আগুন ধরানো হয় দুর্ঘটনাগ্রস্ত এই ট্রাক্টরে। ছবি: পাপন চৌধুরী
একরত্তি ছেলে ও ভাইঝিকে নিয়ে মোটরবাইকে বেরিয়েছিলেন যুবক। ফোন আসায় রাস্তার পাশে মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে কথা বলছিলেন তিনি। আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে উল্টো দিক থেকে আসা বালি বোঝাই একটি ট্রাক্টর। সালানপুরের জেমারিতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় শেখ রিয়াজ (৩৪) ও বছর ছয়েকের দুই শিশু শেখ ইউসুফ আমির ও আয়েসা খাতুনের। মৃত্যু হয়েছে ট্রাক্টরটির খালাসি পরিমল সোরেনেরও (৩২)। তাঁর বাড়ি বারাবনির পানুড়িয়ায়।
বুধবার সকালে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে এলাকা। ট্রাক্টরটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, সেটিতে বেআইনি বালি পাচার করা হচ্ছিল। দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও বালি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থার দাবিতে জেমারি লাগোয়া চিত্তরঞ্জন রোড অবরোধ করা হয়। উপযুক্ত ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়ে পুলিশ অবরোধ তোলে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ ছেলে ও ভাইঝিকে মোটরবাইকে টিউশনে নিয়ে যাচ্ছিলেন শেখ রিয়াজ। হরিসাড্ডি গ্রাম লাগোয়া আমঝরিয়া শ্মশানের কাছে তিনি রাস্তার পাশে মোটরবাইক দাঁড় করিয়ে ফোনে কথা বলছিলেন। তখনই দুর্ঘটনাটি ঘটে। বিকট আওয়াজ শুনে আশপাশের মানুষজন ছুটে যান। শেখ রিয়াজ ও দু’টি শিশুকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে তিন জনকেই মৃত ঘোষণা করা হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সালানপুর থানার পুলিশ। দুমড়ে-মুচড়ে পড়ে থাকা ট্রাক্টরের তলা থেকে খালাসির দেহ উদ্ধার করে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। চালক পলাতক।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছনোর পরেই উত্তেজিত হয়ে পড়ে জনতা। তাদের অভিযোগ, ওই ট্রাক্টরে অবৈধ বালি বোঝাই ছিল। ট্রাক্টরটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এক দল বাসিন্দা জেমারি মোড় লাগোয়া চিত্তরঞ্জন রোড অবরোধ শুরু করেন। রাস্তার দু’দিকে যানবাহন দাঁড়িয়ে পড়ে। যানজট হয়। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পরে পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ ওঠে।
এলাকার বাসিন্দা শেখ মইনুদ্দিনের অভিযোগ, প্রতিদিনই এই রাস্তায় প্রচুর অবৈধ বালি বোঝাই ট্রাক্টর যাতায়াত করে। রূপনারায়ণপুর, চিত্তরঞ্জন এলাকায় অজয়ের পাড়ে প্রচুর অবৈধ বালি খাদান গজিয়ে উঠেছে। বালি মাফিয়ারা সেখান থেকে বালি তুলে বিভিন্ন এলাকায় পাচার করছে। বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, বালির ট্রাক্টরগুলি রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময়ে কোনও আইন মানে না। ঊর্ধ্বশ্বাসে দৌড়নোয় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। এ দিন ওই ট্রাক্টরে বেআইনি ভাবে বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কি না তা অবশ্য পুলিশ জানাতে পারেনি। ট্রাক্টরটির নম্বর না মেলায় সেটির মালিকেরও খোঁজ মিলছে না বলে পুলিশ জানিয়েছে। তবে দ্রুত ট্রাক্টর মালিকের খোঁজ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস পুলিশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy