Advertisement
২৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Narendra Modi

করোনার মাঝেও কেন আয়ুষ্মান ভারত থেকে দূরে? তোপ বাবুল-স্বপনের

কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত’-কে পশ্চিমবঙ্গে কার্যকরী হতে দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন স্বপন দাশগুপ্ত ও বাবুল সুপ্রিয়।—ফাইল চিত্র।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন স্বপন দাশগুপ্ত ও বাবুল সুপ্রিয়।—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০ ২১:২২
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতির মাঝেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করলেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে একের পর এক টুইট করে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে অবিলম্বে বাংলার যোগদানের প্রয়োজনীতার পক্ষে সওয়াল করলেন মোদী সরকারের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে ওই প্রকল্পে এখনও শামিল হল না পশ্চিমবঙ্গ সরকার— এমন ঝাঁঝালো কথাবার্তাও টুইটারে লিখলেন বাবুল। রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তও এ দিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সুরেই সুর মিলিয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে তিনি লিখেছেন— এটা ব্যক্তিগত দম্ভ দেখানোর সময় নয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত’-কে পশ্চিমবঙ্গে কার্যকরী হতে দেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকার যে হেতু নিজেই ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প চালাচ্ছে, সে হেতু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আর প্রয়োজন নেই বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগেই জানিয়েছিলেন। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের যে কার্ড পোস্ট অফিসের মাধ্যমে বিলি করার চেষ্টা করেছিল কেন্দ্র, তৃণমূলের বাধায় তা-ও সফল হয়নি।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছিলেন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। কোন অধিকারে রাজ্য সরকারকে এড়িয়ে কেন্দ্র একটা স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পকে রাজ্যে কার্যকর করতে পারে? প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: আজ মধ্যরাত থেকে সারা দেশে ২১ দিনের লকডাউন, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে পরিবার পিছু ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিমার সংস্থান রয়েছে। আর রাজ্যের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে রয়েছে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচের সংস্থান। কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পটিতে পুরো টাকাটা কেন্দ্রীয় সরকার দেয় না। একটা অংশ কেন্দ্র দেয়, বাকিটা সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারকে দিতে হয়। সেই বিষয় নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারকেই যদি খরচের একটা মোটা অংশ দিতে হয়, তা হলে রাজ্য সরকার নিজের প্রকল্পই চালাবে, কেন্দ্রের স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পে অংশ নেবে না— এমনই জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: দেশে তৈরি ১২০০ টাকার কিটে কেন্দ্রের ছাড়, চালু হবে রাজ্যের ৫ টি বেসরকারি কোভিড-১৯ পরীক্ষাকেন্দ্র

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পে শামিল হতে অস্বীকার করেছিলেন। দিল্লিতে তিনি আয়ুষ্মান ভারত চালু করেননি। কিন্তু করোনা সঙ্কটের মধ্যে দাঁড়িয়ে কেজরীবাল তাঁর সিদ্ধান্ত বদলেছেন। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে দিল্লির সরকারকে শামিল করেছেন তিনি। আর তার পরেই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করতে শুরু করেছে বিজেপি। করোনার চিকিৎসাকে যখন কেন্দ্রীয় সরকার আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করে দিচ্ছে, তখনও ওই প্রকল্পে অংশ কেন নিচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গ? প্রশ্ন তুলছে বিজেপি। বাবুল এবং স্বপন এ দিন যে যৌথ আক্রমণ শুরু করেছেন, তা-ও ওই প্রশ্নকে সামনে রেখেই।

এ দিন দুপুর ১টা ১২ নাগাদ টুইট করেন রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। তিনি লেখেন, ‘‘স্বাস্থ্যক্ষেত্রে আপৎকালীন অবস্থা। সময় একটুও নষ্ট না করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচিত রাজ্যে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু হতে দেওয়া।’’ তার পরের লাইনে কটাক্ষ স্পষ্ট। স্বপন দাশগুপ্ত লিখেছেন, ‘‘ব্যক্তিগত দম্ভ দেখিয়ে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইকে ধ্বংস করার সময় এটা নয়।’’

বাবুল সুপ্রিয় অবশ্য একগুচ্ছ টুইট করেছেন করোনা পরিস্থিতি নিয়ে। দুপুর ১টা ৩৮ মিনিটের টুইটে তিনি আয়ুষ্মান ভারতে কেজরীবাল সরকারের শামিল হওয়ার তথ্য তুলে ধরেছেন। তার পরে লিখেছেন— পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে বিনীত ভাবে রাজ্যেও একই পদক্ষেপ করতে।

তার কিছু ক্ষণ পরে বাবুলের টুইটের ঝাঁঝ আরও বেড়েছে। ‘‘এটা লজ্জার বিষয় যে, শুধুমাত্র মমতাদিদির রাজনীতি পশ্চিমবঙ্গকে এই অসাধারণ স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প থেকে বঞ্চিত করেছে।’’

তার পরেও করোনা পরিস্থিতি নিয়ে বাবুল একাধিক টুইট করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চেকআপ কিট চেয়েও পাওয়া যাচ্ছে না বলে মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বার অভিযোগ করেছেন। বাবুল সুপ্রিয় এ দিন সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করেননি। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের কোন হাসপাতালে এই মুহূর্তে কতগুলো কিট রয়েছে— তার একটি তালিকা তিনি টুইটারে প্রকাশ করেছেন। কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে যে এখন কোনও কিট নেই, সে কথা বাবুল মেনে নিয়েছেন। তবে টুইটারে কিছু সরকারি নথি তুলে ধরে জানিয়েছেন যে, লকডাউনের কারণে কিট পাঠাতে সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু সোমবারের মধ্যেই আরও কিট বাংলায় পৌঁছচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Narendra Modi Mamata Banerjee Coronavirus Ayushman Bharat Yojana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy