পোড়া পালুই। মঙ্গলকোটের গ্রামে মঙ্গলবার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
বালিঘাটের দখল নিয়ে বিবাদের জেরে সংঘর্ষের ঘটনায় পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটে তেরো জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে এগারো জনই তাঁদের কর্মী বলে দাবি বিজেপির। দলের নেতাদের অভিযোগ, তৃণমূলের ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের’ জেরে গোলমাল হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ বেছে বেছে তাঁদের কর্মীদের ধরেছে। যদিও পুলিশ তা মানতে চায়নি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধেই হামলা চালানোর অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।
সোমবার মঙ্গলকোটের বকুলিয়া গ্রামে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে বোমা-গুলি চলে বলে অভিযোগ। আহত হন দুই মহিলা-সহ পাঁচ জন। বিজেপি নেতৃত্ব ও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বালিঘাটের দখল নিয়ে দ্বন্দ্ব তো ছিলই, সেই সঙ্গে এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রামের কিছু মহিলাকে উত্তক্ত্য করার অভিযোগকে কেন্দ্র করে সে দিন গোলমাল শুরু হয়। ঘটনার পর থেকে গ্রাম কার্যত পুরুষশূন্য।
এলাকায় মঙ্গলবার সকালে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। গ্রামের রাস্তায় টহল দিচ্ছে পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স। মূল সংঘর্ষ যেখানে ঘটেছিল, সেই মেটেপাড়ায় এ দিনও পোড়া খড়ের পালুই থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখা যায়। একটি বাড়ির ছাদ থেকে বোমা-গুলি ছোড়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই বাড়ির সদস্যেরা ঘটনার পর থেকে বেপাত্তা।
পুলিশ জানায়, ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সোমবার রাতেই গ্রাম থেকে চার মহিলা-সহ ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতদের কাটোয়া আদালতে তোলা হলে চার জনকে চার দিন পুলিশ হেফাজত ও বাকিদের ছ’দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, ধৃতদের মধ্যে দু’জন তৃণমূল ও ১১ জন এলাকায় বিজেপি হিসেবে পরিচিত।
বিজেপির জেলা (কাটোয়া) সভাপতি কৃষ্ণ ঘোষ এ দিন অভিযোগ করেন, ‘‘বালিঘাটের বখরা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ছাড়া, গ্রামে এক তৃণমূল কর্মী মহিলাদের উত্ত্যক্ত করত। আমাদের ছেলেরা দিন তিনেক আগে প্রতিবাদ করেছিল বলে মারধর করা হয়। এখন শাসক দল নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঢাকতে পুলিশকে কাজে লাগিয়ে আমাদের ১১ জন কর্মীকে গ্রেফতার করাল।’’
এই অভিযোগ উড়িয়ে মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল সভাপতি অপূর্ব চৌধুরীর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘অনেক চেষ্টা করেও বকুলিয়া গ্রামে বিজেপি দাঁত ফোটাতে পারছে না। গত লোকসভা ভোটেও আমরা প্রায় ছ’শো ভোটে এগিয়ে ছিলাম। তাই বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসতেই গ্রাম দখল করতে বাইরে থেকে ভাড়া করে দুষ্কৃতী এনে এলাকা অশান্ত করছে।’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘বালিঘাট নিয়ে সমস্যা নেই। আমাদের কোনও কর্মী মহিলাদের উত্যক্তও করেন না। এ সব বিজেপির অপপ্রচার।’’
পুলিশ জানায়, এলাকায় পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গ্রেফতারের ক্ষেত্রে পক্ষপাতের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি মঙ্গলকোট থানার পুলিশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy