দুর্গার সাজ তৈরিতে ব্যস্ত মেদিনীপুরের শিল্পীরা। —নিজস্ব চিত্র।
দু’মাসেরও বেশি ঘরছাড়া তাঁরা। যত দিন এগিয়ে আসছে নাওয়া-খাওয়াটুকুও ভুলতে বসেছেন। ভোর থেকে রাত কেউ দুর্গার ঝালট, কেউ মুকুট, কেউ কানের দুল, হার তৈরিতে ব্যস্ত। তাঁরা পূর্ব মেদিনীপুরের শিমূলবাড়ি থানায় ভূপতি নগরের জনা ১৬ শিল্পী। বর্ধমানের বড়নীলপুরের একটি ক্লাবের মণ্ডপে প্রতিমাকে হোগলা পাতার সাজে সাজিয়ে তুলছেন তাঁরা।
পুজোর উদ্যোক্তারা জানান, এ বারের পুজোয় নারী শক্তির আরাধনায় মেতেছেন তাঁরা। চিরন্তন শক্তির প্রতীক দেবী দুর্গার সঙ্গে ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাই থেকে শুরু করে মাতঙ্গিনী হাজরা পর্যন্ত সমস্ত আরও অনেক স্মরণীয় নারীকেই নতুন সাজে সাজিয়ে দর্শকদের উপহার দেবেন তাঁরা। বাজেট প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকা। আর তারই প্রস্তুতিতে উদয়াস্ত ব্যস্ত এই শিল্পীরা। শিল্পীরা জানান, উত্তর চব্বিশ পরগনার বনগাঁ, হুগলির কালীনগর প্রভৃতি জায়গা থেকে সরু, মোটা, মাঝারি নানা আকৃতির হোগলা পাতা ট্রাকে করে এনে তার থেকে শিল্পকর্ম করেছে তাঁরা। পাতার একটি বড়ো বান্ডিলের দাম প্রায় দু’হাজার টাকা। আর সরু হোগলা পাতার দাম কেজি প্রতি দেড়শো টাকা। ১৬ জনের দলটির প্রধান শিল্পী মুকুল দলুই জানান, গত বারও এই মণ্ডপে সুতো ও দড়ির কাজ করেছিলেন তাঁরা। ২০১০ সালে খেজুর গাছ ও ছোবড়ার কাজ করে মিলেছিল জোড়া পুরস্কার। ২০১১ সালে পাটের কাজ করে জেলা প্রশাসনের সেরা পুজোর পুরস্কার পেয়েছিলেন তাঁরা। খেজুর গাছের ছোবরা ও পাটের তৈরি মূর্তিগুলি শিল্প সংগ্রাহকেরা কিনেও নিয়েছিলেন।
দলের তপন দলুই নামে আর এক শিল্পী জানান, হোগলা পাতার উপর এ বার যে কাজ তাঁরা করছেন তাতে কোনও কৃত্তিম র়ং ব্যবহার করা হবে না। ভেলভেটের কাগজের উপর আঠা দিয়ে হোগলা পাতাগুলিকে কেটে কেটে আটকে প্রতিমার সাজ তৈরি করছেন তাঁরা। শিল্পীদের দাবি, সরু হোগলার পাতায় যে উজ্জ্বলতা আছে তা দিয়েই দর্শনার্থীদের চোখ ধাঁধিয়ে দেবেন তাঁরা।
পুজো কমিটির সম্পাদক সুদীপ পাল বলেন, ‘‘কয়েক বছর ধরে মুকুলবাবুদের হাত ধরে অনেক সম্মান, পুরস্কার জুটেছে। এ বারেও হোগলা পাতার দুর্গাপ্রতিমা ও মণ্ডপ দর্শকদের মন কাড়বে আশা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy