(বাঁ দিকে) দুর্গাপুর ব্যারাজে। (ডান দিকে) মথুরাচণ্ডীতে। নিজস্ব চিত্র।
দামোদরের দুর্গাপুর ব্যারাজে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হল এক তরুণীর। পাশাপাশি, দামোদরেই তলিয়ে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নিখোঁজ রানিগঞ্জের তিন কিশোর।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ছটপুজোর আগে প্রতি বছরের মতো এ বারেও দুর্গাপুরের বিভিন্ন জায়গা থেকে ব্যারাজে স্নান করতে যান বাসিন্দারা। এ দিন পরিবারের বাকিদের সঙ্গে স্নান করতে এসেছিল নেপালিপাড়া হিন্দি হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী সোনিকুমারী তাঁতি (১৬)। সকাল ৮টায় দুর্গাপুরের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের খাটালপাড়ার বাসিন্দা সোনি স্নান করতে নামে। কাছেই স্নান করছিলেন পড়শি আনন্দ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে সোনির মা রীতাদেবী তলিয়ে যাচ্ছিলেন। সোনি মা-কে বাঁচাতে যায়। আশপাশের লোকজন রীতাদেবীকে টেনে ধরেন। তখনই তলিয়ে যায় সোনি।’’ রীতাদেবী প্রায় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। তাঁর ছেলে নবম শ্রেণির পড়ুয়া সাগর বলে, ‘‘মা-কে তলিয়ে যেতে দেখে তাঁকে ধরতে যায় দিদি। মা-কে তোলা গেলেও দিদি তলিয়ে যায়।’’
স্নান করতে আসা মানুষজনই উদ্ধারকাজ শুরু করলেও পুলিশ এ বিষয়ে পদক্ষেপ করেনি। এমন অভিযোগে কর্তব্যরত দুই পুলিশকর্মীকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান সোনির পরিজন ও পড়শিদের একাংশ। রোহিত যাদব নামে এক বাসিন্দার ক্ষোভ, ‘‘প্রতি বছর বহু মানুষ ব্যারাজে স্নান করতে আসেন। অঘটনও ঘটে। অথচ, পুলিশি ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল না।’’ উমেশ মাহাতো নামে এক জন বলেন, ‘‘অনেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধারের চেষ্টা করে। অথচ, এক ঘণ্টা পরেও দেখা যায়, পুলিশ শুধু ফোন করছে।’’
এর পরে বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানা থেকে পুলিশকর্মীরা এলে, তাঁদেরও বিক্ষোভ দেখান অনেকে। শেষ পর্যন্ত ঘটনার ঘণ্টা তিনেক পরে, ওই কিশোরীর দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ অবশ্য দেরিতে আসার অভিযোগ মানেনি। দেহটি ময়না-তদন্তের জন্য পাঠানো হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজও হাসপাতালে।
এ দিকে, মঙ্গলবার রানিগঞ্জের এগারা পঞ্চায়েত লাগোয়া দামোদরের পশ্চিম বর্ধমানের মথুরাচণ্ডী ঘাট এলাকায় তলিয়ে যায় অভিষেক মিশ্র, অভিষেক মেহেতা ও রোশন সিংহ নামে রানিগঞ্জের জ্ঞানভারতী বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির তিন পড়ুয়া। তারা যথাক্রমে রানিগঞ্জের কেজি লেন, বড়দহি ও ভগৎপাড়ার বাসিন্দা। রোশনের মামা বাবলু সিংহ জানান, দুপুর ১টা নাগাদ তাঁর ভাগ্নে ‘টিউশন পড়তে যাচ্ছি’ বলে বাড়ি থেকে বেরোয়। আড়াইটে নাগাদ জানা যায়, রোশনরা তিন বন্ধু দু’টি স্কুটিতে চড়ে ঘাটের কাছে এসেছে। ঘাট থেকে প্রায় একশো মিটার দূরে দামোদরের বালিতে তিন জনের ব্যাগ, জামাকাপড় পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু তিন জনের খোঁজ মিলছে না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এলাকাবাসীর একাংশ জলে নামলেও খোঁজ মেলেনি।
বিকেলে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিডিও (মেজিয়া, বাঁকুড়া) অনিরুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বাঁকুড়ার মেজিয়া থানা থেকে উদ্ধারকারী দল আনা হচ্ছে।’’ এ দিকে, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (সেন্ট্রাল ২) তথাগত পাণ্ডে জানান, যেহেতু তলিয়ে যাওয়া কিশোরেরা রানিগঞ্জের বাসিন্দা, তাই তাঁরাও উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে রাত ৮টা পর্যন্ত খোঁজ মেলেনি তিন জনের। পরিবারের লোকজন এই পরিস্থিতিতে এতটাই উদ্বিগ্ন যে, কথা বলতে পারেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy