রাজীব কুমার। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে জটিলতাতেই এক দিনে দু’বার, দুই আদালতে, আটকে গেল রাজীব কুমারের আগাম জামিন। বারাসত জেলা জজও জানিয়ে দিলেন, তাঁর আদালত ওই আবেদনের ভিত্তিতে কোনও রায় দিতে পারে না।
মঙ্গলবার সকালেই অবশ্য সেই ইঙ্গিত মিলেছিল। এ দিন সকালে রাজীব কুমারের আইনজীবী, কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের তরফে আগাম জামিনের আবেদন করেন এমপি-এমএলএ বিশেষ আদালতে। সিবিআই রাজীবের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পাল্টা আবেদন জানায় বিচারকের সামনে।
ওই বিচারকের এজলাসেই গত দু’বছর ধরে সারদা তদন্তের সিবিআইয়ের করা আরসি ৪ মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু এ দিন বিচারক দু’পক্ষের আবেদন শুনে জানিয়ে দেন যে— তাঁর আদালতের আগাম জামিন দেওয়ার এক্তিয়ার নেই। ঠিক একই ভাবে তিনি সিবিআইয়ের আইনজীবীকে বলেন, তাঁর আদালতের পরোয়ানার ভিত্তিতে রাজীব কুমারকে গ্রেফতার করা হলে তাঁর আদালতেই হাজির করতে হবে। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার অর্থাৎ সিবিআই হেফাজত বা জেল হেফাজতে পাঠানোর কোনও অধিকার নেই তাঁর আদালতের। বিচারকের যুক্তি মেনে নেন সিবিআইয়ের আইনজীবীও। এর পরই রাজীব কুমারের আইনজীবী বারাসতের জেলা দায়রা আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করেন, যা জেলা জজ শুনানির জন্য গ্রহনও করেন।
আরও পড়ুন:সিবিআই বলল, জামিনে তদন্ত ব্যাহত হবে, রাজীবের আইনজীবীর প্রশ্ন চার দিনে কী এমন ঘটল?
আরও পড়ুন:‘কথা হবে রাজ্যের পাওনা নিয়ে’, দিল্লি যাওয়ার আগে বলে গেলেন মমতা
বেলা দুটো থেকে তিনটে পর্যন্ত জেলা জজ সব্বর রশিদির এজলাসে দু’পক্ষই সওয়াল জবাব করেন। রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারক। সন্ধে সওয়া ৬টা নাগাদ তিনি ঘোষণা করেন যে— ওই মামলার রায়দানের এক্তিয়ার নেই তাঁর আদালতেরও।
কিন্তু কেন? সারদা মামলার সঙ্গে যুক্ত এক আইনজীবী ব্যাখ্যা করে বলেন— ২০১৭ সালে, আইনসভার সদস্যরা ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হলে তার বিচারের জন্য পৃথক আদালত গঠনের নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।
সেই নির্দেশ মেনেই বারাসতে তৈরি করা হয় এমএলএ-এমপি বিশেষ আদালত। সারদা তদন্তে সিবিআইয়ের করা আরসি-৪ মামলায় তত দিনে গ্রেফতার করা হয়েছে মদন মিত্র, সৃঞ্জয় বসু, কুণাল ঘোষ-সহ একাধিক আইন সভার সদস্যকে। কিন্তু বিশেষ আদালত গঠনের পর দেখা যায় অন্যতম অভিযুক্ত কুণাল ঘোষ তখনও সাংসদ।
ঠিক সেই কারণেই আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালত থেকে বারাসতের বিশেষ আদালতে সরিয়ে আনা হয় ওই মামলা। আরসি-৪ মামলাটি ছিল সারদা রিয়েলিটি সংস্থার বিরুদ্ধে। সেই সংস্থার মূল কার্যালয় ছিল বিষ্ণুপুরে। সেই কারণেই মামলা শুরু হয় আলিপুর আদালতে। কিন্তু বর্তমানে আর কুণাল ঘোষ সাংসদ নন। তাই এই আদালত নতুন করে মামলা আদৌ শুনতে পারে কি না, তাই নিয়েই সংশয় তৈরি হয় এ দিন।
রাজীব কুমারের আইনজীবী গোপাল হালদার বলেন, ‘‘বিচারক এ দিন এই মামলার মেনটেনেবিলিটি অর্থাৎ গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ তিনি তাঁর অর্ডারে জানিয়েছেন যে— তাঁর আদালত ওই মামলা শুনতে পারে না। সেই এক্তিয়ার নেই।” গোপাল বলেন, ফের নতুন করে আবেদন করতে হবে সংশ্লিষ্ট আদালতে।
গোপালবাবুর মতে, যেহেতু, এমএলএ-এমপি আদালতের এক্তিয়ার নেই এই মামলা শোনার এবং ওই মামলা শুরু হয়েছে আলিপুরের অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে, তাই সংশ্লিষ্ট আদালত বলতে বিচারক আলিপুর আদালতকেই বুঝিয়েছেন।
তাই নতুন করে আলিপুর আদালতে আগাম জামিনের আবেদন করতে হবে রাজীবের আইনজীবীকে। কিন্তু আইনি জটিলতায় বিড়ম্বনা বাড়ল প্রাক্তন পুলিশ কমিশনারের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy