বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের অর্জুন সিংহর ভগ্নিপতি ও ভাইপো। নিজস্ব চিত্র
পরিবারেরই জোর ধাক্কা খেলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। বিজেপি ছেড়ে তাঁর আত্মীয়েরাই এ বার যোগ দিলেন তৃণমূলে। অর্জুনের ভগ্নিপতি তথা নোয়াপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক সুনীল সিংহ এবং ভাইপো সৌরভ সিংহ শনিবার বিজেপি ছেড়ে যোগ দিলেন শাসকদলে। আসন্ন পুরভোটে সুনীল গারুলিয়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছিলেন। সৌরভকেও বিজেপি ভাটপাড়া পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী করেছিল। দু’জনেই শনিবার ব্যারাকপুরে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে এসে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক এবং বীজপুরের বিধায়ক সুবোধ অধিকারীর উপস্থিতিতে শাসকদলে যোগ দেন। সুনীল-সৌরভের সঙ্গেই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরলেন বিজেপি নেতা আদিত্য সিংহ।
২০১৭ সালে নোয়াপাড়া বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে জয়লাভ করেন সুনীল। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে অর্জুন তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে বিজেপি-তে নাম লেখান। বিজেপি-র প্রতীকে ভোটে দাঁড়িয়ে ব্যারাকপুরের সাংসদ হন। তারপরেই সুনীল ও সৌরভ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যান। সুনীল গত বিধানসভা ভোটে নোয়াপাড়া থেকে বিজেপি-র প্রার্থীও হন। তবে তিনি তৃণমূল প্রার্থী মঞ্জু বসুর কাছে পরাজিত হন। শনিবার দলবদল করে সেই সুনীল বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের জোয়ারে শামিল হতেই আবার তৃণমূলে ফিরলাম। বিজেপি-তে গিয়ে ভুল করেছিলাম। ফিরে এসে ভুল শুধরে নিলাম। বিজেপি-র মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেব।’’
ব্যারাকপুরের রাজনীতিতে সুনীল-সৌরভের দলত্যাগ অর্জুনের কাছে বড় ধাক্কা বলেই মনে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে অর্জুনের সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি।
ঘটনাচক্রে ব্যারাকপুরের সিংহ পরিবারে যে ধাক্কা লাগতে পারে তার আঁচ মিলেছিল আগেই। শনিবার সকালে ব্যারাকপুর প্রশাসনিক ভবনে বিজেপি-র হয়ে জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে গিয়েছিলেন সুনীল, তাঁর পুত্র আদিত্য এবং সৌরভ। সেখানেই সুনীল স্পষ্ট বলে দেন, ‘‘আজ থেকে আমরা বিজেপি ত্যাগ করলাম। বিজেপি করার মতো মানসিকতা নেই। আমরা যে মনোনয়নপত্র দিয়েছিলাম তা তুলে নেব। কেন দল ছাড়লাম কারণ আমরা পরে জানাব। আমি আগে থেকেই বিজেপি-তে থাকতে চাইছিলাম না। ওই দলটা করার মানসিকতাও আমার ছিল না।’’
ঘটনাচক্রে ব্যারাকপুর প্রশাসনিক ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে সুনীল যখন পদ্মশিবির নিয়ে ক্ষোভের কথা উগরে দিচ্ছেন তখন পাশে দাঁড়িয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয়। ছিলেন নৈহাটির বিধায়কও। জ্যোতিপ্রিয়র কথায়, ‘‘ওরা কেন মনোনয়ন প্রত্যাহার করবে তা ওদের দলের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। ওদের দলে গণতন্ত্র নেই। দলে থেকে ওরা শ্বাস নিতে পারছে না। এটা তো সূক্ষ্ম ফাটল। পরে ফাটল আরও চওড়া হবে। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ বলেছিলেন, আমাদের ট্রেলার দেখাবেন। আমরা আজ ৭০ মিলিমিটারের সিনেমা দেখিয়ে দিলাম।’’
পার্থর বক্তব্য, ‘‘মহকুমাশাসকের দফতরে এসে দেখলাম ওঁরা (সুনীল, আদিত্য এবং সৌরভ) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে এসেছেন। এখানে এসে দেখা হল। কথা হল। আগে থেকে কোনও যোগাযোগ হয়নি।’’
যদিও উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূল শিবিরের একটি অংশের মত, ব্যারাকপুর প্রশাসনিক ভবনের সামনে সকালের ওই ছবিই স্পষ্ট করে দিয়েছিল বাকি দিনের ঘটনাপ্রবাহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy