টাকা উদ্ধার নিয়ে ইডিকেই পাল্টা প্রশ্ন করে বসলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
প্রায় ৫০ কোটি টাকা তাঁর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করেছিল ইডি। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত সেই অর্পিতা মুখোপাধ্যায় এ বার ইডির কাছে জানতে চাইলেন, তাঁর বাড়ি থেকে পাওয়া টাকা কোথা থেকে এসেছিল? আদালতে দাঁড়িয়ে অর্পিতার আইনজীবীর প্রশ্ন, ‘‘আমার মক্কেলের বাড়ি থেকে পাওয়া টাকা কে এনেছিল? তদন্তে দেখানো হয়নি, কোথা থেকে সেই নগদ এসেছিল!’’
প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত ইডির মামলায় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সহ মোট ৫৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া চলছে কলকাতার বিচার ভবনে। তার মধ্যেই ১১ জন ইডির মামলায় অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন স্বয়ং পার্থ। পার্থের পর এ বার তাঁর বান্ধবী বলে পরিচিত অর্পিতাও ইডির মামলায় অব্যাহতি চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন।
শুক্রবার পার্থ, অর্পিতা এবং মানিক-সহ ওই ১১ জনের অব্যাহতির আবেদন নিয়ে শুনানি হয়। অর্পিতার আইনজীবী অভীক ঘটক আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল এফআইআরে অভিযুক্ত নন। তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই-ও চূড়ান্ত ভাবে কিছু জানাতে পারেনি। সিবিআইয়ের তদন্ত ইডির থেকে এগিয়ে। ইডি অর্পিতার বিরুদ্ধে গত আড়াই বছর ধরে তদন্ত চালিয়ে কোনও প্রমাণ জোগাড় করতে পারেনি বলেও অভিযোগ করেছেন অভীক। পার্থের সঙ্গে অর্পিতার সম্পর্কের প্রসঙ্গও উঠেছে আদালতে। অর্পিতার আইনজীবী বলেন, ‘‘এক নম্বর অভিযুক্তের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে, আমার মক্কেল ওঁর কথায় সব স্বাক্ষর করতেন। আমার মক্কেলের আয়ের কোনও উৎস নেই বলে যে দাবি করা হয়েছে, তা-ও মিথ্যা। আমার মক্কেল এক জন অভিনেত্রী হিসাবে কাজ করেছেন। উনি ইচ্ছে এন্টারটেইনমেন্টের ডিরেক্টর। ওই কোম্পানি বিভিন্ন ইভেন্ট করেছে। আমার মক্কেলের আয়ের নথিও জমা করা হয়েছিল।’’
ইডিকে অভীকের প্রশ্ন, ‘‘আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে গেলে গভীর অপরাধ থাকতে হবে। ইডির আইনজীবীরা বলছে, কিছু খাম এবং এক নম্বর অভিযুক্তের নামে কিছু নগদ আমার বাড়ি থেকে পাওয়া গিয়েছিল। সেটা কে আনল? আমার প্রশ্ন। তদন্তে দেখানো হয়নি, ওই টাকা কোথা থেকে এল?’’
ইডিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যও। তিনি নিজেই নিজের হয়ে সওয়াল করেছেন আদালতে। তৃণমূল বিধায়কের বক্তব্য, চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা নেওয়া হয়েছে, এ রকম এক জন চাকরিপ্রার্থীকেও যদি ইডি ধরে আনতে পারে, তিনি আবার জেলে যেতে প্রস্তুত। আদালতে মানিক জানান, প্রাইমারি নিয়োগ মামলায় সিবিআই তাঁকে অভিযুক্ত ঘোষণা করেনি। ইডির তদন্ত কিছু নথির উপর দাঁড়িয়ে। কিন্তু তারা কোনও নথিই দেখাতে পারেনি।
মানিক বলেন, ‘‘উত্তর দিনাজপুরের ৪৭ জন চাকরিপ্রার্থী মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে টাকা নেওয়া হয়েছে। আমায় সেই টাকা পাঠানোও হয়েছে। কিন্তু ইডি এ সবের উপর কোনও তদন্ত করেনি। এ দিকে আমি গ্রেফতার হয়ে গেলাম। আমার জীবন শেষ হয়ে গেল।’’
মানিকের দাবি, তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাপস মণ্ডলের বয়ানের ভিত্তিতে। তাঁকে ১০ অক্টোবর (২০২২ সাল) গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ দিকে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল ২০ অক্টোবর। মানিক বলেন, ‘‘ইডির কৌশল হল অভিযোগ উঠলেই জেলে ভরে দেওয়া। অভিযোগ, তাপস আমার শাগরেদ। ৩২৫ জন চাকরিপ্রার্থীর থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল। পাঁচ জনকে চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তাপসের থেকে ৩.২৫ কোটি টাকা নিয়ে আমি নিয়েছি বলেও অভিযোগ উঠেছিল। বলা হয়েছিল, ওই টাকা আমার, আমার ছেলে এবং আমার স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। কিন্তু ইডি যে নথি দেখিয়েছে, তা সবই সাজানো। ভগবানের নামে শপথ নিয়ে বলছি, ২০১৬ সালের পর আমার, আমার স্ত্রী এবং আমার ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা ঢোকেনি। তার পরেও আমার ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত হয়েছে। আমার ছেলের চাকরি গিয়েছে।’’ মানিকের পাশাপাশি তাঁর ছেলে এবং স্ত্রীও ইডির মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy