দুর্গাপুরে আহত নেতা। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূল কাউন্সিলরের উপরে ক্ষুর নিয়ে হামলার অভিযোগ উঠল দুর্গাপুরে। বুধবার রাতে ঘটনার পরেই অভিযুক্তকে ধরে ফেলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। হাতে চোট পাওয়া কাউন্সিলর সুভাষ মজুমদারকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আবার তৃণমূলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র-সহ এক যুবক চড়াও হয় বলে অভিযোগ। নিরাপত্তারক্ষী ও আশপাশের লোকজন তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের ৪০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুভাষবাবু সে দিন সন্ধ্যায় গ্যামন ব্রিজের কাছে আড্ডা দিচ্ছিলেন। অভিযোগ, রাত ৮টা নাগাদ একটি স্কুটিতে এসে খেজুরতলা এলাকার বাসিন্দা কালী মিশ্র কাউন্সিলরের উপরে ক্ষুর নিয়ে চড়াও হন। শ্যামরায় মুর্মু নামে এক দোকানদার কাউন্সিলরকে বাঁচাতে যান। তাঁর বাঁ হাতে চোট লাগে। কাউন্সিলর ডান হাতের আঙুলে চোট পান। আশপাশের কিছু বাসিন্দা অভিযুক্তকে ধরে মারধর শুরু করে। পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পুলিশ ধৃতকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে।
ঘটনার পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ সুভাষবাবুর। তাঁর কথায়, ‘‘সিপিএম ছেড়ে কিছুদিন আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কালী মিশ্র। ওই দোকানদার ছুটে এসে আমাকে না বাঁচালে বড় বিপদ হতে পারত।’’ যদিও এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, অভিযুক্ত এলাকায় তৃণমূলের হয়েই কাজ করেন। ডিপিএলে টাকার বিনিময়ে ঠিকা শ্রমিকের কাজ দেওয়া নিয়ে চাপানউতোরেও তাঁর নাম জড়িয়েছিল। তবে কাউন্সিলরের উপরে হামলার কারণ স্পষ্ট নয়। ধৃতের দাবি, কিছু দিন আগে তাঁর কাছ থেকে এক লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, সোনার হার কেড়ে নেন কাউন্সিলর। তবে ক্ষুর নিয়ে চড়াও হওয়ার কথা অস্বীকার করে তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বুধবার রাতে রাস্তায় আমাকে আটকে মারধর করে রক্তাক্ত করে দেওয়া হয়।’’
ঘটনার খবর পেয়ে পৌঁছন তৃণমূল কাউন্সিলর দেবব্রত সাঁই, চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়। দেবব্রতবাবুর অভিযোগ, ‘‘দুর্গাপুরকে অশান্ত করতে নানা চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। রাজনৈতিক ভাবেই আমরা এ সবের মোকাবিলা করব।’’ বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘এটা একেবারেই তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফল। এলাকার মানুষ সব জানেন।’’
কয়েক মাস আগে শহরের তৃণমূল কাউন্সিলর রাখি তিওয়ারির বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে চড়াও হয় এক যুবক। লোকসভা ভোটের পরে পাড়ার বাসিন্দাদের বিক্ষোভে বেশ কিছু দিন ঘরছাড়া ছিলেন কাউন্সিলর শশাঙ্কশেখর মণ্ডল। বুধবার সুভাষবাবুর উপরে ক্ষুর নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। দুর্গাপুরে কেন বারবার কাউন্সিলররা হামলার শিকার হচ্ছেন, এই ঘটনার পরে শহরে সে নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। তৃণমূলের একাংশের দাবি, বেশ কিছু কাউন্সিলরের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। অবিলম্বে দল তাঁদের সতর্ক না করলে পরিস্থিতির অবনতি হবে। যদিও জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্নের কথা মানতে চাননি।
পাণ্ডবেশ্বরের বাঁকোলা সুভাষ কলোনিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ এক যুবক ব্লক তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথবাবুর বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তখন বাড়িতেই ছিলেন নরেন্দ্রনাথবাবু। তাঁর নিরাপত্তারক্ষী অভিষেক কোনারের কথায়, ‘‘ওই দুষ্কৃতীকে তাড়া করলে সে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। প্রতিবেশীরা তাকে ধরে ফেলে। জঙ্গলে ফেলে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রটিও উদ্ধার করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।” নরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, “পুলিশের কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে।” ঘটনার প্রতিবাদে উখড়ার শঙ্করপুরে রাস্তা অবরোধ করে তৃণমূল। তাদের দাবি, এর পিছনে বিজেপির হাত রয়েছে। বিজেপি নেতা জিতেন চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, যা হয়েছে তা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জের। পুলিশ জানায়, ধৃত বীরু বাউরি স্থানীয় বালুডাঙার বাসিন্দা। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy