দেড় মাস আগে বড় বৈনান গ্রামে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে ব্লক সভাপতি-সহ বেশ কয়েকজনকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। এ বার একশো দিনের কাজের পাঁচ সুপারভাইজারকে তুলে নিয়ে গিয়ে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ওই গ্রামের শ্মশানঘাটের কাছ থেকে পাঁচ জনকে উদ্ধার করে মাধবডিহি থানার পুলিশ। বিজেপির দুই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার ধৃতদের পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজত দেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা হলেন বড় বৈনান গ্রামের বাসিন্দা, বিজেপির ১০ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি তাপস দাঁ ও তাঁর ভাই প্রশান্ত দাঁ। প্রশান্তবাবু বিজেপির শক্তিমণ্ডল প্রমুখ। এই দু’জনেই গত ২৯ মে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় আটকে রায়না ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনসার আলি খান-সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত। পুলিশ আদালতে মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগের সঙ্গেই ওই ঘটনার কথাও উল্লেখ করেছে। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের সময় ধৃতেরা দোষ কবুল করেছেন, লিখিত ভাবেও সে কথা জানিয়েছেন।
যদিও অভিযুক্ত তাপসবাবুর দাবি, “ওই পাঁচ সুপারভাইজার একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের জবকার্ড আটকে রেখে, অন্যের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তারই হিসেব চাওয়া হয়েছিল বলে আমাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হল।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় বড় বৈনান গ্রামের মানিক কুন্ডু, নাড়ুগোপাল রায়, সুব্রত রায়, শ্যামল হাজরা, উদয় সামন্তরা একসঙ্গে হাটতলায় চা খেতে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, তখনই ধৃতদের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন লোক তাঁদের তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রাম থেকে বেশ কিছুটা দূরে পোদার পাড়ের শ্মশান ঘাটের কাছে আটকে রাখে। ৬৪ বছরের বৃদ্ধ মানিকবাবুর অভিযোগ, “আমাদের মারধর করা হয়। আমাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে বাড়ির লোকেরা ফোন করেন। ফোন কেড়ে নিয়ে অভিযুক্তরা তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চান।’’ বাকি চার জনের পরিবারকেও মোবাইলে হুমকি দিয়ে তিন লক্ষ টাকা করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছে বলে মাধবডিহি থানায় রবিবার গভীর রাতে অভিযোগ করা হয়েছে। মুক্তিপণ না দিলে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়, বলেও তাঁদের দাবি। পুলিশ জানিয়েছে, খবর পাওয়ার পরেই ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মাধবডিহি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। বাকিরা পালিয়ে গেলেও দুই ভাইকে ধরে ফেলে পুলিশ।
রায়না ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনসার আলি খানের অভিযোগ, “আমাকে মারধর করে বিজেপি শান্ত হয়নি। এখন গ্রামের সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার শুরু করেছে। সংগঠিত ভাবে টাকা ছিনতাইয়ের নেশা চেপে বসেছে বিজেপির উপর।’’ ব্লকের বিজেপির পর্যবেক্ষক বিজন মণ্ডলের পাল্টা অভিযোগ, “মারপিটের ঘটনায় জামিন হয়ে যাবে বুঝে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের সঙ্গেও প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে সুপারভাইজাররা। তারই হিসেব চাইতে গিয়েছিলেন শ্রমিকেরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy