নির্বাচনী প্রচারে দূষণ মুক্ত শহর গড়ে তোলার কথা বললেও ক্ষমতায় এসে কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি দুর্গাপুরের তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা এই অভিযোগ করে বুধবার থেকে এক লক্ষ সই সংগ্রহে নামল বিজেপি প্রভাবিত পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় বিকাশ মঞ্চ।
সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, মুনাফার লোভে বিদ্যুত্ খরচ বাঁচাতে অধিকাংশ কারখানা দূষণ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র চালায় না। কার্বন, সিলিকা, অ্যাসবেস্টস, লোহা, ম্যাঙ্গানিজ-এর আকরিক, কয়লার গুঁড়োর মতো মানবদেহের পক্ষে ক্ষতিকারক কণার হার বাতাসে বিপজ্জনক হারে বাড়ছে। সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত চিকিত্সকদের দাবি, আকারে বড় ওই কণাগুলি শ্বাস গ্রহণে বাধার সৃষ্টি করার পাশপাশি মানবদেহে বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে। সংগঠনের তরফে মহকুমা হাসপাতালের প্রাক্তন সুপার চিকিত্সক মিহির নন্দী বলেন, “বাতাসে ভাসমান কণাগুলি শ্বাসনালী হয়ে চলে যায় ফুসফুসের অ্যালভিওলাইয়ে। এর জেরে ফুসফুসের কর্মক্ষমতা কমে গিয়ে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে গিয়ে হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।” মিহিরবাবুর আরও দাবি, দূষণের জন্য দুর্গাপুরে ক্রমশ ‘ক্রোনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ’-এ (সিওপিডি) আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে চোখের রোগ বা ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যাও।
তবে শুধুমাত্র তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধেই অভিযোগ নয়। সংগঠনের তরফে তোপ দাগা হয়েছে বিগত বাম পুর বোর্ডের বিরুদ্ধেও। সংগঠনের সদস্য নরেশ কোনারের অভিযোগ, বাম আমলে দুর্গাপুর শহর ও সংলগ্ন এলাকায় একের পর এক স্পঞ্জ আয়রণ, পিগ আয়রণসহ বিভিন্ন ধরণের কারখানা গড়ে তোলার জন্য আপ্যায়ন করে নিয়ে আসা হয় শিল্পপতিদের। কিন্তু তাঁদের স্বার্থ দেখতে গিয়ে দূষণের বিরুদ্ধে কোনও দিনই সরব হয়নি সিপিএম। তৃণমূলও বিগত বাম আমলের মতোই কাজ করছে বলে নরেশবাবুর দাবি। নরেশবাবুর কথায়, “তৃণমূল পুরসভায় ক্ষমতায় আসার আগে প্রতিশ্রুতি দেয় ‘দূষণ মুক্ত দুর্গাপুর’ গড়ার। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় দূষণ প্রতিদিন বাড়ছে।” জল দূষণের বিষয়টি নিয়েও সরব হয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা। বিভিন্ন কল কারখানার ব্যবহৃত জল দামোদরে মিশে দূষণ ছড়াচ্ছে সারা শহরে। সংগঠনের কৃষ্ণ মালের দাবি, “দূষিত জল শোধন করেই তা সরবরাহ করা হয় শহরে। কিন্তু তার পরেও জলের মধ্যে বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থ থাকে বলে জানা গিয়েছে।” দূষিত পানীয় জলের কারণে কিডনি ও যকৃতের রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও শহরে বাড়ছে বলে সংগঠনের সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
যদিও বিজেপি প্রভাবিত সংগঠনের অভিযোগগুলিকে মোটেই আমল দিচ্ছে না সিপিএম বা তৃণমূল। সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ বিপ্রেন্দু চক্রবর্তীর দাবি, “দূষণের বিরুদ্ধে আমরা বহুবার আন্দোলন করেছি। দুর্গাপুরের মানুষ তা জানেন।” অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক তথা মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায় দূষণ নিয়ন্ত্রণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েও দাবি করেন, তৃণমূলের বোর্ড পুরসভায় ক্ষমতায় আসার পরে শহর জুড়ে বৃক্ষরোপন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে একাধিকবার।
সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে ১০১ দিনের মধ্যে সই সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করে মহকুমা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। এ দিন সই সংগ্রহ অভিযানে মানুষের ভাল সাড়া মিলেছে বলেও দাবি করেন সংগঠনের সদস্যরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy