গাড়ুই পরিদর্শন। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও নদীর গতিপথ আটকে হিউমপাইপ বসিয়ে অস্থায়ী রাস্তা বানানো হয়েছে। কোথাও নদীবক্ষেই অবৈধ নির্মাণ তোলা হয়েছে। কোথাও নিয়মিত আবর্জনা ফেলায় পলির পুরু আস্তরণ পড়েছে— শুক্রবার আসানসোলের গাড়ুই নদী পরিদর্শনে গিয়ে এ সবই দেখলেন শহরের নতুন মেয়র বিধান উপাধ্যায়। সঙ্গে তাঁর আক্ষেপ, “দিনেদুপুরে পুরো নদীটাই চুরি হয়ে গিয়েছে!”— তবে সে ‘চুরি’ করল কারা, তা নিয়ে শহরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।
ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক, ওয়াসিমুল হক এবং পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার, রাজ্য সেচ দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে নদী পরিদর্শনে যান বিধান। দলটি প্রথমেই দেখে, ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সৃষ্টিনগরে নদীর গতিপথ আটকে হিউমপাইপ বসিয়ে রাস্তা বানানো হয়েছে। নদীর একাংশে মাটি ভরাট করে নির্মাণ তোলা হয়েছে। সঙ্গে থাকা সেচ দফতর ও পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের ওই এলাকায় নদীর কত অংশ দখল করে এমন বেনিয়ম হয়েছে তার সম্পূর্ণ বিবরণ তৈরির নির্দেশ দেন মেয়র। ওই ওয়ার্ডেরই করুণাময়ী এলাকায় গেলে, এলাকাবাসীর অভিযোগ পেয়ে নদীবক্ষ ‘দখল’ করে চলা বহুতল নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন বিধান।
ঘটনাচক্রে, গত বছর সেপ্টেম্বরে গাড়ুইয়ের জলে ভাসে রেলপাড়ের ২৪, ২৫, ২৬, ২৭, ২৮, ২৯,৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু এলাকা। এ দিন মেয়র-সহ অন্যরা ২৪, ২৫ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে গেলেও, কেন ২৬ থেকে ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে যাননি, সে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। ঘটনাচক্রে, ২৫ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস এবং ২৭ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি কাউন্সিলর রয়েছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে গেলেও, সেখানকার দলীয় কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি মেয়র। পাশাপাশি, বিরোধীদের জেতা ২৭, ২৮ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডেই যাননি তিনি। এ নিয়ে, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মুস্তাফা, ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম সরওয়ার বলেন, “বিধান উপাধ্যায়কে মনে রাখতে হবে, উনি গোটা শহরের মেয়র। প্রথম থেকেই উনি যদি বিরোধী কাউন্সিলরদের বাদ দেন, তা হলে, শহরের উন্নয়নই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” এ দিকে, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর চৈতালি তিওয়ারি ও ২৯ নম্বরের গৌরব গুপ্তরা বলেন, “মেয়র আসুন বা না আসুন আমাদের ওয়ার্ডে, গাড়ুই সংস্কারের জন্য আমরা দাবি জানিয়েই যাব।”
পাশাপাশি, বিধানের ‘নদী চুরি’র মন্তব্য নিয়েও শুরু হয়ে তরজা। বিধান বলেন, “এ বিষয়ে আগে যিনি মেয়র ছিলেন, তিনি ভাল বলতে পারবেন।” এর আগে শহরের মেয়র ছিলেন বর্তমানে বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি বলেন, “বহু বার গাড়ুই নদী সংস্কারের চেষ্টা করলেও, তৃণমূলের বড় নেতাদের বাধায় তা করতে পারিনি। নতুন মেয়রও এ কাজ কতটা করতে পারবেন সন্দেহ আছে।” যদিও গত পুর-বোর্ডের মেয়র পারিষদ তথা এ বারের ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক বলেন, “ভিত্তিহীন কথাবার্তা। উন্নয়নের স্বার্থে কোনও দিন আমাদের দল বাধা হয়ে দাঁড়ায় না।” বিধানও বলেন, “নদী দখল করে অবৈধ নির্মাণ তোলা হয়েছে। এটা এক-দু’দিনের কাজ নয়।” পাশাপাশি, বিরোধীদের জেতা ওয়ার্ডগুলিতে না যাওযার প্রসঙ্গে বলেন, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। এলাকা ধরে-ধরে কাজ করা হবে। একটি বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হবে। প্রয়োজন মতো সরকারের কাছে অর্থ সাহায্য চাওয়া হবে। সেচ দফতরকে সঙ্গে নিয়ে কাজটি হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy