Advertisement
১৬ ডিসেম্বর ২০২৪
Babul Supriyo

বিধানসভায় বাবুলের মানভঞ্জন! কিশোরের গান গেয়ে বিজেপির খোঁচার জবাব দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী

কাহিনির সূত্রপাত শুক্রবারের বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে। বাজেট নিয়ে বক্তৃতা করতে উঠে বাবুলকে গান নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন অর্থনীতিবিদ তথা বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী।

মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।

মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৩৪
Share: Save:

ভরা বিধানসভায় তাঁকে গান নিয়ে খোঁচা দিয়েছিলেন বিজেপির বিধায়ক। পাল্টা জবাব দিতে উঠলে দলই তাঁকে থামিয়ে দেয়। স্পিকার বলেন, যথাসময়ে সুযোগ পাবেন তিনি। অবশেষে শনিবার, সেই ঘটনার প্রায় ২৪ ঘণ্টা পর, ‘সুযোগ’ পেলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা গায়ক বাবুল সুপ্রিয়। তবে যখন সুযোগ এল, তখন বিধানসভায় অনুপস্থিত বিজেপির সেই বিধায়কই! কার্যত বিরোধীশূন্য বিধানসভাতে কিশোর কুমারের গানে ‘অপমানের’ জবাব দিলেন বাবুল।

শনিবার বাজেট অধিবেশনে তখন সবে বিরোধী বিজেপির বিধায়কেরা বিক্ষোভ দেখিয়ে বিধানসভা কক্ষ থেকে ওয়াকআউট করেছেন। বিরোধীহীন বাজেট অধিবেশন বাজেট নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন রাজ্যের অর্থপ্রতিমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য শেষ হতেই স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাবুল, আজ একটা গান হোক। তাতে বিধানসভার পরিবেশ কিছুটা ভাল হবে। আর তোমার গানও আমরা শুনতে পাব।’’ এরই জবাবে বাবুল বলেন, ‘‘আজকের দিনে একটি গানই আমার মনে পড়ছে। কিশোরের গান। ‘অমর প্রেম’ ছবিতে গেয়েছিলেন — ‘কুছ তো লোগঁ কহেঙ্গে, লোগোঁ কা কাম হ্যায় কহেনা...’।’’

কেন এই গান গাইলেন বাবুল? কাহিনির সূত্রপাত শুক্রবারের বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে। বাজেট নিয়ে বক্তৃতা করতে উঠে বাবুলকে গান নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন অর্থনীতিবিদ তথা বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী।

শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশনে দ্বিতীয়ার্ধে বাজেট বক্তৃতা করতে উঠেছিলেন অশোক। সেই সময়েই তিনি বলেন, ‘‘এ বারের বাজেট দেখে আমার হিন্দি সিনেমার একটা গান মনে পড়ে যাচ্ছে। সেটা সিআইডির গান। গানটি লিখেছিলেন মজরুহ সুলতানপুরি। গানের কথা ছিল, ‘কহি পে নিগাহে, কহি পে নিশানা’।’’ এর পরেই নিজের বক্তৃতা শুরু করেন তিনি। বক্তৃতার ফাঁকে ফাঁকেই তাঁর সঙ্গে অল্পবিস্তর কথাবার্তা চলছিল তৃণমূল বিধায়কদের। এক সময় কিছু মন্তব্য করেন ট্রেজারি বেঞ্চে থাকা মন্ত্রী বাবুলও। তাঁর মন্তব্য শোনামাত্রই বাবুলের উদ্দেশে বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘আপনার গান শুনতে আমি ভালবাসি। আপনি গান ভাল বোঝেন। গান নিয়ে কথা বলুন।’’ এমন মন্তব্য শুনে বাবুল দৃশ্যতই রেগে যান। উঠে দাঁড়িয়ে অর্থনীতিবিদ বিধায়ককে তিনি বলেন, ‘‘আপনি অর্থনীতি বোঝেন, আপনি অর্থনীতির কথা বলুন। আপনি কেন আমাকে আক্রমণ করছেন?’’ এই সময়েই শাসকদলের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বাবুলকে থামান। বাবুল নিজের কথা বলতে চাইলে, তাঁকে বলা হয়, এ ভাবে হঠাৎ কথা বলার নিয়ম নেই তাঁকে পরে সুযোগ দেওয়া হবে। শেষে নিয়ম মেনে তৃণমূলের পরিষদীয় দলের মুখ্যসচেতক নির্মল ঘোষের কাছে বলার সময় চাইলেও সময় পাননি বাবুল। তাঁকে বলা হয়, পরিষদীয় নিয়মে এটা সম্ভব নয়।

শনিবার তাই বাবুলকে গান গাইতে বলা অনেকটাই তাঁর মানভঞ্জন করার জন্য বলে মনে করছেন বাবুলের রাজনৈতিক সহকর্মীরা। যদিও বাবুল গানের যে অংশটি গেয়েছেন, তা ইঙ্গিতবহ বলেও মনে করছেন অনেকে। মন্ত্রী বাবুল গেয়েছেন, ‘কুছ রীত জগৎ কি অ্যায়সি হ্যায়, হর এক সুভা কি সাম হুয়ি/ তু কৌন হ্যায়, তেরা নাম হ্যায় কেয়া, সীতা ভি ইয়াহা বদনাম হুয়ি / ফির কিঁউ সংসার কে বাতোঁ সে, ভিগ গ্যায়ে তেরে ন্যায়না...।’

কিশোরের এই গানের এই ছত্রের অর্থ কী, তা বুঝিয়ে বলার প্রয়োজন পড়ে না। ফলে বিধানসভার অলিন্দে এই প্রশ্নও ঘোরাঘুরি করছে, সত্যিই কি মানভঞ্জন হল বাবুলের?

অন্য বিষয়গুলি:

Babul Supriyo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy