গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে দু’জনকে এক মঞ্চে দেখা গিয়েছে একাধিক বার। একই মোটরবাইক চেপে গিয়েছেন ভোটপ্রচারেও। ঘটনাচক্রে দু’জনের জন্মদিনও এক— ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৭০। কিন্তু প্রাক্নির্বাচন কালে তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী এবং ভোট পরবর্তী সময়ে বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা বাবুল সুপ্রিয়র শিবির এখন আলাদা আলাদা। মঙ্গলবার আসানসোলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সেই শুভেন্দুকেই রাজনৈতিক ভাবে নিশানা করলেন বাবুল। শুভেন্দুর বাবা এবং ভাই তৃণমূলে না থেকেও যে ভাবে সাংসদ পদ ধরে রেখেছেন, তার উল্লেখ করে বাবুলের মন্তব্য, ‘‘ওঁদেরকে ইস্তফার পরামর্শই দেওয়া উচিত শুভেন্দুর।’’ শুভেন্দু যদিও বিষয়টিকে উপেক্ষাই করছেন।
মঙ্গলবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার বাসভবনে গিয়ে ইস্তফা দেন বাবুল। গত জুলাই মাসের শেষ দিন ফেসবুক পোস্ট করে রাজনীতি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। যদিও তখন জানিয়েছিলেন, আসানসোলবাসীর কাজ করতে সাংসদ পদ ছাড়বেন না। কিন্তু প্রত্যক্ষ রাজনীতিতেও আর থাকবেন না তিনি। তবে, গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাবুল তৃণমূলে যোগ দেন। আর যোগ দিয়েই জানিয়ে দেন, তিনি আসানসোলের সাংসদ পদও ছেড়ে দেবেন। গত রবিবার আনন্দবাজার অনলাইন জানিয়েছিল, মঙ্গলবার স্পিকারের হাতে ইস্তফাপত্র তুলে দেবেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল। সেই মতো ইস্তফা দেনও তিনি।
স্পিকারের বাসভবন থেকে বেরনোর সময় মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন বাবুল। সাংসদ পদ ছাড়ার পর তাঁর যে মন ভারাক্রান্ত, সে কথা জানান তিনি। এর পরেই ওঠে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গ। মঙ্গলবার বাবুল জানান, রাজনীতির বাইরে শুভেন্দু অধিকারী তাঁর বন্ধুসম। বাবুলের কথায়, ‘‘কয়েক মাস আগে পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ ছিলেন। রাজনীতির বাইরে তিনি আমার বন্ধু। কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে তাঁকেও তো আমার সম্পর্কে কঠোর বাক্য প্রয়োগ করতে হয়। তবে, শুভেন্দুর উচিত তাঁর বাবা ও ভাইকে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফার পরামর্শ দেওয়া। কারণ তাঁরা তো আর তৃণমূলে নেই।’’
শুভেন্দুর ‘বাবা ও ভাই’ অর্থাৎ কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী এবং তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর কথাই বলতে চেয়েছেন বাবুল। ঘটনাচক্রে দু’জনেই তৃণমূলের সাংসদ। কিন্তু দু’জনের সঙ্গেই দলের ‘সেই অর্থে’ কোনও সম্পর্ক নেই। বিধানসভা নির্বাচনের আগে শিশির এগরায় অমিত শাহের সভায় হাজির থাকলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপি-তে যোগ দেননি। আবার তৃণমূলে আছেন, তেমন দাবিও করতে শোনা যায়নি। একই কথা খাটে দিব্যেন্দুর ক্ষেত্রেও। রাজনৈতিক মহলের মতে, ইস্তফা দিয়ে বেরিয়েই বাবুলের মুখে শুভেন্দুকে ‘পরামর্শ’ দেওয়ার মধ্যে অন্য ব্যঞ্জনা রয়েছে।
বিজেপি-র টিকিটে জিতে পর পর দু’বার আসানসোল থেকে সাংসদ হয়ে লোকসভায় গিয়েছেন বাবুল। পেয়েছেন মন্ত্রিত্বও। সেই সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার দিনে তাঁর মন ভারাক্রান্ত বলেও জানিয়েছেন বাবুল। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ, জেপি নড্ডার কাছে কৃতজ্ঞ আমাকে যোগ্য মনে করার জন্য এবং কাজের সুযোগ দেওয়ার জন্য। আমার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল বিজেপি থেকে। তাই আজ শেষ দিন মন ভারাক্রান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy