ডেঙ্গিতে মৃতের পরিবার। বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র
জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন বীরভূমের এক যুবক। রবিবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সাক্ষীগোপাল ধীবর (৩৩) নামে ওই যুবক কলকাতায় কাজ করতেন। দুর্গাপুজোর সময়ে বাড়ি ফেরেন। তার পরে জ্বরে আক্রান্ত হন। গত সপ্তাহে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাঁকে। হাসপাতাল সুপার তাপস ঘোষ বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে বীরভূমের এক যুবক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। প্রথম দিকে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছিলেন। পরে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন।’’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই যুবক বীরভূমের লাভপুরের মহুলা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কলকাতার সিআইটি রোডের একটি মিষ্টির দোকানে কাজ করতেন। সেখানেই থাকতেন। এক-দু’মাস অন্তর বাড়ি আসতেন। এ বার পুজোয় অষ্টমীর দিন তিনি বাড়ি ফেরেন। কয়েক দিন পরে প্রথমে তাঁর মুখের ভিতরে ঘা হয়। তার পরে জ্বর আসে। প্রথমে পরিবারের লোকজন তাঁকে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। এর পরে বর্ধমান শহরের খোসবাগানে এক চিকিৎসকের কাছে দেখানোর পরে, রক্তপরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি ডেঙ্গি আক্রান্ত। সম্প্রতি তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই রবিবার সকালে তিনি মারা যান। হাসপাতালের মৃত্যুর শংসাপত্রেও মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির কথা লেখা রয়েছে বলে পরিবার জানিয়েছে।
রবিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ ক্যাম্পের সামনে সাক্ষীগোপালের পরিজন কান্নায় ভেঙে পড়েন। মৃতের মামা মাধব ধীবর বলেন, ‘‘কলকাতায় কাজ করত, সেখানেই মালিকের বাড়িতে থাকত। কলকাতায় অনেকে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। আমাদের মনে হচ্ছে, সেখানেই ভাগ্নেও আক্রান্ত হয়েছে।’’ মৃতের স্ত্রী চম্পা ধীবর বলেন, ‘‘তিন মেয়ে আছে। ওঁর রোজগারেই সংসার চলত। কী করব, ভেবে পাচ্ছি না।’’
বর্ধমান হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন ৯ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ভর্তি রয়েছেন। জ্বর নিয়ে ভর্তি আছেন ১৩ জন। তাঁদের সকলকেই কড়া পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল সুপারের দাবি, ‘‘হাসপাতালে ডেঙ্গির চিকিৎসা ভাল হচ্ছে। বেশির ভাগ আক্রান্তই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন।’’ জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা এই মরসুমে শ’দুয়েক ছিল। এখন তা অনেকটাই কমেছে বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি। জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুবর্ণ গোস্বামী বলেন, ‘‘পুজোর সময়ে আক্রান্ত দেড়শোর আশপাশে থাকলেও, এখন তা কমেছে। পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। এই মৃত্যুর রিপোর্ট হাতে পেলে ঠিক ভাবে বলা যাবে।’’ এক স্বাস্থ্যকর্তার দাবি, জেলায় এটি ডেঙ্গিতে দ্বিতীয় মৃত্যু। তবে মৃতেরা কেউ জেলার বাসিন্দা নন। প্রত্যকেই অন্য জেলা থেকে এসে এখানে ভর্তি হয়ে মারা গিয়েছেন।
জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রায় বলেন, ‘‘ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা প্রচার এবং তৃণমূল স্তরে কাজ হচ্ছে। আমাদের জেলায় তেমন কোনও সমস্যা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy