দীপাবলির আগে মাটির প্রদীপ তৈরি গুসকরায়। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়।
দীপাবলির আগে কালনা মহকুমার মৃৎশিল্পীদের তৈরি প্রদীপ, ধুনুচি, মাটির ঘটের চাহিদা বেড়েছে বলে জানালেন শিল্পীরা। তাঁদের দাবি করোনা পরিস্থিতিতে গত ২-৩ বছর ব্যবসা কমে গিয়ছিল। এ বছর তা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি, প্লাস্টিকের তৈরি প্রদীপ ব্যবহারেরও অনীহা দেখা দিয়েছে অনেকের মধ্যেই। ফলে, প্রদীপের চাহিদা বেশ কিছুটা বেড়েছে। যদিও তাঁরা জানাচ্ছেন, প্রদীপ তৈরির জন্য ভাল মাটির জোগান পেতে সমস্যা হচ্ছে।
কালনা ২ ব্লকের সাতগাছি পঞ্চায়েতে বেশ কয়েকটি মৃৎশিল্পী পরিবার থাকেন। দুর্গাপুজো মিটতেই প্রদীপ, ঘট, ধুনুচি তৈরির ব্যবস্তা বেড়েছে তাঁদের ঘরে ঘরে। তাঁরা জানান, দু’তিন দশক আগেও দীপাবলিতে ঘর আলো করতে একচেটিয়া ব্যবহার ছিল মাটির প্রদীপের। ধীরে ধীরে টুনি আলো, রঙিন মোমবাতি, প্লাস্টিকের প্রদীপ বাজার দখল করতে শুরু করে। লোকসানের মুখে পড়েন শিল্পীরা। করোনা পরিস্থিতিতেও মাটির প্রদীপের ব্যবসা কমে গিয়েছিল। তবে গত বছর থেকে ফের ব্যবসা বেড়েছে।
এই পঞ্চায়েতের মেদগাছি রাজবংশীপাড়া এলাকার শিল্পী চণ্ডী পাল বলেন, ‘‘এবার কালনা শহর, জিরাট, ধাত্রীগ্রাম, সমুদ্রগড়, ত্রিবেণী, শান্তিপুর-সহ নানা এলাকার বড় দোকানগুলি থেকে প্রচুর প্রদীপের বরাত মিলেছে। চাহিদা রয়েছে নানা ডিজাইনের প্রদীপেরও। গত বছর যেখানে বরাত ছিল ৭০ হাজার প্রদীপের, এবার সেখানে ইতিমধ্যে এক লক্ষ প্রদীপ তৈরির বারত মিলেছে। আশা করছি ভাল লাভ থাকবে।’’ যদিও তাঁর দাবি, ভাল প্রদীপ তৈরির জন্য ভাল মানের মাটির প্রয়োজন হয়। এবার সেই মাটি পেতে সমস্যা হচ্ছে। মাটির দাম, শিল্পীদের বেতন-সহ অন্যান্য খরচও বেড়েছে। ফলে প্রদীপের দাম বাড়াতে হয়েছে ৩ শতাংশ। নকশা অনুযায়ী দামের হেরফের হয়। মোটামুটি প্রতিটি প্রদীপ ১০-৭০ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে।
কালনা ১ ব্লকের আর এক মৃৎশিল্পী বিষ্ণু পাল বলেন, ‘‘দুর্গাপুজোর পর ঝড়-বৃষ্টি থাকলে প্রদীপ শুকোতে সমস্যা হয়। এবার এখনও পর্যন্ত ঝলমলে আবহাওয়া পাওয়া গিয়েছে। ফলে ইতিমধ্যে প্রচুর প্রদীপ তৈরি করা হয়েছে। ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে অনেকে প্রদীপের মধ্যে নানা ধরনের নকশা ব্যবহার করা হচ্ছে।’’
কালনা শহরের বাসিন্দা শেফালি মল্লিক, রমা কর্মকারেরা বলেন, ‘‘দীপাবলিতে ঘর আলো করতে মাটির প্রদীপের বিকল্প নেই। এখন থেকেই নানা ধরনের মাটির প্রদীপ কিনতে শুরু করেছি।’’
কালনা ২ ব্লকের বাসিন্দা মামনি সরকার বলেন, ‘‘কয়েক বছর দীপাবলিতে মোমবাতি, টুনি আলো লাগিয়েছিলাম ঘরের চারদিকে। কিন্তু মন ভরেনি। গত বছর থেকে ফের মাটির প্রদীপ দিয়ে ঘর সাজানো শুরু করেছি। দীপাবলির আগে প্রচুর মাটির প্রদীপ কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy