প্রতীকী ছবি।
অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের কালনা ১ ব্লকে সুলতানপুর পঞ্চায়েতের কাশিমপুর গ্রামের এক যুবকের। বৃহস্পতিবার বাড়িরই একটি ঘরে বাপি পোড়েলের (২৭) ঝুলন্ত দেহ মেলে। ওই পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, অন্যের বিঘা দু’য়েক জমি চুক্তিতে নিয়ে আলু চাষ করতে গিয়ে লোকসানের মুখে পড়েছিলেন বাপি। পাওনাদারদের টাকা মেটানো নিয়ে বাড়িতে অশান্তিও হয়। তার জেরেই এই ঘটনা। সুলতানপুর পঞ্চায়েতের কর্তাদের অবশ্য দাবি, চাষের কারণে ওই যুবক আত্মঘাতী হননি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাপি পেশায় খেতমজুর। তাঁর স্ত্রী এবং মা অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। এ বার বিঘা দু’য়েক জমি চুক্তিতে নিয়ে চাষ করেন তিনি। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চাষের খরচ যেমন বেশি হয়, ফলনও কম হয়। এক আত্মীয় সুরজ পাত্র বলেন, ‘‘আলু চাষ করে ওর ঋণ হয়ে গিয়েছিল। বাড়িতে অশান্তি হয়। তার পরেই বাপির ঝুলন্ত দেহ মেলে।’’ পারিবারিক অর্থকষ্ট দেখে গ্রামবাসী চাঁদা তুলে বাপির দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করেন।
কাশিমপুর গ্রামের বাসিন্দা সন্তোষ মহন্ত বলেন, ‘‘আলু চাষ করে এলাকার অনেকেরই লোকসান হয়েছে। বাপির মহাজনের কাছে ঋণ ছিল। সে কারণে পারিবারিক অশান্তিও হয়। মনে হচ্ছে, ওই কারণেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’ মৃত যুবকের শ্বশুর নবকুমার জরেরও দাবি, ‘‘জামাইয়ের ঋণ হয়ে গিয়েছিল জানতে পেরেছিলাম। তবে আমারও অবস্থা ভাল না। তাই সাহায্য করতে পারিনি।’’ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষকবন্ধু প্রকল্পে ওই যুবকের নাম নেই। কিসান ক্রেডিট কার্ডও ছিল না। কত টাকা ঋণ রয়েছে, তা-ও জানাতে পারেননি কেউ।
সুলতানপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রেফাতুল্লা মোল্লার দাবি, ‘‘ওই যুবকের চাষের জমি নেই। মৃত্যুর পরে, আমি নিজে দেহ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি। কয়েকদিন ধরে ওঁর বাড়িতে অশান্তি চলছিল বলে জেনেছি। ওঁর মৃত্যুর সঙ্গে চাষের কোনও সম্পর্ক নেই।’’
বামপন্থী কৃষক সংগঠন ‘কৃষকসভা’র জেলা কমিটির সভাপতি সুকুল শিকদার জানিয়েছেন, কাশিমপুরের ওই যুবকের মৃত্যু কী ভাবে হয়েছে, খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এ বার আলু চাষে জেলার চাষিরা যে ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাতে আত্মহত্যা অস্বাভাবিক নয় বলেও দাবি করেছেন তিনি। জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘কী ভাবে চাষের কারণে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে, খোঁজ নেব। যদি ওঁর নামে এক কাঠা জমিও থাকে, তা হলে পরিবারের সদস্যেরা সরকারি ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy