ঢাল নেই, তরোয়াল নেই, নিধিরাম সর্দার। শূন্যপদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্ধমান জেলা পুলিশের অবস্থা খানিকটা এমনই। জেলার উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্তাদের ক্ষোভ, কর্মী কম থাকায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ও তদন্তে ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হচ্ছে।
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, ২০১৪ সালে রাজ্য সরকারের কাছে পেশ করা বর্ধমান জেলা পুলিশের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ঝুলে থাকা মামলার সংখ্যা প্রতি বছর বাড়ছে। ‘ডিষ্ট্রিক্ট আউট টার্ন’ নামের ওই নথিতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে জেলা পুলিশের খাতায় ১৮১০টি মামলা ঝুলে ছিল। সেই বছর ৩৮৬৩টি চার্জশিট পেশ করা হলেও মাত্র ৭৯৩টি ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছিল। ২০১২ সালে নিষ্পত্তি না হওয়া অভিযোগের সংখ্যা ছিল ১৫৮০টি। ২০১৩ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫১৪টি। ২০১৪ সালে নতুন করে ১৫১৪টি মামলা তথা অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এই বছরে চার্জশিট ও ফাইনাল রিপোর্ট জমা পড়েছিল যথাক্রমে ৭৭৪১ ও ১২২৩টি। মোট ১০৯৭টি মামলা ঝুলে ছিল। শুধু মামলা নয়, জেলা পুলিশের খাতায় জমে থাকা গ্রেফতারি পরোয়ানার সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। ২০১১ সালের আগে অবধি ১৩৯২টি গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করা যায়নি। ওই বছরে নতুন করে আরও ৮৮৫১টি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। পুলিশ তার মধ্যে ৮৫৯৬টি ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে পেরেছিল। ২০১২ সালে নতুন করে ৫৬৩৪টি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সে বার পুলিশ ৬৪২৮টি পরোয়ানার ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে পেরেছিল। ২০১৩ সালে নতুন করে ৫৭৯৬টি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। তার মধ্যে ৮৮টি পরোয়ানা ঝুলে ছিল। ২০১৪ সালে নতুন করে ৬৯৪৯টি পরোয়ানা জারি হয়। তার মধ্যে ৬৯২৫টি ক্ষেত্রে পুলিশ ব্যবস্থা নিতে পেরেছিল। ঝুলে ছিল ১১২টি গ্রেফতারি পরোয়ানা।
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, বর্ধমান জেলায় পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছাড়াও ৯জন ডিএসপি, ২৪জন ইন্সপেক্টর, ১৫৯জন সাব ইন্সপেক্টর, ১৯১জন এএসআই, ২২জন মহিলা এসআই, ২৫জন মহিলা এএসআই, ১০৮০জন কনস্টেবল, ৩০৭জন মহিলা কনস্টেবল থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে রয়েছেন ৭ ডিএসপি, ১৬ ইন্সপেক্টর, ১১২ এসআই, ৪ মহিলা এসআই, ১৫৯জন এএসআই, ৮জন মহিলা এএসআই, ৭৬৪ কনস্টেবল, ২৫১জন মহিলা কনস্টেবল। জেলা সশস্ত্র পুলিশে ২৯ সাব ইন্সপেক্টর, ৯৩ এএসআই ও ৫৬৯ জন কনস্টেবল থাকার কথা। কিন্তু আদপে রয়েছে ১০ জন সাব ইন্সপেক্টর, ৮১ জন এএসআই ও ৪৭৪ জন কনস্টেবল। সব মিলিয়ে জেলায় বর্তমানে ৮৪ জন সাব ইন্সপেক্টর, ৬১ জন এএসআই ও ৪৬৭ জন কনস্টেবলের পদ ফাঁকা রয়েছে। এর ফলে শুধু অনেক ক্ষেত্রে তদন্তে যেমন সমস্যা হচ্ছে, তেমনই আইনশৃঙ্খলা রক্ষা নিয়েও সমস্যা হচ্ছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “তদন্তের বেশিরভাগ কাজ সাব ইন্সপেক্টর ও এএসআই করেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাঁরাই না থাকায় বহু মামলার সঠিক সময়ে চার্জশিট পেশ করা যাচ্ছে না। থানাগুলিতে বহু মামলা ও অভিযোগের তদন্ত করা যাচ্ছে না।”
সদ্য এসপি বদল হয়েছে জেলায়। সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জার জায়গায় দায়িত্বে এসেছেন কুণাল অগ্রবাল। তার আমলে জেলা পুলিশের এই অবস্থা কতটা বদলাবে? কুণালবাবু বলেন, “আমি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছি। পুরো বিষয়টি না জেনে মন্তব্য করতে পারব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy