বর্ধমান কোর্টে ধৃত। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে খুনের হুমকি দেওয়া কথাবার্তা ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হল পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার বিদায়ী কাউন্সিলর নিতাই চট্টোপাধ্যায় ওরফে নিত্যানন্দকে। মঙ্গলবার সকালে গুসকরা স্কুলমোড় এলাকা থেকে তাঁকে ধরে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য ছড়ানোর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ এ দিনই বর্ধমান আদালতে হাজির করানো হলে তাঁকে তিন দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে নিত্যানন্দের দাবি, অনুব্রতকে তিনি বিপদের সময় টাকা ধার দিয়েছিলেন। তা ফেরত চাওয়ায় তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। অনুব্রতের প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি (নিতাইবাবু) যা-ই বলে থাকুন, ওঁর সম্পর্কে আমি কিছু বলব না।’’
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গুসকরার ইটাচাঁদা এলাকার বাসিন্দা, তৃণমূল কর্মী শেখ সুজাউদ্দিন আউশগ্রাম থানায় নিতাইবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের কাছে ওই তৃণমূল কর্মী অভিযোগ করেন, অনুব্রত মণ্ডলকে খুনের হুমকি দেওয়া উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলেছেন নিতাইবাবু। এলাকায় সে রকম কথাবার্তার একটি অডিয়ো-বার্তা (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে অনুব্রতবাবুর প্রাণহানির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে দাবি সুজাউদ্দিনের। এই অভিযোগ পাওয়ার পরেই নিতাইবাবুকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, ধৃত তাদের কাছে অভিযোগ স্বীকার করেছেন। এ দিন গ্রেফতার হওয়ার পরে নিতাইবাবু দাবি করেন, অনুব্রতবাবু স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তাঁর কাছে ২০ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। তিন-চার মাসের মধ্যে শোধ করার কথা থাকলেও তা করেননি। এখন অস্বীকার করছেন। টাকা চাওয়ার জন্য তাঁকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন। বর্ধমান আদালতে তোলার সময়েও অনুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়ে চার বার গুসকরা পুরসভায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন নিতাইবাবু ওরফে নিত্যানন্দবাবু। কিন্তু নানা সময়ে বিভিন্ন বিতর্কে নাম জড়িয়েছে তাঁর। বিভিন্ন সময়ে দলের নেতাদের সঙ্গে বিবাদ, গোষ্ঠী-দ্বন্দ্বে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। কিছু দিন আগে আউশগ্রামের ভাল্কী অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি অরূপ মির্ধা নিতাইবাবু-সহ চার জনের বিরুদ্ধে তাঁকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ করেন আউশগ্রাম থানায়। সে মামলায় তিনি জামিন নিয়েছেন। নিতাইবাবুর ছোট ছেলে মিঠুন চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘‘তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে বাবা দলের সঙ্গে যুক্ত। গুসকরা পুরসভার চার বারের কাউন্সিলর। অনুব্রত মণ্ডলের দুর্দিনে বাবা টাকা দিয়েছিলেন। কিন্তু উনি সে টাকা ফেরত দিলেন না, উল্টে জেলে পাঠিয়ে দিলেন। তবু বাঁচোয়া, বাবাকে গাঁজার মামলা দেওয়া হয়নি!’’ তবে অনুব্রতবাবুকে তাঁর বাবা হুমকি দিয়ে থাকলে তা ঠিক হয়নি, জানান মিঠুনবাবু।
নিতাইবাবুকে গ্রেফতারের পরে, আউশগ্রামে শোরগোল পড়েছে তৃণমূলের অন্দরেও। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার, দলের গুসকরা শহর সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায়দের বক্তব্য, ‘‘দল ছেড়ে দিয়েছেন, এই মর্মে অগস্টে নিতাইবাবু সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়েছিলেন। দলে থাকলে নেতৃত্ব সম্পর্কে এমন কথাবার্তা বলতে পারতেন না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy