এই ছবি ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূল কার্যালয় থেকে টিকার কুপন দেওয়া হচ্ছে, ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ছড়িয়ে পড়া ছবি থেকে মঙ্গলবার এই অভিযোগ উঠেছিল মেমারিতে। তার পরে ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) তৃণমূল কার্যালয় থেকে ‘দুয়ারে রেশন’ পাইলট প্রকল্পের সামগ্রী দেওয়ার অভিযোগ উঠল মেমারি শহরেই।
ওই ছবিতে দেখা গিয়েছে, মেমারির ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল নেতা স্নেহাশিস ঘোষদস্তিদার উপভোক্তার হাতে খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছেন। তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সংশ্লিষ্ট রেশন ডিলার প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছে। ওই রেশন ডিলারের দাবি, ‘‘ঘটনার সময়ে আমি সেখানে ছিলাম না। তাই কী হয়েছে, বলতে পারব না। যতটুকু জানি, আমার কর্মীরাই খাদ্যসামগ্রী বিলি করেছেন। ওয়ার্ড অফিসের বাইরে থেকে খাদ্যসামগ্রী বিলি করা হয়েছে।’’ তৃণমূল নেতা স্নেহাশিসের দাবি, “রেশন ডিলারের কর্মী চা খেতে গিয়েছিলেন। উপভোক্তারা তাড়া দিচ্ছিলেন দেখে আমি সহায়তা করেছি। ওয়ার্ড অফিসের বাইরে থেকেই রেশনের জিনিস বিলি করা হচ্ছিল।’’
বিরোধীদের দাবি, স্নেহাশিসই ওই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘পোস্ট’ করেন মঙ্গলবার। সেখানে তিনি লেখেন, ‘দুয়ারে রেশন ১০ নম্বর ওয়ার্ড অফিসে’। মেমারি শহরের পীরপাড়ায় রয়েছে ওই ওয়ার্ড কার্যালয়টি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কার্যালয়ের সামনের বারান্দা থেকে ওই নেতা এক উপভোক্তার ব্যাগে খাদ্যসামগ্রী দিচ্ছেন। পিছনে তৃণমূলের প্রতীক ও মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখা যাচ্ছে। এ নিয়ে হইচই হতেই বুধবার দুপুরে ‘পোস্ট’টি মুছে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে তার আগেই ছবিটি পৌঁছে যায় জেলা খাদ্য দফতর থেকে জেলা প্রশাসনের কাছে।
খাদ্য দফতরের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে তবেই এই প্রকল্পে অঙ্গনওয়াড়ি বা স্কুলের বারান্দা ব্যবহার করার বিষয়ে রেশন ডিলারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিলারদের সঙ্গে বৈঠকে সে কথা জানানোর পাশাপাশি, কোনও রাজনৈতিক নেতাকে হস্তক্ষেপ করতে দেওয়ার বিষয়ে নিষেধও করা হয়েছে। তার পরেও কেন এ রকম ছবি ছড়িয়ে পড়ল, খাদ্য দফতর সংশ্লিষ্ট রেশন ডিলারের কাছে সে ব্যাখা চেয়েছে। দফতরের মেমারির পরিদর্শক কমল সরকার বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনও বিষয়টি জেনেছে। ওই রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ খাদ্য নিয়ামক (পূর্ব বর্ধমান) আবির বালি বলেন, ‘‘আমরা গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছি।’’
উপভোক্তাদের একাংশের দাবি, ‘দুয়ারে রেশন’ শুরু হওয়ার সময় থেকে শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের ওই নেতা ওয়ার্ড অফিসে দাঁড়িয়ে ‘তত্ত্বাবধান’ করছিলেন। মাঝেমধ্যে হাতে সামগ্রীও তুলে দিচ্ছিলেন। সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য, মেমারির বাসিন্দা সনৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘সব সরকারি প্রকল্পই তৃণমূলের নেতারা নিজেদের সম্পত্তি বলে মনে করছেন। সে জন্যই বারবার বেআইনি ঘটনা ঘটছে।’’ বিজেপির জেলা (বর্ধমান সদর) সাধারণ সম্পাদক সুনীল গুপ্তের অভিযোগ, “অনেক উপভোক্তা উপযুক্ত ভাবে সামগ্রী পাবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। এটাও এক ধরনের দুর্নীতি।’’
স্নেহাশিসের দাদা তথা মেমারি শহর তৃণমূলের নেতা আশিস ঘোষদস্তিদার বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তাই কোনও মন্তব্য করতে পারব না।’’ দলের মেমারি শহর সভাপতি স্বপন ঘোষালের অবশ্য দাবি, ‘‘হঠাৎ বৃষ্টি আসায় রেশন ডিলারের লোকজন ওয়ার্ড অফিসের বারান্দা ব্যবহার করতে বাধ্য হয়েছে বলে শুনেছি। কিন্তু নেতার উপভোক্তাদের সামগ্রী তুলে দেওয়া ঠিক হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy