রাজ্যের কলেজগুলিতে এর পর থেকে আর নতুন করে আংশিক সময়ের (পার্ট টাইম) শিক্ষক নিয়োগ করা হবে না। কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে পূর্ণ সময়ের শিক্ষকই নেওয়া হবে বলে বিধানসভায় জানিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তবে আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসাবে যাঁরা এখন কাজ করছেন, তাঁদের সরানো হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আংশিক সময়ের শিক্ষকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লড়াই চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। বিধানসভায় বুধবার তাঁদের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের তাজমুল হোসেন ও সিপিএমের আনিসুর রহমান। জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, রাজ্যে এখন বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ হাজার ৩৩৭ জন আংশিক সময়ের শিক্ষক আছেন। এই শ্রেণির শিক্ষকদের নিয়ে পর্যালোচনা করার জন্য অভিরূপ সরকারের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়েছিল রাজ্য সরকার। সেই কমিটির রিপোর্টে দেখা গিয়েছিল, আংশিক সময়ের শিক্ষক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে ৫২.৮%-রই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বেঁধে দেওয়া মাপকাঠির নিরিখে পূর্ণ শিক্ষক হওয়ার মতো যোগ্যতা নেই। পার্থবাবুর অভিযোগ, দলের ক্যাডার বাহিনীকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বাম জমানার শেষ দিকে বারেবারে আংশিক সময়ের শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। পরবর্তী কালে এঁদের নিয়ে বেশ কিছু মামলাও হয়েছে। নিয়মিত শিক্ষকদের তুলনায় আংশিক সময়ের শিক্ষকেরা যে আর্থিক বৈষম্যের শিকার, তা-ও উল্লেখ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। সেই সঙ্গেই জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের আর্থিক অনটন সত্ত্বেও বর্তমান আংশিক সময়ের শিক্ষকদের নিয়ে কোনও না কোনও ভাবে কাজ চালিয়ে যাওয়া হবে।
পার্থবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমরা কাউকে তাড়িয়ে দিতে চাইছি না। আমি বললেই হয়তো আবার স্বাধিকার নিয়ে হইচই করা হবে! কিন্তু ঘটনা হল, এঁদের (আংশিক সময়ের শিক্ষক) অর্থ সরকার দেয় কিন্তু নিয়োগপত্র দেয় কলেজের পরিচালন সমিতি। এই পরিচালন সমিতির মাধ্যমে আর কোনও নিয়োগ আমরা চাইছি না। কলেজ সার্ভিস কমিশন থেকেই যা নিয়োগ হওয়ার, হবে।’’
বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী আরও তথ্য দিয়েছেন, ইতিমধ্যে ১৯০৫টি শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে। আরও যে শ’দুয়েক পদ খালি, সেখানেও নিয়োগ হবে। বিভিন্ন কলেজে নিয়োগ পেয়েছেন ১৯২ জন অধ্যক্ষ, সেটা তাঁদের আবেদন অনুযায়ীই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, কিছু কলেজ থেকে যাচ্ছে, আবেদনপত্র মেনে গেলে যেখানে অধ্যক্ষ নিয়োগ করা যাচ্ছে না। এ বার থেকে সেই শূন্য পদ দেখেই সেখানে অধ্যক্ষ পাঠানো হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা পরিকাঠামোয় জোর দিচ্ছি। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতিতে যে সব জনপ্রতিনিধি আছেন, তাঁদের কাছেও আবেদন, আপনারা পঠন-পাঠনের উপরেই মনোযোগ দিন।’’
শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণায় অবশ্য সন্তুষ্ট নয় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আংশিক সময়ের শিক্ষকদের সংগঠন ‘কুটাব’। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, ‘‘অভিরূপ সরকার কমিশনের রিপোর্ট জনসমক্ষে নিয়ে আসার জন্য বহু বার দাবি জানিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু সরকার কোনও আমল দেয়নি। পূর্ণ সময়ের কাজের দাবিটিকেই আসলে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মন্ত্রী এ সব বলছেন!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy