কালনার জগন্নাথতলায় জোড়া শিবমন্দির। নিজস্ব চিত্র
দেশ-বিদেশের লোকের প্রশংসা, মুগ্ধতা মিলেছে বহু। কিন্তু যতখানি যত্ন দরকার, তা মেলেনি। স্বাভাবিক ভাবেই নষ্ট হতে বসেছে কালনা শহরের জগন্নাথতলার জোড়া শিবমন্দিরের টেরাকোটার কাজ। শহরের একটি মন্দির ডাকটিকিটে স্থান পাওয়ার পরে, এই মন্দিরটি পরিদর্শনেও আগ্রহী হয়েছেন পুরাতত্ত্ব বিভাগের আধিকারিকেরা।
বছর ষাটেক আগে কালনার ১০৮ শিবমন্দির, প্রতাপেশ্বর মন্দির, লালজি মন্দিরের মতো বেশ কিছু মন্দির নিজেদের তত্ত্বাবধানে নেয় ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ। পর্যটক টানতে সাজানো হয় রাজবাড়ি কমপ্লেক্স। তবে এখনও বেশ কিছু প্রাচীন নিদর্শন রয়েছে যেগুলি পুরাতত্ত্ব বিভাগের নজরদারির বাইরে। তেমনই একটি কালনা শহরে আদালতমুখী রাস্তার পাশে থাকা জগন্নাথতলার জোড়া শিবমন্দির। দু’টি মন্দিরের মধ্যে পশ্চিম দিকের মন্দিরটি রাজেশ্বর মন্দির নামে পরিচিত। পূর্ব দিকের মন্দিরটি ভুবনেশ্বর মন্দির। কথিত আছে, বর্ধমানের মহারাজা চিত্রসেনের মৃত্যুর পরে, দুই রানি ছঙ্গ কুমারী ও ইন্দ্র কুমারী মন্দির দু’টি তৈরি করান। বিশেষজ্ঞদের দাবি, মুঘল আমলের শেষ দিকে বাংলার মন্দিরের স্থাপত্যরীতি বুঝতে এই মন্দিরদু’টি গুরুত্বপূর্ণ।
তবে দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় নোনা ধরেছে মন্দিরের টেরাকোটার দেওয়ালে। চূড়ায় গাছ গজিয়েছে। নানা অংশ থেকে খসে পড়েছে বড় বড় চাঁই। কিছু দিন আগে মন্দির দু’টির সামনের কিছুটা অংশে চাঁদা তুলে সংস্কারও করেন এলাকার লোকজন। এখানেই প্রায় দেড় বিঘা জমির উপরে রয়েছে বর্ধমান রাজ পরিবারের জগন্নাথ মন্দিরও। সম্প্রতি জোড়া শিবমন্দির নিয়ে আগ্রহ দেখান ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের তরপে কালনার মন্দিরগুলি দেখভালের দায়িত্বে থাকা গঙ্গা দাস। তিনি বর্ধমান রাজপরিবারের হয়ে কালনার মন্দিরগুলির দেখভালকারী জয়চাঁদ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে জোড়া শিবমন্দিরের বিষয়ে তাঁদের প্রাথমিক আগ্রহের কথা জানান। জয়চাঁদবাবু যোগাযোগ করেন বর্ধমান রাজ পরিবারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। ২ সেপ্টেম্বর বর্ধমান রাজ পরিবারের সদস্য প্রণয়চাঁদ মহাতব পুরাতত্ত্ব বিভাগের কলকাতা শাখার সুপারিন্টেন্ডেন্টকে ই-মেল করে জানান, মন্দির দু’টি পুরাতত্ত্ব বিভাগ দেখভাল করলে তাঁদের আপত্তি নেই। তবে জগন্নাথ মন্দিরেরও দায়িত্ব নিতে হবে। জয়চাঁদবাবু বলেন, ‘‘মন্দির দু’টি এবং জগন্নাথ মন্দির কালনার অমূল্য সম্পদ। পুরাতত্ত্ব বিভাগ দায়িত্বে নিলে ইতিহাস বেঁচে থাকবে।’’
গঙ্গাবাবু জানান, মন্দির দু’টির টেরাকোটার শিল্প অপূর্ব। চেষ্টা চলছে ইতিহাসকে বাঁচানোর। দ্রুত মন্দির দু’টি এবং জগন্নাথ বাড়ি পরিদর্শন করবেন ঊর্ধ্বতন আধিকারিকেরা। তাঁর দাবি, কালনার আর একটি প্রাচীন মন্দির রয়েছে সমাজবাড়িতে। সেই মন্দিরের ছবিও তুলে আনা হয়েছে। তবে তাঁরা সেটি সংরক্ষণে আগ্রহ দেখালেও মালিকদের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy