Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Anganwadi

অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বেহাল, দাবি ব্যবস্থার

কী অবস্থায় রয়েছে কেন্দ্রগুলি? আসানসোল পুরসভার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের ফতেপুর গ্রাম। গ্রামে ঢোকার মুখে এক হাড় জিরজিরে কাঠামোর ক্লাবঘরে সকালে চলে অঙ্গনওয়াড়ি।

ফতেপুরে। নিজস্ব চিত্র

ফতেপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০২০ ০৪:৫৬
Share: Save:

এক চিলতে স্যাঁতসেঁতে ঘর। দেওয়াল-মেঝের ফাটল দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে পিঁপড়ে, পোকামাকড়। এর মধ্যেই এক কোণে উনুনে ফুটছে খিচুড়ি। আর অন্য দিকে, মেঝেয় চট বিছিয়ে চলছে পড়াশোনা— পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এমনই হাল বলে অভিযোগ পড়ুয়াদের অভিভাবকদের। এ বার এই কেন্দ্রগুলির খোলনলচে বদলানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন। সে জন্য প্রয়োজনীয় অর্থও বরাদ্দ করেছে রাজ্য সরকার।

কী অবস্থায় রয়েছে কেন্দ্রগুলি? আসানসোল পুরসভার ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের ফতেপুর গ্রাম। গ্রামে ঢোকার মুখে এক হাড় জিরজিরে কাঠামোর ক্লাবঘরে সকালে চলে অঙ্গনওয়াড়ি। রাতে সেখানেই বসে ক্লাবের আড্ডা। স্থানীয় সূত্রে জানা গেল, ঘরের ছাদ চুঁইয়ে বৃষ্টির জল পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যে পোশাক ভিজে যায় পড়ুয়া ও কেন্দ্রের কর্মীদের। বারাবনির ইটাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বিলা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। থকথকে কাদা পেরিয়ে ঢুকতে হয় সেখানে। দেখা গেল, ছোট্ট ঘরে এক সঙ্গেই চলছে পড়াশোনা, রান্না। গ্রামের এক জন ঘরটি তৈরি করে দিয়েছিলেন। একই হাল সালানপুর ব্লকের উত্তররামপুর জিৎপুর পঞ্চায়েতের রামপুর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটিরও। এই কেন্দ্রটির সামনের রাস্তা দিয়ে দিনভর ছোটে পাথরবোঝাই ট্রাক। দূষণের মধ্যেই চলে পড়াশোনা!

ফতেপুরের সুপ্রকাশ মাজি, বারাবনির বিপত্তারণ বাউড়িদের দাবি, ‘‘এই কেন্দ্রগুলিতে ছেলেমেয়েদের পাঠিয়ে অভিভাবকেরা চিন্তায় থাকেন। কিন্তু সেখানে না পাঠিয়ে উপায়ও নেই। কারণ, প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অন্যতম ভরসা এগুলি। দ্রুত সরকারের কেন্দ্রের পরিকাঠামোর উন্নতি করা দরকার।’’ একই দাবি জানিয়েছে বিরোধী দলগুলিও। বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্ণণ ঘোড়ুই, সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরীদের দাবি, ‘‘ব্লক স্তরে ‘মনিটরিং কমিটি’ তৈরি করে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামো উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে।’’

যদিও অতিরিক্ত জেলাশাসক খুরশিদ আলি কাদরি বলেন, ‘‘অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির খোলনলচে বদলে ফেলা হবে। এ জন্য সরকার এক কোটি ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। দুর্গাপুর ও আসানসোল মহকুমার জন্য যথাক্রমে ৮৮ লক্ষ ও ৪১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।’’ প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, জেলায় এ পর্যন্ত ২,৬০০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। আরও প্রায় ১২৮টি কেন্দ্র তৈরি করা হবে। এখন জেলায় প্রায় ৪০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের উন্নয়ন ঘটিয়ে ‘শিশু আলয়’ তৈরি করা হয়েছে। জেলার প্রতিটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকেই ‘শিশু আলয়’-এর পর্যায়ে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। এ বিষয়ে ব্লক প্রশাসন এবং চাইল্ড ডেভেলপমেন্ট দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে।

জেলা প্রশাসন জানায়, করোনা-পরিস্থিতিতে প্রায় চার মাস ধরে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিশু ও প্রসূতিরা কেন্দ্রে আসতে পারছেন না। তাদের খোঁজখবর নিতে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সেবিকা ও সহায়িকাদের ওই শিশু ও প্রসূতিদের বাড়ি-বাড়ি গিয়ে খোঁজ খবর করার জন্য সিডিপিও-দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি।

অন্য বিষয়গুলি:

Anganwadi Fatehpur Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy