রায়ে জানিয়েছেন, জরিমানার অর্ধেক টাকা ওই কিশোরীকে দিতে হবে। একই সঙ্গে তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ চার লক্ষ টাকা দিতেও বলেছেন বিচারক। এর জন্য জেলা আইনি পরিষেবা কেন্দ্রকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ রাস্তার কল থেকে জল আনতে গিয়েছিলেন মেয়েটি। সেই সময়ে তার পথ আটকায় সাইফুল। কিশোরীকে তুলে নিয়ে গিয়ে শিশুবাগানে গামছা দিয়ে মুখ, হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ করা হয়। ঘটনার কথা কাউকে জানালে কিশোরীকে খুন করার হুমকি দেয় সাইফুল। এর পরেও ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিয়ে করার আশ্বাস দেয় সাইফুল। তবে শেষ পর্যন্ত বিয়ে করেনি। ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন ওই কিশোরী। এর পরে মঙ্গলকোট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ১০ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হয় সাইফুল।
এ দিন বিচারক রায়ে জানিয়েছেন, ঘটনার সময়ে কিশোরীর বয়স ছিল ১৫ বছর। নবম শ্রেণিতে পড়ত সে। তার মা ও ভাই মানসিক ভাবে অসুস্থ। কিশোরীর একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ঘটনার জন্য কিশোরী পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ন্যায় বিচারের স্বার্থে ক্ষতিপূরণ দেওয়া জরুরি বলেও জানান তিনি। সাজাপ্রাপ্তের পরিবার অবশ্য এই রায়ে খুশি নয়। সাইফুল খান আদালতের বাইরে পুলিশের গাড়িতে ওঠার সময় বলে, “আমাকে ফাঁসানো হল। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাব।’’
মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী শিবরাম ঘোষাল বলেন, “ওই কিশোরীর কন্যার পিতৃপরিচয় জানার জন্য আদালতের নির্দেশে ডিএনএ পরীক্ষা হয়। সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরির পরীক্ষায় সাইফুলকেই বাবা বলে জানানো হয়। ২০১৪ সালের ২৩ জুন চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। বিচার চলাকালীন জামিন পেয়েছিল সাইফুল। বুধবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করে জেল-হাজতে পাঠান বিচারক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy