শুক্রবার থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লা উত্তোলক সংস্থা বিসিসিএল-এর এই খনিতে ফের শুরু হল কাজ। ছবি: পাপন চৌধুরী
শেষমেশ অচলাবস্থা কাটল বিসিসিএল-এর দামাগড়িয়া খনিতে। টানা ২০ দিন বন্ধ ছিল কয়লা উত্তোলন। ২১ দিনের মাথায়, শুক্রবার সকাল থেকে ফের কয়লা তোলার কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন খনি কর্তৃপক্ষ। তবে দীর্ঘদিন কাজ না হওয়ায় যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তা কী করে পূরণ করা যাবে, সেটাই এখন সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। এ দিকে, সমস্যা মেটায় খুশি খনিকর্মীরাও।
টানা অচলাবস্থার জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধীরে-ধীরে কয়লা কাটার যন্ত্রাংশ খনি থেকে সরানোর কাজ শুরু করেছিলেন কর্তৃপক্ষ। ওই দিনই জেলা প্রশাসনের উপস্থিতিতে বিক্ষোভকারী ও খনি কর্তৃপক্ষের বৈঠক হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে যায়। ফলে, আধিকারিকদের একাংশ কার্যত ধরেই নিয়েছিলেন শুক্রবারও কাজ শুরু হবে না। কিন্তু ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই ছবিটা বদলাতে শুরু করে বলে দাবি সূত্রের। পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের তরফে শুক্রবার থেকে কাজ শুরু করার জন্য খনি কর্তৃপক্ষের কাছে বার্তা পাঠানো হয়। এ দিন খনির ডেপুটি পার্সোনেল ম্যানেজার সুমন্ত রায় বলেন, ‘‘আপাতত কোনও বাধা পেতে হয়নি। তবে ২০ দিন কয়লা উত্তোলন বন্ধ ছিল। প্রায় ৩০ কোটি ক্ষতি হয়েছে। এখন সে ক্ষতি কী ভাবে পূরণ করা যাবে,
সেটাই চ্যালেঞ্জ।’’
গত ২২মে দুপুরে দামাগড়িয়া খোলামুখ খনি লাগোয়া মুচিপাড়ায় ধসের জেরে প্রায় ৩০টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে এলাকাবাসীর একাংশ কয়লা উত্তোলন বন্ধ করে দিয়ে পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। কিন্তু বিসিসিএল জানিয়ে দেয়, ধস কবলিত এলাকাটি কোলিয়ারির নিজস্ব জমি। বাসিন্দারা তা দখল করে বসবাস করছেন। তাই সংস্থার তরফে পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। এই পরিস্থিতিতেই টানা অচলাবস্থা তৈরি হয়।
কী সূত্রে কাটল অচলাবস্থা? জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) বিভু গোয়েলের মন্তব্য, ‘‘পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আলোচনা করেছি। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, কয়েকজনের ‘উস্কানিতেই’ এই আন্দোলন চলছিল বলে জানা যায়। সংশ্লিষ্ট ওই ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে পুলিশ ও প্রশাসনের তরফে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়, এ ভাবে কাজে ‘বাধা দেওয়া হলে’ দ্রুত আইনি পদক্ষেপ করা হবে। এর পরে, শুক্রবার খনির যন্ত্রাংশ নামাতে গিয়ে আর কোনও বাধা আসেনি বলেই জানান খনি কর্তৃপক্ষ। তবে এ দিন নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক স্থানীয় বাসিন্দা দাবি করেন, ‘‘এক মাসের মধ্যে পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ না পেলে, ফের বিক্ষোভ হবে।’’
খনিতে কাজ শুরু হওয়ায় খুশি শ্রমিকেরা। খনি শ্রমিক শুভাশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সমস্যার সমাধান হওয়ায় ভাল লাগছে। কারণ, কাজ শুরু না হলে, কর্তৃপক্ষ খনি বন্ধের তোড়জোড় করছিলেন। সে ক্ষেত্রে শ্রমিকদের অন্য খনিতে বদলি করে দেওয়া হত। তাঁরা সমস্যায় পড়তেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy