Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
আউশগ্রামে সালিশি ডাকার অভিযোগ

‘কাটমানি’ ফেরত চেয়ে চলল ভাঙচুর

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোরে মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক প্রদীপ চক্রবর্তীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে।

ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র

ভাঙচুরের পরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মঙ্গলকোট ও আউশগ্রাম শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৯ ০১:২২
Share: Save:

‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে আগেই সালিশিসভা বসানোর অভিযোগ উঠেছিল গ্রামে। এ বার উপপ্রধানের বাড়িতে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল মঙ্গলকোটের চাণকে। ওই ঘটনায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেছেন ওই নেতা।

এ দিন আউশগ্রামের রামনগর পঞ্চায়েতের ধনকোড়া গ্রামেও কাটমানি ফেরত চেয়ে সালিশি সভা বসানোর অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অভিযুক্ত নেতা হিসেব দিতে রাজিও হয়েছেন। যদিও তৃণমূলের দাবি, নেতারা পঞ্চায়েতের হিসেব দিলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে বেআইনি ভাবে কোনও টাকা নেওয়া হয়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোরে মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক প্রদীপ চক্রবর্তীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। প্রদীপবাবুর স্ত্রী লীনা চক্রবর্তী চাণক অঞ্চলের উপপ্রধান। মূলত তাঁর বিরুদ্ধেই ঘর তৈরি, শৌচাগার তৈরি ও একশো দিনের কাজে টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি। এ দিন প্রদীপবাবুর ভাই তাপস চক্রবর্তীর মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। পরে মঙ্গলকোট থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেন প্রদীপবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘২৩ মে আমার বাড়ি ভাঙচুর করেছিল বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। এ দিন ফের বাড়ির গ্রিল ভেঙে দেওয়া হয়। একটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়।’’ এ দিন হামলার পরে দলীয় কার্যালয়ে যান তাঁরা। সেখান থেকে থানায় যান।

বিজেপির দাবি, ওই ঘটনার পরেই পুলিশ তাদের এক সমর্থককে আটক করে। বিনা দোষে তাঁকে ধরা হয়েছে দাবি বেলা ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত নতুনহাট-গুসকরা রাস্তায় চাণক মোড় অবরোধ করেন কৃষ্ণপুর ও চাণকের বাসিন্দাদের একাংশ। সাড়ে তিন ঘণ্টার বিক্ষোভে গুসকরা, আসানসোল, বর্ধমান ও কাটোয়াগামী বহু বাস থেমে যায়। পরে পুলিশ গেলে বিক্ষোভ ওঠে। রবিবারও এই গ্রামের দুই তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ তুলে সালিশি বসান গ্রামবাসীদের একাংশ। বিজেপির উদ্যোগে রীতিমতো ফর্ম বিলি করে কে, কত টাকা নিয়েছেন তার তালিকাও তৈরি হয়। যদিও ওই দুই নেতাকে দলের সদস্য বলে মানতে রাজি হননি তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি।

এ দিন দলের ব্লক সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর দাবি, ‘‘এলাকায় অশান্তি ছড়াতে পরিকল্পনামাফিক হামলা চালিয়েছে বিজেপি।’’ স্থানীয় বিজেপি নেতা রানা প্রতাপ গোস্বামী, বুদ্ধদেব মণ্ডলদের অবশ্য দাবি, ‘‘চাণক পঞ্চায়েতে ব্যাপক দুর্নীতি চলছে। এই বিক্ষোভ বিক্ষুব্ধদেরই।’’

আউশগ্রামের ধনকোড়া গ্রামের ধর্মরাজতলায় সালিশি সভায় পঞ্চায়েত সদস্যেরা ছাড়াও তৃণমূলের বুথ সভাপতি, নেতা এবং একশো দিনের কাজের সুপারভাইজাররা হাজির ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গ্রামের উন্নয়নের জন্য যে সমস্ত টাকা পঞ্চায়েত, নেতারা খরচ করেছেন, বা সরকারি বাড়ি দিয়ে যে সমস্ত টাকা তাঁরা নিয়েছেন, তার হিসেব চাওয়া হয় এ দিন। উন্নয়নে বরাদ্দ টাকা থেকেই নেতারা ‘কাটমানি’ খেতেন বলে তাঁর দাবি। এ দিন টাকা ফেরানোর দাবি জানান তাঁরা। নেতারা টাকা নেওয়ার কথা মেনেছেন বলেও তাঁদের দাবি।

তৃণমূলের পাল্টা দাবি, ওই টাকা গ্রামের সামাজিক উন্নয়নের জন্য খরচ করা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রামনগর পঞ্চায়েতের সদস্য সুকুমার আঁকুড়ের দাবি, ‘‘আমরা হিসাব দেওয়ার জন্য কয়েক দিন সময় চেয়েছি। তাতে গ্রামবাসীরা রাজি হয়েছেন।” রামনগর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সভাপতি শেখ আসগরের দাবি, “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পুরোটা। আমাদের পঞ্চায়েত হিসেব দিলে বোঝা যাবে কেউ টাকা নেননি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ausgram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy