Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

ফের ঝড়-বৃষ্টিতে ধাক্কা আনাজ চাষে

চাষিদের দাবি, আমপানের ধাক্কায় আনাজের অজস্র মাচা ভেঙে পড়েছিল।

জল জমে গিয়েছে আনাজের খেতে। পূর্বস্থলীতে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

জল জমে গিয়েছে আনাজের খেতে। পূর্বস্থলীতে। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০২০ ০০:৪৮
Share: Save:

ঘূর্ণিঝড় আমপানের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে ফের ঝড়-বৃষ্টি। তার জেরে আনাজ চাষে বিপর্যয় নেমে এসেছে বলে অভিযোগ চাষিদের। বাজারেও আনাজের জোগান কমে যাওয়ায় দামে প্রভাব পড়ছে বলে দাবি করেন ব্যবসায়ীরা। আনাজের পাশাপাশি, তিল ও পাটের মতো ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমপানের জেরে জেলায় ক্ষতি হয়েছিল প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমির আনাজের। বুধবার ঝড়-বৃষ্টির পরে, ক্ষতির পরিমাণ আরও সাত হাজার হেক্টর বাড়তে পারে।’’

পূর্ব বর্ধমানে সবচেয়ে বেশি আনাজ চাষ হয় কালনা মহকুমায়। কালেখাঁতলা, পারুলিয়া, সমুদ্রগড়, ধাত্রীগ্রামের মতো পাইকারি বাজারে ফসল আড়তদারদের মাধ্যমে কিনে ব্যবসায়ীরা রাজ্যের নানা বাজারে সরবরাহ করেন। প্রতিদিন শ’খানেক ট্রাকে আনাজ নিয়ে যাওয়া হয় এই সব এলাকা থেকে। চাষিদের দাবি, আমপানের ধাক্কায় আনাজের অজস্র মাচা ভেঙে পড়েছিল। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে প্রচুর আনাজের গাছ ও চারা। নিচু জমিগুলিতে জল জমে থাকায় গোড়া পচা রোগ দেখা দেয়।

পূর্বস্থলীর আনাজ চাষি ফজর শেখ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘আমপানে ভেঙে যাওয়া পটলের মাচা কিছুটা মেরামত করে গাছ বাঁচানোর চেষ্টা চালাচ্ছিলাম। বুধবার সন্ধ্যা থেকে ঝড়-বৃষ্টি আবার সব তছনছ করে দিয়েছে।’’ আর এক আনাজ চাষি গোপাল সর্দারের কথায়, ‘‘জমিতে জল জমে গেলে, আনাজের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়। বুধবার ঝড়-বৃষ্টির পরে জমি থেকে ঝিঙে, উচ্ছে আর কিছুই পাওয়ার আশা দেখছি না।’’

কালনা মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা থেকে মন্তেশ্বর ব্লকে বৃষ্টি হয়েছে প্রায় ৯৬.২ মিলিমিটার। পূর্বস্থলী ১ ব্লকে সেই পরিমাণ ৪২.৮ মিলিমিটার। মহকুমা কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত ১,৮৮৪ হেক্টর জমির আনাজের ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ১২ হাজার চাষির ১৮,০৭৬ টন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক হিসেবে যা প্রায় ২৪ কোটি টাকার ক্ষতি। মহকুমা কৃষি আধিকারিক আশিস বারুই জানান, পরপর দুর্যোগের ধাক্কায় তিল চাষেও ক্ষতি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে, দামও চড়ছে আনাজের। এ দিন নানা বাজারে কেজি প্রতি পটল ৩৫-৪০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ২০-২৫ টাকা, উচ্ছে ৪০ টাকা, বেগুন ৩০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, টোম্যাটো ৮০ টাকা, লঙ্কা ৩০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গিয়েছে। কালনার চকবাজারের আনাজ বিক্রেতা ধ্রুব দে দাবি করেন, ‘‘চাহিদার তুলনায় আনাজের জোগান প্রতিদিনই কমছে। ফলে, দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’

বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক তথা আনাজ গবেষক তপনকুমার মাইতির পরামর্শ, ‘‘দুর্যোগে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে হতাশ না হয়ে তাঁরা শাক জাতীয় ফসল চাষ করলে, অল্প সময়ে দ্রুত কিছু উপার্জন করতে পারবেন। নেমে পড়তে হবে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষেও।’’ তাঁর মতে, চাষিদের মধ্যে আনাজের বীজ বিলি করতে এগিয়ে আসা দরকার নানা সংস্থার। তাতে বাড়ি ও আশপাশে আনাজ চাষ করেও কিছু উৎপাদন করতে পারবেন অনেকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Cyclone Amphan Cyclone
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy