Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Chandrayan 3 Moon Landing

‘প্রজ্ঞান’-বার্তা বিশ্লেষণের দলে ভাতারের ভূমিপুত্রও

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজে ভূগোল বিভাগের পাশাপাশি, ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং’, ইসরোর নোডাল সেন্টারের ইন-চার্জ হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন অভিষেক।

তথ্য বিশ্লেষকদের দলে থাকা অভিষেক সাহা। নিজস্ব চিত্র

তথ্য বিশ্লেষকদের দলে থাকা অভিষেক সাহা। নিজস্ব চিত্র Stock Photographer

সুপ্রকাশ চৌধুরী
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৩ ০৯:১১
Share: Save:

চাঁদের মাটিতে পা রেখেছে ভারতের চন্দ্রযান। সেই সাফল্যে মেতেছে সারা দেশ। তবে তারই সঙ্গে এখন বিজ্ঞানীদের চোখ আগামী কয়েক দিনের উপরে। রোভার ‘প্রজ্ঞান’-এর সাহায্যে চাঁদ থেকে কী ধরনের তথ্য মেলে, সে দিকে নজর রয়েছে তাঁদের। সে সব তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে চাঁদ সম্পর্কে আরও অবগত হওয়ার অপেক্ষায় আছেন তাঁরা। আর সেই বিশ্লেষকদের দলে থাকছেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের এক ভূমিপুত্রও। বর্তমানে বাঁকুড়ার চাতরা রামাই পণ্ডিত মহাবিদ্যালয়ের ভূগোলের বিভাগীয় প্রধান অভিষেক সাহা জানাচ্ছেন, চাঁদ থেকে আসা ‘কোড’ বিশ্লেষণই এখন তাঁদের লক্ষ্য।

বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজে ভূগোল বিভাগের পাশাপাশি, ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং’, ইসরোর নোডাল সেন্টারের ইন-চার্জ হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন অভিষেক। তিনি জানান, চাঁদের মাটি ও ভূতত্ত্ব বিভাগ বিষয়ে তাঁর দল কাজ করছে। চন্দ্রযান অবতরণেও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন তাঁরা।

অভিষেক জানান, বর্ধমানের ভাতার মাধব পাবলিক হাইস্কুলে পড়াশোনা করেছেন তিনি। পরে মানকর কলেজ থেকে ভূগোলে স্নাতক এবং মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমুদ্রবিজ্ঞানের উপরে গবেষণা করেছেন। উপগ্রহের মাধ্যমে পাঠানো ‘কোড’ বিশ্লেষণের নেশা রয়েছে, জানান তিনি। দীর্ঘদিন ওড়িশা থেকে সুন্দরবনের সমুদ্রের উপরেও কাজ করেছেন। গত বছর তিনেক ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব রিমোট সেন্সিং’-এ কর্মরত।

অভিষেক জানিয়েছেন, গত তিন মাস বাড়ি যাওয়া তো দূর, নাওয়া-খাওয়ারও তেমন সময় পাননি তাঁদের ২০ জনের দলের সদস্যেরা। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের দলের মূল কাজ চাঁদের মাটি ও ভূস্তরগুলি বিশ্লেষণ করে তার মধ্যে থাকা খনিজ ও রাসায়নিক উপাদান শনাক্ত করা, সেগুলির সম্ভাব্য ভান্ডার বা তার পরিমাণ নির্ণয় করা। এর সঙ্গে চাঁদের বিভিন্ন স্তরে জমে থাকা বরফ সম্পর্কে গবেষণাও আমাদের বিষয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘চন্দ্রযানেদু’রকম দু’টি সেন্সর বসানো আছে। একটি খনিজ এবং অপরটি রাসায়নিক উপাদানের অস্তিত্ব নির্ণয় করবে।’’ তিনি জানান, গত কয়েক মাস ধরে তাঁরা এর প্রস্তুতিতেই কাজ করেছেন। আগামী কয়েকটা দিন কাজের চাপ আরও বাড়বে, জানাচ্ছেন তিনি।

চাতরা রামাই পণ্ডিত কলেজের অধ্যক্ষ তারকনাথ রায় বলেন, ‘‘২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল আমাদের কলেজ ইসরোর নোডাল সেন্টার হিসেবে অনুমতি পায়। এখনও পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ২৫০ ছাত্রছাত্রী বিনামূল্যে ইসরোর বিভিন্ন মূল্যবান কোর্সের সহায়তা পাচ্ছেন।’’ অভিষেক জানান, এখান থেকে সরাসরি অনলাইনে ইসরোর বিজ্ঞানীদের মূল্যবান বক্তব্য শুনতে পান পড়ুয়ারা। তার জন্য ছাত্রছাত্রীদের ভূগোল নিয়েই পড়াশোনা করতে হবে এমন কোনও মানে নেই।

পূর্ব বর্ধমানে তাঁর বাড়িতেই রয়েছেন বাবা, মা, ভাই, স্ত্রী ও মেয়ে। বাবা উদয়চাঁদ সাহা, মা চম্পা সাহাদের কথায়, ‘‘ছেলে দেশের বড় সাফল্যের অংশীদার, এটা ভেবে গর্ব হচ্ছে।’’ স্ত্রী সোমা স্বামী সম্পর্কে বলেন, ‘‘তিন মাস ধরে খুব ব্যস্ত ছিল, বাড়িও আসতে পারেনি। লক্ষ্যে অবিচল থাকার জন্যই এই সাফল্য।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bhatar ISRO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy