ক্লাসঘরে। নিজস্ব চিত্র
সম্প্রসারিত হবে খনি। গ্রামের ২১টি পরিবারকে মাস চারেক আগে জমির দাম ও অন্য পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন গ্রাম ফাঁকা। ভেঙে ফেলা হচ্ছে ফাঁকা ঘরবাড়ি। শুধু থেকে গিয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুল। মাটি কাটার ভারী যন্ত্রের শব্দ ও বিস্ফোরণে কেঁপে উঠছে স্কুল ভবন। থেকে থেকে খসে পড়ছে দেওয়ালের পলেস্তরা ও ছাদের চাঙড়। এই চিত্র পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুর ব্লকের শেষ প্রান্তের গ্রাম পাহাড়গোড়ার পাহাড়গোড়া অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলের। বিপজ্জনক অবস্থাতেই ৭৭ জন পড়ুয়াকে নিয়েই চলছে স্কুলটি।
ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের ৫৭ একর জমি খনি সম্প্রসারণের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বাসিন্দাদের গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য ২০১৩ সালে প্রথমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। জমি অধিগ্রহণ পর্ব শেষ হয় ২০১৮ সালে। ইসিএল কর্তৃপক্ষের দাবি, জমির দাম-সহ বাকি পাওনা মিটিয়ে দেওয়ায় গত ১৮ অগস্ট গ্রামের বাসিন্দারা ভিটে ছেড়ে চলে যান। ভেঙে ফেলা হচ্ছে ফাঁকা ঘরবাড়ি। কিন্তু এখনও নতুন ঠিকানা পায়নি ১৯৭১ সালে তৈরি অবৈতনিক প্রাথমিক স্কুলটি।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্কুলে পাহাড়গোড়া, বিনোদকাটা, বড়ধাওড়া, লালবাজার, কুলকানালি-সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের পড়ুয়ারা পড়তে আসে। প্রধান শিক্ষক নিখিলচন্দ্র মাজি জানান, দু’জন শিক্ষক রয়েছেন। সম্প্রতি এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, স্কুলের খুব কাছেই চলছে খনি সম্প্রসারণের কাজ। মাত্র ১০ মিটার দূরেই বিশাল খাদ তৈরি হয়েছে। আলগা হয়ে গিয়েছে স্কুলের চারপাশের মাটি। কাঁধে ব্যাগ নিয়ে স্কুলে ঢুকছে পড়ুয়ারা। স্কুলটি যখন তখন ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রধান শিক্ষক নিখিলবাবু। তিনি বলেন, ‘‘এখানকার পরিস্থিতির কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’’
স্কুলটি কেন নতুন ঠিকানা পায়নি? চিত্তরঞ্জন শিক্ষাচক্রের স্কুল পরিদর্শক প্রসেনজিৎ বারিক বলেন, ‘‘স্কুলটি স্থানান্তরের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট না পেলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।’’
কী ভাবছে ইসিএল? সংস্থার সালানপুর এরিয়ার আধিকারিকেরা জানান, স্কুলের স্থানান্তর থেকে ভবন নির্মাণের যাবতীয় খরচ বহন করবে ইসিএল কর্তৃপক্ষ। পাঁচটি ক্লাসঘর, একটি অফিস ঘর, রান্নাঘর ও শৌচাগার গড়ে দেওয়া হবে। প্রাথমিক খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা। শিক্ষা দফতরের চিহ্নিত করে দেওয়া জমিতে এই ভবন গড়া হবে। ইসিএল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, ভবন তৈরিতে দেরি হলে যদি খরচ বাড়ে, তা-ও দেবে ইসিএল। কিন্তু শিক্ষা দফতরের ‘নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট’ পাওয়াটাই এখন বড় বিষয়।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান আশিস দে বলেন, ‘‘রাজ্য শিক্ষা দফতরের সচিবের কাছে প্রস্তাব গিয়েছে। ‘নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট’ যাতে দ্রুত মেলে সেই চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy