রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ফাইল চিত্র।
ভোটের ফলে জেলায় অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে দল। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিভিন্ন ব্লকে ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ মাথাচাড়া দিচ্ছে। পরিস্থিতি এমনই, কয়েকটি ব্লক কমিটি, অঞ্চল কমিটি গঠন করতে পারেনি তৃণমূল। নেতাদের অনেকের মধ্যে প্রকাশ্যে আকচা-আকচি চলছে। এর মধ্যে, বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (কেষ্ট) হাতে থাকা ‘সন্ত্রাসদীর্ণ’ আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রামের দায়িত্বও এখন পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির হাতে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ফের পূর্ব বর্ধমানে দলের সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাতে দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের একাংশের ধারণা, পঞ্চায়েত ভোটের আগে দ্বন্দ্বে রাশ টানাই হবে অরূপের মূল ভাবনার জায়গা।
দল সূত্রে খবর, মার্চের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সরকারি ভাবে জেলার সংগঠন দেখভালের দায়িত্ব নেবেন অরূপ। এর আগে ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটের সময় থেকে এই জেলার পর্যবেক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। তৃণমূল পর্যবেক্ষক পদ তুলে দিলেও, জেলায় নানা সমস্যা মেটাতে দলনেত্রীর নির্দেশে অরূপ এগিয়ে এসেছেন। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের সময়ে বিজেপি প্রচারে ঝড় তুললেও, অরূপের নেতৃত্বে জেলার ১৬টি আসনেই তৃণমূলের পতাকা উড়েছিল। শুক্রবার বিকেলে কালীঘাটে একটি বৈঠকের পরে নেত্রী অরূপকে ফের পূর্ব বর্ধমানে সংগঠন দেখতে বলেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নেত্রীর এই সিদ্ধান্তে ভাল হয়েছে।’’
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, সাগরদিঘি উপনির্বাচনে কংগ্রেসের জয়ের পরে সংখ্যালঘু-প্রধান এলাকাতে তৃণমূলের ভোট হারানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কিছু এলাকায় সিপিএমের প্রভাব বাড়ছে বলেও খবর। এর সঙ্গে রয়েছে লাগাতার গোষ্ঠী-কোন্দল। যার জেরে মেমারি ১, মন্তেশ্বর, আউশগ্রাম ২-এর মতো কয়েকটি ব্লকে কমিটি গঠন করা যায়নি। আবার রায়না ১-সহ বেশ কয়েকটি ব্লকে অঞ্চল কমিটিও গঠন হয়নি। জেলা তৃণমূলের বর্ধিত বৈঠকে বিধায়ক ও ব্লক সভাপতির মধ্যে বাদানুবাদ প্রকাশ্যে এসেছে। রাজ্যের মন্ত্রী তথা মন্তেশ্বরের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী সরাসরি দলের নেতার বিরুদ্ধে নিয়মিত তোপ দাগছেন। মেমারি ১ ব্লক সভাপতি নিত্যানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এলাকার বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্যের গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বও সামনে এসেছে।
এর আগের দফায় দায়িত্বে থাকাকালীন জেলার তিনটি বিধানসভা এলাকা— আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট ও কেতুগ্রাম দেখতে হয়নি অরূপকে। সেখানে ছিলেন অনুব্রত। গরু পাচার মামলায় তিনি গ্রেফতার হওয়ার পরে কলকাতায় এক বৈঠকে ওই তিনটি বিধানসভা দেখার দায়িত্ব পান দলের জেলা সভাপতি। প্রায় প্রতিটি ভোটেই ওই এলাকাগুলিতে অশান্তির অভিযোগ ওঠে, দলের কাছে যা ‘মাথাব্যথা’। দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে অশান্ত এলাকার রাজনীতি কী ভাবে সামাল দেন অরূপ, সেটাই এখন প্রশ্ন।
তৃণমূলের এক প্রবীণ নেতার দাবি, “পূর্ব বর্ধমানের সংগঠন যথেষ্টই চেনেন অরূপ। দলের অঞ্চলের নেতা থেকে প্রশাসনের নানা স্তরে যোগাযোগ রয়েছে। তাই জেলা স্তরে যে সব সমস্যা আটকে রয়েছে, তা তাঁর হস্তক্ষেপে কেটে যাবে বলেই আশা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy