(বাঁ দিক থেকে) আনিসুর রহমান, বাকিবুর রহমান এবং আলিফ নুর। —ফাইল ছবি।
‘কাকা-ভাইপো’ অর্থাৎ বাকিবুর রহমান এবং দেগঙ্গায় তার দুই ভাইপো আনিসুর রহমান ওরফে বিদেশ এবং আলিফ নুর ওরফে মুকুলের অফিসের কর্মচারী, পরিবারের সদস্য এবং ঘনিষ্ঠদের নামে ভুয়ো চাষির তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। তালিকায় ছিল প্রায় শতাধিক নাম। সকলের নামেই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। অ্যাকাউন্টে সরকারি ধান কেনার সহায়ক মূল্য জমা পড়ত। এর পর অ্যাকাউন্ট থেকে ওই টাকা নগদে তুলে নেওয়া হত। আর তার একটি অংশ জ্যোতিপ্রিয়ের কাছে পৌঁছে দেওয়া হত বলে দাবি ইডি-র তদন্তকারীদের সূত্রে।
ওই সূত্রের দাবি, ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত তিন জনের প্রায় ছ’টি সংস্থার মাধ্যমে ধান কেনার সরকারি সহায়ক মূল্য লুট করা হয়েছে। টাকার অঙ্কে প্রায় ৪৫ কোটি। বিদেশ ও মুকুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীদের অনুমান, লুট করা টাকার ২৫ শতাংশ জ্যোতিপ্রিয়ের কাছে পৌঁছত।
তদন্তকারীদের সূত্রে দাবি, দু’টি পদ্ধতিতে রেশন দুর্নীতি করা হয়েছিল। এক দিকে কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যায্য মূল্যের রেশন সামগ্রী গ্রাহকদের বিলি না করে সরাসরি বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হত। আর এক দিকে ভুয়ো চাষিদের নামের তালিকা তৈরি করে ধান কেনার সরকারি সহায়ক মূল্য লুট করা হত।
তদন্তকারীদের দাবি, খাদ্য দফতরের স্ট্যাম্প লাগিয়ে জাল নথি তৈরি করে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ন্যায্য মূল্যের সামগ্রী নানা জায়গায় লরিতে পাচার করা হত। মূলত দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া জেলায় কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যায্য মূল্যের রেশন সামগ্রী পাচার করা হয়েছিল বলে
সাম্প্রতিক তদন্তে উঠে এসেছে। বাকিবুর, বিদেশ ও মুকুলের সিন্ডিকেট জেলায় জেলায় এই কাজ চালিয়ে গিয়েছে বলে তথ্য মিলেছে, দাবি ইডি-র তদন্তকারীদের সূত্রে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের পর থেকে মুকুল ও বিদেশের নানা সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই দু’জনের সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে জ্যোতিপ্রিয়ের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তৈরি একটি সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ২০১৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা জমা হয়েছে। মুকুল ও বিদেশ বর্তমানে ইডির হেফাজতে রয়েছে।
তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, বাকিবুর-বিদেশ-মুকুলের মতো প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মারফত সিন্ডিকেট তৈরি করে দু’টি পদ্ধতিতে রেশন দুর্নীতি চালিয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। এখনও পর্যন্ত দশ হাজার কোটি টাকার রেশন দুর্নীতির তথ্য হাতে এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy