দেব বৈরাগ্য, বর্ধমান স্টেশনে দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। —নিজস্ব চিত্র।
আচমকা জোর আওয়াজ। তার পরেই মনে হল, যেন স্টেশনের ছাদটাই ভেঙে পড়েছে মাথার উপরে। কপাল, চোখ বেয়ে গলগল করে দ্রুত নেমে এল তরল। ওটা যে রক্তের ধারা, বুঝতে বুঝতেই নিমেষে চোখের সামনে সব অন্ধকার। যখন জ্ঞান ফিরল, দেখি আমি হাসপাতালে। তখনও ঠিক বিশ্বাস করতে পারছি না, স্টেশনের জলের অত বড় ট্যাঙ্কটা ভেঙে পড়েছে!
আমরা আট-দশ জন ভিন্ রাজ্যে জিনিসপত্র ফেরি করি। এক সঙ্গেই বিহারের মজফ্ফরপুর যাব বলে মেমারি থেকে রওনা দিই বুধবার। প্রথমে লোকাল ট্রেন ধরে বর্ধমান। তার পরে এখান থেকে জনসাধারণ এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল। ট্রেনটা ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসবে জেনে ওখানেই বসেছিলাম। প্ল্যাটফর্মের ছাউনির নীচে যেখানে বসেছিলাম, সেখানেই ভেন্ডার কামরাটা পড়ে। ভেবেছিলাম, সময় আছে, ট্রেন এলে ধীরেসুস্থে উঠব।
প্ল্যাটফর্মের উপরে বিশাল জলের ট্যাঙ্কটা থেকে অনেক ক্ষণ ধরেই জল পড়ছিল। ভেবেছিলাম, ট্যাঙ্কে কোনও ফুটো হয়েছে বা জল বেশি ভরা হয়ে গিয়েছে। অন্য যাত্রীরাও তেমন গা করেননি। হঠাৎ একটা বিকট আওয়াজ পেলাম। তার পরই মনে হল, আমার মাথায় কিছু একটা ভেঙে পড়েছে। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল মুখ। চিৎকার, ছোটাছুটির মাঝে মাথার উপর থেকে ছাউনির নানা অংশ ভেঙে পড়ছিল। জলেও ভেসে যাচ্ছিল চারপাশ। তখনই জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।
পরে শুনলাম, বাকিদেরও কিছুক্ষণ সময় লেগেছিল পরিস্থিতি বুঝতে। তার পরে চার দিক থেকে লোকজন ছুটে আসে। তারাই অনেকে মিলে হাতে হাতে লোহার বড় বড় টুকরো সরিয়ে আমাদের উদ্ধার করে। এর মধ্যে পুলিশ আসে। তারা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল। ঘটনার কয়েক মিনিট পরেই ট্রেন ছিল আমাদের। প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢোকার পরে এই ঘটনা ঘটলে আরও বড় বিপদ হত। আরও কত প্রাণ যেত কে জানে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy