শোকগ্রস্ত ‘নিহতের’ পরিবার। (ইনসেটে) শেখ আসগর আলি। বুদবুদের মসজিদতলায় সোমবার। নিজস্ব চিত্র
জমি নিয়ে ‘বিবাদ’ ছিলই। সে জমি থেকে দু’টি ইট নেওয়াকে কেন্দ্র করে ‘ঝামেলা’ চরমে ওঠে বলে দাবি। অভিযোগ, তার জেরে শেখ আসগর আলি (৫৫) নামে এক প্রৌঢ়কে পিটিয়ে খুন করেন তাঁর দাদা শওকত আলি-সহ ছ’জন। প্রত্যেককেই গ্রেফতার করেছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বুদবুদ থানা। রবিবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের বুদবুদের মসজিদতলার ঘটনা। অন্য ধৃতেরা হলেন— শওকতের আত্মীয় শেখ নাসিরুদ্দিন, মজিদুল ইসলাম, আরশাদ আলি, শবনম বিবি, লালি বেগম। ধৃতদের সোমবার দুর্গাপুর আদালতে তোলা হলে, শওকত ও নাসিরুদ্দিনকে চার দিন পুলিশ হেফাজত এবং বাকিদের ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আসগরের বুদবুদ বাজারে মাংসের দোকান রয়েছে। মসজিদতলায় তাঁর বাড়ির পিছনের দিকে একটি জায়গা নিয়ে দাদা শওকতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের ‘বিবাদ’ ছিল। ‘নিহতের’ পরিবারের দাবি, ওই জায়গায় একটি গোয়ালঘর বানিয়ে প্রায় চার দশক ধরে গবাদি পশু রাখতেন আসগর। মাস ছয়েক আগে আসগর জানতে পারেন, তাঁর দাদা ওই জায়গাটি জমির মালিকের কাছ থেকে গোপনে কিনে নিয়েছেন। তা নিয়েই দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। বিবাদ মেটাতে সম্প্রতি দাদার বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতে অভিযোগ করেন আসগর।
সমস্যার সমাধানে, সোমবার দু’পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করার কথা ছিল পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের। অভিযোগ, তার আগেই রবিবার রাত ৯টায়, ওই জমিতে থাকা ভাঙা গোয়ালঘরটি থেকে দু’টি ইট নেন আসগর। এর পরেই আসগর এবং শওকতের বচসা বাধে। অভিযোগ, সে সময় শওকত-সহ অন্যরা বেধড়ক মারধর করেন আসগরকে। আসগর জ্ঞান হারান। তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ির লোকজন গলসি ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক আসগরকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের বোন ফিরোজা বিবি ও এক ভাই শরাফত আলি বলেন, “জমির অধিকার এবং এবং ইট নেওয়াকে কেন্দ্র করে যে খুনের ঘটনা ঘটতে পারে, এটা ভাবাই যায় না!” শরাফতই বুদবুদ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে রবিবার রাতেই বাড়ি থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ।
তৃণমূল পরিচালিত বুদবুদ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রুদ্রপ্রসাদ কুন্ডু বলেন, “পঞ্চায়েতকে বিষয়টি জানানো হয়েছিল। বৈঠকও ডাকা হয়। কিন্তু তার আগেই এই ঘটনা ঘটল। পুলিশ ব্যবস্থা নিক।” আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (কাঁকসা) শ্রীমন্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা জমি নিয়ে পারিবারিক বিবাদের ঘটনা। এক জন নিহত হয়েছেন। খুনের অভিযোগে ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।” অভিযুক্তদের বাড়ি তালা বন্ধ। তাঁদের আত্মীয়-স্বজনদের তরফে কোনওপ্রতিক্রিয়া মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy