তিন বছরেও খোলেনি জিউধারা এলাকার এই হিমঘর। নিজস্ব চিত্র।
চাষিদের সুবিধা দিতে তৈরি হয়েছিল সব্জি হিমঘর। বছর তিনেক আগে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় এসে উদ্বোধনও করেছিলেন। তারপরেও অবশ্য তালা খোলেনি কালনার জিউধরা এলাকায় নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির ওই হিমঘরের। উপরি পাওনা পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যাওয়া নানা যন্ত্রাংশ, কাঁড়ি কাঁড়ি বিদ্যুতের বিল।
শহরের গা ঘেঁষা কল্যাণপুর পঞ্চায়েতের জিউধরা এলাকার ওই নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি চত্বরে পাইকারি বাজার বসে। এলাকার চাষিরা তাঁদের উৎপাদিত পণ্য গরুর গাড়ি, ভ্যানে মাঠ থেকে সরাসরি সেখানে আনেন। চাষিদের দাবি, ফসলের উৎপাদন ভাল হলে অনেক সময়েই লাভজনক দর মেলে না। হিমঘর না থাকায় ঢ্যাঁড়শ, টম্যাটো, ফুলকপি, বাঁধাকপির মতো সব্জি ফেলে দিতে হয় ডাস্টবিনে। এই সমস্যা মেটাতেই ২০১০ সালে রাজ্যের বেশ কয়েকটি নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির কমপ্লেক্সে রাজ্য বিপণন পর্ষদ হিমঘর তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেয়। তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মহাকরণ থেকে প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। কালনার প্রকল্পটির জন্য বরাদ্দ হয় ৯৭ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫৭৮ টাকা। ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি কলকাতার একটি ঠিকাদার সংস্থা প্রকল্পটির কাজ শেষ করে। বিদ্যুৎ সংযোগে কিছুটা গড়িমসি হওয়ার পরে ২০১৩ সালে বর্ধমান থেকে প্রকল্পটির উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিমঘরের দরজা খুলে কিভাবে, কোন জায়গায় সব্জি রাখার ব্যবস্থা হয়েছে তা দেখানোও হয় সাধারণ মানুষকে। তারপরে যে তালা ঝোলে সে তালা খোলেনি আজও।
নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতি মাসে হিমঘরের জন্য মোটা অঙ্কের বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। গিয়েও দেখা যায়, শীতাতপনিয়ন্ত্রক যন্ত্র-সহ আরও বেশ কিছু যন্ত্র আগাছায় ঢেকেছে। চাষিদের ক্ষোভ, চালু না হলে হিমঘর তৈরি থাকা, না থাকা সমান। বেশি উৎপাদন হলে সব্জি নষ্ট হচ্ছেই। ওই বাজারে পণ্য বিক্রি করতে আসা সুকুমার ঘোষ বলেন, ‘‘হিমঘর আছে অথচ ব্যবহার করা যাচ্ছে না। চাষিদের সমস্যা মিটল কই?’’ আর এক চাষি গোপাল ক্ষেত্রপাল জানান, বহু সময় জলের দরে ফড়েদের সব্জি বিক্রি করতে হয়। হিমঘর থাকলে কিছুটা সামলানো যেত। হিমঘর খুলবে কি না, সে ব্যাপারে প্রশাসন কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারছে না বলেও তাঁর অভিযোগ।
নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির অবশ্য দাবি, হুগলি, বর্ধমান জেলা-সহ বেশ কয়েকটি জেলায় হিমঘর তৈরি হলেও পরিচালনার ব্যাপারে কোনও নীতি ঠিক না হওয়ায় সেগুলির দরজা খোলেনি। সম্প্রতি কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্তকে হাতের কাছে পেয়ে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানান চাষিরা। তপনবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি শুনেছি। চেষ্টা করছি সব্জি হিমঘরটি খোলার।’’ এত দিন কেন খোলা হয়নি, তা খতিয়ে দেখারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy