ধৃত শাদ রাডি। নিজস্ব চিত্র।
ভুয়ো পাসপোর্টই শুধু নয়, এ রাজ্যের ভোটার তালিকাতেও নাম তুলে ফেলেছিল বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন ‘আনসারুল্লা বাংলা টিম’ বা এবিটি (আল কায়দার উপমহাদেশীয় শাখা) জঙ্গি মহম্মদ শাদ রাডি ওরফে শাব শেখ। আছে ভোটার কার্ডও। তাই খাতায়-কলমে ‘ভারতীয় নাগরিক’ হয়ে গিয়েছিল সে! তদন্তকারীদের দাবি, ভুয়ো নথি দিয়েই পাসপোর্ট এবং ভোটার কার্ড তৈরি করেছিল শাব শেখ। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, মুর্শিদাবাদের কান্দি এবং হরিহরপাড়া, দুই বিধানসভা কেন্দ্রেই শাবের নাম আছে। অনুমান, প্রথমে একটি বিধানসভা কেন্দ্রে নাম তোলা হয়েছিল এবং পরে তা অন্য বিধানসভায় বদল করা হয়েছে। তাই দুই জায়গাতেই নাম রয়েছে তার। কবে শাবের নাম ভোটার তালিকায় উঠেছিল এবং ভোটারকার্ড তৈরি হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দারা বলছেন, হরিহরপাড়া থেকে শাব-ঘনিষ্ঠ মিনারুল শেখ এবং মহম্মদ আব্বাস আলিকে গ্রেফতার করে অসম পুলিশ। একাংশের ধারণা, তাদের কারও সূত্রেও শাবের নাম ভোটার তালিকায় উঠতে পারে। এখানে সে ঘাঁটিও গেড়েছিল কিছু দিন। এক গোয়েন্দা-কর্তার কথায়, ‘‘এ রাজ্যে বোধহয় ভোটও দিয়েছে ওই বাংলাদেশি জঙ্গি!’’ তদন্তকারীরা জানান, ভোটার তালিকা এবং কার্ড খতিয়ে দেখার পাশাপাশি শাবের গতিবিধি বোঝার জন্য তার পাসপোর্টের তথ্যও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, শাব ছাড়াও এবিটি-র একাধিক সদস্য এবং বাংলাদেশির আনাগোনা ছিল হরিহরপাড়ায়। অসম পুলিশের হাতে ধৃত নুর মণ্ডল এবং মজিবুর রহমানের এ রাজ্যে ঘন ঘন বৈঠক করা এবং শাবের নভেম্বরের শেষ দিকে কেরলে যাওয়ার তথ্য হাতে এসেছে। সূত্রের খবর, ২০১৮ সালে ‘পকসো’ মামলায় আব্বাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন দীর্ঘদিন জেলবন্দি ছিল সে। ওই জেলে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের কয়েক জন অভিযুক্তও বন্দি ছিল। সন্দেহ করা হচ্ছে, জেলে ওই আলাপের ফলেই আব্বাস জঙ্গি আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়। পরে জেল থেকে বাংলাদেশি জঙ্গি নেতাদের নির্দেশে বেরিয়ে সে একটি ‘খারিজি’ (বেআইনি) মাদ্রাসা খুলেছিল। তাতে ১৪ জন ছাত্র ছিল। তার মধ্যে মিনারুলের দুই ছেলেও আছে। ঘটনাচক্রে, খাগড়াগড়েও দেখা গিয়েছিল যে, এমন বেআইনি মাদ্রাসা খুলে জঙ্গি এবং জেহাদি মনোভাবের বিস্তার করা হয়েছিল।
হরিহরপাড়া বা আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটাকে ব্যবহার করা হয়েছে কেন? গোয়েন্দাদের একাংশ মনে করছে, এই সব এলাকা থেকে দ্রুত একাধিক দিকে, হয় অন্য রাজ্যে নয়তো অন্য দেশে দ্রুত সরে পড়া যায়। হরিহরপাড়ার ক্ষেত্রে বিশেষ করে সেই সম্ভাবনা প্রবল।
গত বুধ ও বৃহস্পতিবার অসম পুলিশের এসটিএফ অসম, কেরল এবং এ রাজ্য থেকে আট জঙ্গিকে ধরে। তার মধ্যেই শাদ রাডি ওরফে শাব শেখ, মিনারুল এবং আব্বাস আছে। গোয়েন্দাদের দাবি, এরা মূলত ভারতে সংগঠন বিস্তার ও রাজ্যের সঙ্গে উত্তর-পূর্বের সংযোগকারী ‘চিকেন’স নেক’-এ নাশকতার পরিকল্পনা নিচ্ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy