ধুন্ধুমার: রক্তাক্ত বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। —নিজস্ব চিত্র
বোমা-গুলি, পুলিশের লাঠি, জনতার ইটে রবিবার ফের অগ্নিগর্ভ হল জগদ্দল-ভাটপাড়া। মাথা ফাটল বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের। পুলিশের বিরুদ্ধেও গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল। সাংসদের উপরে হামলার প্রতিবাদে আজ, সোমবার ব্যারাকপুর মহকুমায় ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি।
পুলিশ জানিয়েছে, বিজেপি কর্মীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে জখম হয়েছেন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা-সহ আট জন পুলিশ কর্মী। অর্জুনের বিরুদ্ধেও আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া এবং মারধরের অভিযোগ এনেছে তৃণমূল। বিজেপির দাবি, পুলিশের লাঠির ঘায়ে তাঁদের বেশ কয়েক জন কর্মী জখম হয়েছেন।
মাসখানেক শান্ত থাকার পরে রবিবার ফের একটি পার্টি অফিসের দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূল-বিজেপির গোলমাল শুরু। তৃণমূলের দাবি, ২০১১ সালে শ্যামনগরের ফিডার রোডে তারা একটি পার্টি অফিস তৈরি করেছিল। গত ২৩ মে লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পরে ওই পার্টি অফিসটি দখল করে নেয় বিজেপি।
ধুন্ধুমার: ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মাকে লক্ষ্য করে ছোড়া হচ্ছে ইট। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়।
ফিডার রোডের তৃণমূল নেতা সমীরেন্দ্রকৃষ্ণ সাহা জানান, পুলিশের মধ্যস্থতায় বিজেপি নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় ঠিক হয়, রবিবার পার্টি অফিসটি তাঁদের হাতে আসবে। সমীরেন্দ্র বলেন, ‘‘সকাল ১০টা নাগাদ বিজেপির এক নেত্রীর হাতে ওঁদের দলীয় পতাকা তুলে দিই। সব চুকে যাওয়ার পরে আমি মোটরবাইকে করে বাড়ি যাচ্ছিলাম। তখনই বেশ কয়েকটি গাড়ি নিয়ে অর্জুন সেখানে পৌঁছন।’’
তৃণমূলের অভিযোগ, অর্জুন গাড়ি থেকে নেমে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে সমীরেন্দ্রর দিকে তেড়ে যান। রিভলভারের বাট দিয়ে তাঁর ঘাড়ে আঘাত করেন। পরে পাশে পড়ে থাকা একটি কোদালের বাট তুলে তাঁর পায়ে মারেন। তাতে মোটরবাইক থেকে পড়ে যান সমীরেন্দ্র। সেই সময় পার্টি অফিসে বসে থাকা তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা অর্জুনকে তাড়া করেন। অর্জুনের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরাই অর্জুনের গাড়ি ভেঙেছে। তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
Briefed to PM Shri @narendramodi and Shri @AmitShah on the deadly attack on lawmaker Shri @ArjunsinghWB .
— Mukul Roy (@MukulR_Official) September 1, 2019
The state Police is trying to cover up the actual details of the incident, I am demanding a CBI enquiry about this needless violence on an esteemed politician.
এই ঘটনার পরে ব্যারাকপুর মহকুমা জুড়ে পথ অবরোধ শুরু করে বিজেপি। অবরোধ তুলতে গেলে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এরই মধ্যে বিজেপি অভিযোগ তোলে, অর্জুনের বাড়ি ভাটপাড়ার মজদুর ভবনের সামনে বোমা ছোড়া হয়েছে। প্রতিবাদে বেলা ৩টে নাগাদ জগদ্দলের সার্কাস মোড়ে দলবল নিয়ে বসে পড়েন অর্জুন।
কিছুক্ষণ পরে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা সেখানে পৌঁছন। পুলিশ জানায়, অবরোধ তুলতে গেলে বিজেপি কর্মীরা ইট ছুড়তে শুরু করে। পুলিশ পাল্টা লাঠি চালায়। নিজের সার্ভিস রিভলভার বার করে শূন্যে গুলি চালাতে দেখা যায় মনোজকে। এরই মধ্যে মাথা ফাটে অর্জুনের। অর্জুনের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ পরিকল্পিতভাবে লাঠি মেরে আমার মাথা ফাটিয়েছে।’’ ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডিসিপি (জোন ১) অজয় ঠাকুর বলেন, ‘‘ওখানে ইট-পাথর ছোড়া হচ্ছিল। তার আঘাতেই মাথা ফেটেছে সাংসদের।’’ স্থানীয় হাসপাতালে অর্জুনের মাথায় পাঁচটি সেলাই পড়ে। পরে তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনার পরে ফের উত্তপ্ত হয়ে পড়ে এলাকা। অর্জুন সিংহের বাড়ির সামনে পুলিশকে লক্ষ্য করে ফের ইট ছোড়া শুরু হয়। পুলিশ লাঠি উঁচিয়ে তাড়া করে গেলে সেখানে বোমা পড়ে। পরে পুলিশ বাহিনী ও র্যাফ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy