Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Bardhaman

তরুণী খুনের পরে রাস্তায় জ্বলল আলো

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারেই নান্দুর গ্রাম। জাতীয় সড়ক ছ’লেন হয়ে যাওয়ায় ওই রাস্তা আরও আলো ঝলমল হয়েছে। কিন্তু গ্রামের রাস্তা ছিল তিমিরেই।

নান্দুর ঝাপানতলায় লাগানে হচ্ছে পথবাতি। নিজস্ব চিত্র

নান্দুর ঝাপানতলায় লাগানে হচ্ছে পথবাতি। নিজস্ব চিত্র

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০২৪ ০৯:২২
Share: Save:

দীর্ঘ দিন ধরে রাস্তার আলোর দাবি করছিলেন বাসিন্দারা। তরুণী খুনের পরে অবশেষে আলো জ্বলল বর্ধমানের নান্দুরে ঝাপানতলার রাস্তায়। বর্ধমান ২ পঞ্চায়েত সমিতিও বৈকুন্ঠপুর ২ পঞ্চায়েতের ওই গ্রামে উঁচু বাতিস্তম্ভে আলো লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গ্রামবাসীর দাবি, সাপখোপ থেকে মানুষ, সব বিপদ থেকে বাঁচতেই আলো লাগানোর দাবি করা হয়েছিল। সেই আলো এল, কিন্তু মেয়েটার জীবনের বিনিময়ে। পঞ্চায়েত প্রধান মানুশ্রী মণ্ডলের দাবি, “আতঙ্ক কাটাতে ঘটনাস্থল ছাড়াও বেশ কয়েকটি জায়গায় আপাতত অস্থায়ী ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারেই নান্দুর গ্রাম। জাতীয় সড়ক ছ’লেন হয়ে যাওয়ায় ওই রাস্তা আরও আলো ঝলমল হয়েছে। কিন্তু গ্রামের রাস্তা ছিল তিমিরেই। এলাকাবাসী একজোট হয়ে পঞ্চায়েতের কাছে রাস্তার বিদ্যুতের খুঁটিতে আলো লাগানোর দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি। অবশেষে যুবতী খুনের পরে পুলিশ গ্রামের রাস্তায় পঞ্চায়েতকে আলোর ব্যবস্থা করতে বলে। তার পরের দিন থেকেই আলো লাগানোর কাজে হাত দেয় পঞ্চায়েত।

১৪ অগস্ট বাড়ির পিছনে খেতজমিতে গলার নলিকাটা দেহ মেলে প্রিয়াঙ্কা হাঁসদার। এখনও পর্যন্ত আততায়ীর নাগাল পায়নি পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গ্রামে আতঙ্ক রয়েছে। আততায়ী গ্রেফতার না হলে আতঙ্ক কাটতে সময় লাগবে। পুলিশের দাবি, সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা, তার সম্বন্ধে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়াটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু সেই মাহেন্দ্রক্ষণ কখন হয়, সেটা জানা নেই। গ্রামের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে পঞ্চায়েতকে আলো লাগাতে বলে।

এখনও খুনের জায়গাটা পুলিশ ঘিরে রেখেছে। সেখানেও আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, ঘটনার দিনই পুলিশের কর্তারা গিয়ে ঘটনাস্থল ও ঝাপানতলার রাস্তায় আলোর ব্যবস্থা করার জন্য পঞ্চায়েতকে বলেন। পরের দিনই, প্রিয়াঙ্কার বাড়ির সামনে আধুনিক এলইডি আলো লাগানো হয়। গ্রাম জুড়েই কয়েকটি বড় এলএইডি আলো লাগাচ্ছে পঞ্চায়েত।

বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, সম্প্রতি বিদ্যুতের তার বদলানো হয়ছে। সেই সময়েই পঞ্চায়েতের কাছে কয়েকটি জায়গায় আলো লাগানোর দাবি করা হয়। ঝাপানতলায় উচ্চ বাতিস্তম্ভ দেওয়ারও দাবি জানানো হয়। কিন্তু আঁধার কাটেনি। গ্রামের বাসিন্দা লক্ষ্মী হাঁসদা, সীমান্ত মুর্মুরা বলেন, “গ্রামের পাশ দিয়ে জাতীয় সড়ক গিয়েছে। সেই রাস্তা আলো ঝলমল করে। অথচ গ্রামের রাস্তা অন্ধকার। আমরা বিপদের সম্ভাবনার কথা ভেবেই আলো লাগানোর দাবি জানিয়েছিলাম। সেই আলো এল, তবে গ্রামের এক মেয়ের জীবনের বিনিময়ে।” অনিল মুদি, শীলা হাঁসদারাও বলেন, ‘‘রাস্তায় আলো থাকলে অপরাধ করার আগে দু’বার ভাবত দুষ্কৃতীরা। সামনেই ঝাপান উৎসব। তার আগে উচ্চ বাতিস্তম্ভের দাবি জানানো হয়েছে।”

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা যায়, ঝাপানতলায় ১০-১২টি বিদ্যুতের খুঁটি ছাড়াও জাতীয় সড়ক থেকে গ্রাম ঢোকার রাস্তাতেও আলোর ব্যবস্থা করা হবে। উপ-প্রধান উত্তম ঘোষ বলেন, “গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কিত রয়েছেন। পুলিশ আলো লাগানোর জন্য বলেছে। সে কারণেই তড়িঘড়ি করে বিদ্যুতের খুঁটিতে আলো লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” বৈকুণ্ঠপুর ২ অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি অনুপম ঘোষ বলেন, “উচ্চ বাতিস্তম্ভ লাগানোর সিদ্ধান্ত বর্ধমান ২ পঞ্চায়েত সমিতি নিয়েছে। ঝাপান উৎসবের আগেই লাগাতে বলা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman street light
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE