অনুপ মাজি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র
কয়লা পাচার মামলায় মূল অভিযুক্ত অনুপ মাজি ওরফে লালাকে শর্তসাপেক্ষে জামিন দিল আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। ১০ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়। মঙ্গলবার সকালেই বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিলেন লালা।
মঙ্গলবারের শুনানিতে বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক মামলার তদন্তে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন। তিন বছর ধরে লালা সুপ্রিম কোর্টের রক্ষাকবচ নিয়ে থাকলেও কেন সিবিআই তার বিরোধিতা করে শীর্ষ আদালতে গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
জামিনের শর্ত হিসাবে আদালত জানিয়েছে, লালাকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। নিম্ন আদালতের নির্দেশ মোতাবেক, আগামী সোমবার (২১ মে) কয়লা পাচার মামলায় চূড়ান্ত চার্জ গঠন করতে হবে সিবিআইকে। তার পরই এই মামলায় বিচারপ্রক্রিয়া বা ট্রায়াল শুরু হওয়ার কথা। বিশেষ আদালতের নির্দেশ, মামলার শুনানির দিনগুলিতে সশরীরে কোর্টে হাজিরা দিতে হবে লালাকে।
লালাকে পৈতৃক বাড়িতে থাকারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর মহকুমার নিতুড়িয়া থানা এলাকার অন্তর্গত ভামোরিয়া গ্রামে লালার পৈতৃক বাড়ি। সেখানেই থাকেন তাঁর মা। এখন তাঁকে ওই ঠিকানাতেই থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। আদালতের অনুমতি ছাড়া এলাকা ছাড়তে পারবেন না লালা।
ইতিমধ্যেই কয়লা পাচার মামলায় দু’টি চার্জশিট পেশ হয়েছে। তবে এখনও চার্জ গঠন হয়নি। এই মামলার আর এক অভিযুক্ত হলেন বিনয় মিশ্র। তবে এখনও তাঁর খোঁজ পাননি তদন্তকারীরা। তিনি ‘নিরুদ্দেশ’। চার্জ গঠনের দিন বিনয় হাজির না হলে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আদালত।
২০২০ সালে কয়লা পাচার মামলার তদন্ত শুরু করে সিবিআই। রাজ্যে রেলের বিভিন্ন সাইডিং এলাকা থেকে কয়লা চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই প্রথমে আয়কর দফতর, তার পরে সিবিআই কয়লাকাণ্ডের তদন্তে নামে। লালার বাড়ি, অফিসে তল্লাশি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত শুরু হয়। লালার সঙ্গী বলে পরিচিত গুরুপদ মাজি-সহ চার জন গ্রেফতার হন। তিন জন জামিন পেলেও গুরুপদ এখনও দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি।
এর আগে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল, লালার সঙ্গে গরু পাচারে অভিযুক্ত এনামুল হকেরও বোঝাপড়া ছিল। কয়লা পাচারের সময় এনামুলের ‘সিন্ডিকেট’-এর সাহায্য নিতেন লালা। উত্তরবঙ্গ-সহ প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতেও পাচার চলত। রাজনৈতিক মদতের পাশাপাশি লালার সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসন, ইস্টার্ন কোল্ডফিল্ড, রেলকর্তাদের একাংশেরও যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করে সিবিআই।
সাম্প্রতিক কালে গরু এবং কয়লা পাচার মামলা বার বার শিরোনামে এসেছে। এর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে রাজনীতিকদের। কয়লা পাচারকাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে, গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy