প্রতীকী চিত্র।
‘প্রেমিকা’কে মেরে ‘আত্মঘাতী’ নন্দীগ্রামের যুবক অমিত শীটের দেহ শনাক্ত করতে দুর্গাপুরে এলেন না তাঁর মা।
নন্দীগ্রাম থানার সামসাবাদ অঞ্চলের ধান্যখোলায় বাড়ি অমিতের। পরিবারে রয়েছেন মা পূর্ণিমা শীট এবং দিদিমা। দুই দিদির বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ছেলের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে পূর্ণিমাদেবীর আক্ষেপ, ‘‘ও যেমন কর্ম করেছে, তেমনই ফল পেয়েছে! বারবার পড়াশোনা করতে বললেও পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিল। প্রেমের ব্যাপারে বারবার বোঝালেও কারও কথা শোনেনি।’’ পশ্চিম বর্ধমান পুলিশ তাঁকে এ দিন ছেলের মৃতদেহ শনাক্ত করতে ফোন করলেও, ফোনেই তিনি ছেলের মৃতদেহ শনাক্ত করতে পারবেন না বলে জানিয়ে দেন। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, ‘‘দেহটি আসানসোল জেলা হাসপাতালের মর্গে সংরক্ষিত রয়েছে।’’ কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর দিন-সহ পনেরো দিন দেহ মর্গে রাখা থাকে। এই সময়ের মধ্যে কেউ শনাক্ত করতে না এলে, নিয়ম মেনে দেহ সৎকার করা হবে।
পুলিশ সূত্রের খবর, অমিত শ্রমিকের কাজ করতেন। দুর্গাপুরে কাজ করার সময় ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় নিউ টাউনশিপ থানার গণতন্ত্র কলোনির বাসিন্দা, দশম শ্রেণির ছাত্রী মিতা কুণ্ডুর সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। তিনি পূর্ণিমাদেবীকে নিয়ে মিতাদের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু মিতাদের পরিবার তাতে রাজি হয়নি। প্রাথমিক ভাবে ওই ঘটনার পরেও মিতা-অমিতের সম্পর্কে ছেদ পড়েনি বলে দাবি পুলিশের একটি সূত্রের। তবে এক সময় মিতাও সম্পর্ক রাখতে চাইছিলেন না বলে অমিতকে জানান, এমনই ধারণা পুলিশের। সেই ‘আক্রোশ’ থেকেই বাড়িতে ঢুকে কাস্তের কোপে মিতাকে খুন করে, একই অস্ত্র দিয়ে নিজের পেটে ও গলায় কোপ মেরে আত্মঘাতী হন অমিত, প্রাথমিক ভাবে তেমনই মনে করছে পুলিশ। তবে ডিসি (পূর্ব) বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে দু’টি মৃত্যু কী ভাবে ঘটেছে, কারণ কী, তা স্পষ্ট হবে।’’
ঘটনার পরে, ২৪ ঘণ্টারও বেশি কাটলেও দুর্গাপুরের নিউ টাউনশিপ এলাকায় আতঙ্কের রেশ কাটেনি। স্থানীয় বাসিন্দা কাকলি মণ্ডল, জবা চক্রবর্তীরা বলেন, ‘‘এ ভাবে পাড়ার মেয়েকে মেরে দেবে বুঝতে পারিনি। খুবই আতঙ্কে রয়েছি। শুধু মেয়েটার মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে।’’ হতচকিত নন্দীগ্রামে পূর্ণিমাদেবীর পড়শিরাও। তাঁদের কথায়, ‘‘অমিত এ রকম একটা কাজ করবে, স্বপ্নেও ভাবিনি। সব শুনে অবাকই লাগছে আমাদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy