Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ক্ষৌরকারদের কাজ নিয়ে সচেতনতা-বার্তা পুরসভার

দাঁইহাটের পুরপ্রধান শিশির মণ্ডল বলেন, ‘‘বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দেওয়ার সময়ে অনেক ক্ষৌরকার স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বলে অভিযোগ পেয়েছি।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২০ ০৪:১০
Share: Save:

‘লকডাউন’-এর জেরে মাস দু’য়েক সেলুন বন্ধ। তাতে যেমন অনেক বাসিন্দা সমস্যায় পড়ছেন, তেমনই উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাঁরাও সংসারে চালাতে বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ ক্ষৌরকারদের। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া, দাঁইহাটের অনেক ক্ষৌরকার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দেওয়া শুরু করেছেন, খবর পেয়েছেন পুরসভার কর্তারা। তাঁরা যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরিষেবা দেন, সে জন্য সচেতন করার পরিকল্পনা করেছেন দুই পুরসভা কর্তৃপক্ষ। দাঁইহাটে ক্ষৌরকারদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সেই কাজ শুরুও হয়েছে।

দাঁইহাটের পুরপ্রধান শিশির মণ্ডল বলেন, ‘‘বাড়ি-বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দেওয়ার সময়ে অনেক ক্ষৌরকার স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বলে অভিযোগ পেয়েছি। তাতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কী ভাবে কাজ করতে হবে, সে বিষয়ে ক্ষৌরকারদের সচেতন করা শুরু হয়েছে পুরসভার তরফে। সোমবার শহরের প্রত্যেক ক্ষৌরকারকে ‘মাস্ক’, ‘গ্লাভস্’ এবং ‘স্যানিটাইজ়ার’ বিতরণ করা হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বছর পঁচিশ আগেও কাটোয়া ও দাঁইহাট শহরে ক্ষৌরকারেরা ছোট বাক্সে ক্ষুর, কাঁচি, আয়না-চিরুনি নিয়ে বাড়ি-বাড়ি ঘুরে পরিষেবা দিতেন। পরে তা কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পুরসভার হিসাব অনুযায়ী, কাটোয়া শহরে প্রায় দেড়শো ও দাঁইহাটে প্রায় ৭০ জন ক্ষৌরকার রয়েছেন। স্থানীয় নানা সূত্রের দাবি, ‘লকডাউন’-এ তাঁদের অনেকে আবার বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কাজ করা শুরু করেছেন। ফোনে নাম-ঠিকানা জানিয়ে দিলে, অনেক ক্ষৌরকার গ্রাহকের বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছেন।

স্টেশনবাজার চৌরাস্তার সেলুন মালিক শ্যামা প্রামাণিক বলেন, ‘‘প্রায় দু’মাস দোকান বন্ধ। পেটের টানেই বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কাজ করছি।’’ ছোট লাইনপাড় এলাকার সেলুন মালিক নারায়ণ প্রামাণিক আবার বলেন, ‘‘সেলুন বন্ধ থাকলেও, কারও বাড়ি গিয়ে কাজ করছি না। কেউ বাড়িতে এসে অনুরোধ করলে, চুল-দাড়ি কেটে দিচ্ছি।’’ কেতুগ্রামের বহরানের সেলুন মালিক রূপনাথ প্রামাণিক, খোকন প্রামাণিকেরা বলেন, ‘‘দোকান বন্ধ থাকায়, কিছু দিন জমি থেকে ধান তোলার কাজ করছিলাম। কিন্তু সেই কাজও শেষ। এখন কেউ ডাকলে, বাড়ি গিয়ে পরিষেবা দিচ্ছি‌।’’

কিন্তু এ ভাবে পরিষেবা দেওয়ায় সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছে বলে মনে করছেন অনেকেই। কাটোয়া থানা রোডের বাসিন্দা শুভেন্দু সাহা, দাঁইহাটের বাসিন্দা হাসিবুল শেখদের অভিযোগ, ‘‘বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্ষৌরকারেরা সচেতন হয়ে কাজ করছেন না। তাতে কিন্তু করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা থাকছেই। এ বিষয়ে পুরসভার নজর দেওয়া উচিত।’’ কাটোয়ার পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা প্রত্যেক ক্ষৌরকারকে স্বাস্থ্যবিধির প্রশিক্ষণ দিয়ে কাজ করতে বলেছেন। প্রত্যেককে ‘মাস্ক’ ও ‘গ্লাভস্’ পরে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে শীঘ্রই সচেতনতামূলক প্রচার করা হবে।’’

‘লকডাউন’-এ তাঁরাও বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ বিভিন্ন পার্লার মালিকদের। কাটোয়ার পার্লার মালিক তন্দ্রা চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চুল কাটা ও রূপচর্চার প্রশিক্ষণ নিয়েছি। প্রশাসন যদি নির্দিষ্ট সময় বেঁধে পার্লার খোলার অনুমতি দেয়, উপকার হয়।’’ কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, সরকারি নির্দেশ পেলে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy